২২ মার্চ, ২০১০

আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালা, 'আ' তে আওয়ামী, 'ব' তে বাকশাল

ইতিহাসে বাঙ্গাল বরাবরই কাচা ছিল। কিছুতেই সন মনে রাখিতে পারিত না সে। তারপরেও কি করিয়া যেন সে পরীক্ষায় টানিয়া টুনিয়া পাশ করিয়া ফেলাইত। বিদ্যালয়ের ইতিহাস শিক্ষকের নজরে ব্যাপার খানা ধরা পড়িল। তিনি উপদেশ দিলেন...আধুনিক ইতিহাস কিছু শিখিতে চাস তালে... বোলগে যা। শিরোধার্য গুরুপদেশ।আধুনিক অনলাইন শিক্ষা। বাঙ্গাল আমগোবোলগে আর সামু বোলগে একাউন্ট খুলিল। খুজিয়া বেড়াইলো আধুনিক ইতিহাস শিক্ষার বোলগ। নানা লিঙ্ক ঘুরিয়া সে আধুনিক ইতিহাস খুজিল। শেষে পাইল ফুফার বোলগ। সেখানে সে আধুনিক ইতিহাসের জ্ঞান লাভ করিয়া গুরুর নিকট ফিরিল।

- তো বল, কি শিখিয়া ফিরলি!
- জ্বী। ফুফার বোল্গে দেখিলাম "হাজার বছরের শেষ বাঙ্গালী শেখ মুজিবর প লাশীর প্রান্তরে সিরাজকে ল ড়িবার নির্দেশ দিয়াছিলেন। কিন্তু অনভিজ্ঞ সিরাজ উনার নির্দেশ সঠিকরুপে পালন করিতে না পারিয়া, পলাশীর বাজারে বাংলার স্বাধীন তার সূর্য টানিয়া নামাইয়াছে। পরবর্তীতে সেই স্বাধীনতার সূর্য আবার টানিয়া উঠাইয়াছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী।"
বর্ননা শেষ হৈবা মাত্র বাঙ্গালের গালে চড় পড়ীল।
গুরু মশায় চটিয়া কহিলেন "এ তোর আধুনিক ইতিহাস শিক্ষা হৈল? অনলাইনে বসিয়া জ্বালা ডট কমের চটি পড়িলেও এর চেয়ে ঠের ভাল শিক্ষা পাইতি।"
মশায়ের মুখে একি কথা। রাম রাম। বাঙ্গাল মিউ মিউ করিয়া শুধাইল " তালে কোন বোলগ পড়িব?"

- হুম। জ্বালা ডট কমের দন্ডমুন্ডির কর্তা লিখিতেছেন আমাগোবোলগে। উহা পড়িয়া জ্ঞান বৃর্দ্ধি করিয়া আয়।

পরদিন প্রভাতে বাঙ্গাল স্নান সারিয়া আমগোবোলগে গেল। বোলগের প্রবেশ দ্বারে বড় করিয়া "ড়াজাকার ও কুকুর ঢুকিতে মানা" লেখা। বাঙ্গাল বুঝিল গুরু তাহাকে সঠিক শিক্ষকের সন্ধান দিয়াছেন। চটি জোড়া খুলিয়া সে প্রবেশ করিল।ইহা স্বাধীনতার স্বপক্ষের ইতিহাস শিক্ষক না হৈয়া যায় না। আধুনিক ইতিহাসের চর্চাতো ইহারাই করিতেছে। গুরু বলিয়াছিলেন "আধুনিক ইতিহাসই প্রকৃত ইতিহাস। যে ইতিহাস তোর বাবা-দাদা পাঠ করিয়াছে, কিন্তু ভূলিয়া ভ্রম ঠাউরাইয়াছে...এবং বতর্মানে সে ইতিহাস 'স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি' ঘবেষনা করিয়া টানিয়া তুলিয়া আনিয়াছে উহাই আধুনিক ইতিহাস।"

সুন্দর পাঠশালা। গুছানো। আধুনিক পিসি। স্ক্যানার। ভিডিও ক্যামেরা। আর একখানা পুরানো টাইপ রাইটার এক কোনায় পড়িয়া আছে। আধুনিক পিসির পাশে পুরানো টাইপ রাইটারের কি জরুরত তাহা বাঙ্গালের ক্ষুদ্র খুপ্রিতে ঢুকিল না।

মনিটরে সদ্য লিখা একখানা বোলগ দেখিল। "দ্বিতীয় বিপ্লব বা বাকশাল : শুনুন বঙ্গবন্ধূর মুখেই"। বাঙ্গাল দ্রুত টুকিয়া লইল খাতায় লিঙ্কঃ http://omipial.amarblog.com/posts/101959

কমেন্টে গিয়া বাঙ্গাল প্রশ্ন রাখিল "বাকশাল গঠন করিয়া উহাকে দ্বিতীয় বিপ্লব বলিয়া উহার শীর্ষপদে নিজেই আসীন হৈয়া 'হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী কি গণতান্ত্রিক কাজ করিয়াছে?'
-উত্তর আসিল। "উহা গণতান্ত্রিক নহে মূর্খ ... সমাজতান্ত্রিক সীদ্ধান্ত। তুই কেরে ...উনাকে তাচ্ছিল্য করিস!"

বেয়াড়া বাঙ্গাল শুধাইলো "গুস্তাফি মাফ করিবেন জনাব। শিক্ষার উদ্দেশ্যে আরো একখানা প্রশ্ন রাখিতে চাই। সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়িবার সাধ থাকিলে তা প্রথমেই কেন করা হৈল না। কেন হঠাত ৩ বছর রাজকার্য চালাইবার পর সব রাজনৈতিক দলকে নির্বংশ করিয়া বাকশাল করিতে হৈল। বিরোধীরা কি বড় বেশী গোল বাধাইতেছিল? আর যদি ইহা উনার শেষ খোয়াব হৈবে...তাহা হৈলে আওয়ামী সরকার তাহা বাস্তবায়ন না করিয়া ক্যানো বহুদল লৈয়া ভেজাল পাকাইতেছে? আজ উহাকে পিটায়...কাল তাহার মাথা ভাঙ্গে "

আর বরদাস্ত হৈল না।আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালা হৈতে বাঙ্গালের নাম কাটা গেল। তাহার অপরাধ... সে বড় বেয়াড়া প্রশ্ন করিয়া পন্ডিত মশায়ের ধুতিতে টান ফেলাইয়া দিয়াছিল।

৪টি মন্তব্য:

Aminul Ahsan বলেছেন...

হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হইয়া গেল =))

Aminul Ahsan বলেছেন...

বাঙ্গাল,আপনি অসাধারণ লেখেন !!!

Unknown বলেছেন...

আপ্নে যে একজন বাঙ্গাল তা আবার প্রমান করলেন...খুবই মজাক পাইলাম!!!!

বাঙ্গাল বলেছেন...

শুক্রিয়া