২৯ নভে, ২০১০

বাঙ্গালের দোষ, তার পাসপোর্ট

১. দেশে এখন রাজনীতির হওয়া বেশ গরম ...ঢাকায় ২৬ নভেম্বরে গিয়েছিলাম...
রাস্তায় হরতালের চেয়ে হরতাল বিরোধী প্রচারনাই বেশি...বাসের গায়ে পোস্টার...ব্যানার...সব হরতালবিরোধী ...শুধু পত্রিকায় হরতালের ডাক পাওয়া যায়... বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেন ক্রিয়ার চেয়ে প্রতিক্রিয়ায় বেশি ...বাড়ি গেল একজনের...গাড়ি পুড়ল কত জনের ....কারণ হরতাল পালন করাটা সহজ ...একটা প্রেসব্রিফিং দিলেই হলো...কিন্তু হরতাল ঠেকানটা কঠিন...যেটার চেষ্টা সরকারী দল প্রতিবার করে...কিন্তু হিতে বিপরীত হয়...


মজা পেলাম..বনানী মোড়ের দুইটা জিনিস দেখে...একটা হলো ঘড়ি বিক্রেতা...ওয়াটারপ্রুফ ঘড়ি বেচতেছে...বালতির পানিতে ঘড়িগুলো চুবিয়ে রাখা ...সত্যি ওয়াটার প্রেফ...তার চাক্ষুস প্রমান...
আরেকটা মজার জিনিস হলো ...সম্মিলিত ইসলামিক জোটের পোস্টার...সেখানে হেডিং দেয়া "দেশবাসী সাবধান , খালেদা জিয়া মদ খান"...সাথে একটা ছবি... সাদা কালো ...খালেদাজিয়ার হাতে কাচের পাত্র..তাতে কালো পানি..পাশের চেয়ারে একজন পুরুষ ...সুট কোট পড়া...  উনার হাত চিয়ার্র্স করার ভঙ্গিমায় তোলা...খুবই আনাড়ি ফটোশপের কাজ ..লোকজন ভীড় করে দেখছে..


মদ খাওয়া কাজটা মোটেও মারাত্মক মাত্রার খারাপ না...কারণ যে মদ খায়...সে নিজের পয়সায় খায় ..বরং এরচেয়ে হরতাল অনেক বড় মাত্রার অপরাধ...কারণ সে দেশের ক্ষতি করে ...কিন্তু ভদ্রসমাজে "আমি মদ খাই".. বললে ছি: ছি: রব উঠলেও...আমি হরতালে ভাংচুর করি বললে...কেউ  নাক সিটকায় না 


-----------------------------------------------------------------------------
২. পরদিন ২৭ নভেম্বরে আমার ফ্লাইট ছিল...রাত ১১:৩০এ   যখন LCCT Airport, Kuala Lumpur এ নামলাম, তখন কানে ভনভন...খিদাও পাইছে বেশ...
এই এয়ারপোর্টটা আমার চেনা..অনেকবার এসেছি...তাড়াতাড়ি চলে আসলাম ইমিগ্রেশনের কাউন্টারে ...কিন্তু বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের আলাদা লাইন করতে বলা হলো...
মাথায় চুল ছোটো  করে ছাটা একজন অফিসার এসে বাংলায় জিজ্ঞাসা করলো "বাংলা?...সিনি সিনি(মালে ভাষা ) ...এদিকে এদিকে "
ইমিগ্রেশন কাউন্টার থেকে দুরে দার করানো হলো ৩০-৩৫জোন বাংলাদেশীকে ...যারা ফ্যামিলি নিয়ে এসেছেন.. তাদের যেতে দেয়া হলো ...বাঙালি মহিলাদেরকেও সোজা ইমিগ্রেশন কাউন্টারে পাঠানো হলো ...সাদা কামরার একটা মেয়ে এসে কিছুক্ষণ আমাদের লাইনের আসে পাশে বিভ্রান্ত হয়ে ঘোরল..সেও ঠিক বুঝতে পারছে না...এদিকে এই আলাদা লাইনের কারণ কি ..একজন মহিলা অফিসার ব্যস্ত হয়ে মেয়েটাকে বুঝিয়ে দিল...তার স্থান এখানে না...এটা বাংলাদেশীদের স্পেশাল লাইন
আমি এগিয়ে গিয়ে পরিচয় দেই না ..."আমি একজন ছাত্র...ওয়ার্রকার না"...কারণ ওরাতো পরিচয় জানতে চায় নি ...তাদের একটাই বিভাজন "বাংলা?"
আমাদের সবুজ পাস্পর্র্ট দেখেও ওরা নিশ্চিত হয় না ...কারণ পাসপোর্ট বানানোর হাজার কৌসল আমরা অনেক আগেই দেখিয়েছি ...হাজারখানেক অবৈধ শ্রমিক এখনো মালেশিয়ার রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়...পুলিশ দেখলে ঘুষ দেয়...রাতের বেলা বাজার করে ...কবে একটা চাকরি পাবে - বৈধ ওয়ার্র্ক পারমিট পাবে সেই আশায় ...

চাপ দাড়িওয়ালা একজন বাংলাদেশী যুবক এগিয়ে গিয়ে অফিসারের কাছে জানায় তার পরিচয়...তার উচ্চারণে ব্রিটিশ ঝাজ ...পেছন থেকে কে যেন বলে "লাভ নাই মামা ...হালারা ইংরাজি বুঝে না"

 
কিছুক্ষণ পরে সেও অপ্রস্তুত হয়ে লাইনের পিছনে দাড়ায় ...কয়েকজন লাইনে সামনে যাবার জন্য ফাক ফোকর খোজে ...আমি দাড়িয়ে থাকি ..পিঠের ৭কেজি বোঝাটা নামিয়ে রাখি ..২০-২৫ মিনিট পরে...৪/৫  জন মালেশিয়ান অফিসার(২ জন মহিলা )...আমাদের লাইন ধরে হটিয়ে নিয়ে যায়...দূরে একটা করিডরে...চিপা...করিডরে ঘন হয়ে দাড়ায় সবাই...সবাই কম বেশি বিরক্ত ...আমিও ...
আমি এইজন্য  বিরক্ত না...যে আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র, বাংলাদেশে অন্যতম সেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা ছাত্র ...আমাকে এভাবে অবৈধ শ্রমিকদের মত সন্দেহ করার জন্য আমি বিরক্ত না  ...কারণ ওই শ্রমিকরা আমার গ্রামের মত একটা গ্রাম থেকেই এসেছে ...

আমি বিরক্ত হই...যখন ওরা অশুদ্ধ বাংলায় বলে "পাস্পর্র্ট দাও"...একটা কাগজের কার্টুনে সবাইকে পাস্পর্র্ট রাখার  ইঙ্গিত  করে
আমি এগিয়ে গিয়ে বলি "ইংলিশ প্লিজ"...এবারে খাটি মালে ভাষায় উত্তর আসে "পাস্পর্র্ট সিনি"...হাত বাড়িয়ে কার্র্তুনটা সামনে ধরে ...টিকিট বোর্ডিং পাস সহ বাক্সে ফেলে দেই...
গাট্টাগোত্তা অফিসার আবার মালে ভাষায় জানায় "পাস্পর্র্ট সাহাজা"...(সাহাজা মানে অনলি)..আমি ভ্রু কুচকে না বুঝার ভান করে বলি "হোয়াট?"
আমার  বোর্ডিং পাস আর টিকিট বাক্স থেকে তুলে বাড়িয়ে দেয়.... খুবই বিরক্তভাবে
 
সবার পাসপোর্ট জমা হবার পর...ছোটো করিডরে সবাইকে লাইনে  দাড় করে...আবার লাইনে সামনে যাবার একটা হালকা  হুরাহুরি ...মহিলা অফিসাররা মাঝরাতের এই নাটকে  বেশ মজা পায় ...তারা  হাসা  হাসি  করে
গাট্টা গোত্তা অফিসার এবার হুকুম করে "বসো বসো (বাংলায়...যেন বাঙালিরা এটুকু ইংরেজিও জানে না ..তাই বাংলা শিখেই এরা  এসেছে তারা)"...দুই হাত নেড়ে বুঝলো মাটিতে বসতে হবে
লোকজনের   মধ্যে   চাপা   গুঞ্জন ...ও চরম  বিরক্তি  ...কে জানি  বাংলায় "হালার  পুত " টাইপ  একটা গালি  দিল..আমার কানের ভনভন আওয়াজটা মনে হয় আরো বেড়ে গিয়েছিল...পরিস্কার শুনতে পাই নাই ...অনিচ্ছা স্বত্তেও একে একে সবাই বসলো ...মাটিতে ...আমিও 


কম বয়সী  মহিলা অফিসাররা ...একে অপরের গাটিপে হাসে  ...যেন নাটকের  এই অংশে  তাদের বড্ড  মজা 

এরপরে একে একে দেকে পাস্পর্র্ট পরীক্ষা করে প্রায় সবাইকেই ছেড়ে দিল ...সোজা ইমিগ্রেশন কাউন্টারে ...গিয়ে আবার চেকিং


এইরকম ছোটো  খাটো (!) বঞ্চনা প্রবাসে মেনে নেয়ায় যেতে পারে ...কারণ এটা ওদের দেশ ...নিজের দেশে নিরাপত্তার খাতিরে ওরা যেকোনো পদক্ষেপ নিতেই পারে
আর আমরা বাংলাদেশী ...আমাদের নিজেদের কোনো মান ইজ্জ্বত নাই ..নেংটি খুলে যাক তবু ..নেত্রীর মান ইজ্জ্বতে আঘাত আসলে আমরাদের লড়াইয়ে  নামতে  হবে  ....নিজেদের ধংস করার নেশায় পাইছে আমাদের ... শরম 

কিসের? আমরাত নিজের দেশটাকে অতল কোন বালতিতে চুবিয়ে রাখছি...প্রমান করেছি আমরা শরম-লজ্জাপ্রুফ...
 

১৫ নভে, ২০১০

রাষ্ট্রযন্ত্রের স্ক্রু ঢিলা

দেশে আচমকা কেওয়াজ লাইগা যাওয়ায় একটু ঘন ঘন টিভি দেখতেছিলাম...গ্রামে থাকার কারণে শুধু মাত্র খাস বিটিভি সংবাদ দেখতেছিলাম. গতকাল দুপুর ২টায় আমি যখন ইন্টারনেটে খালেদা জিয়ার বাড়ি ছাড়া নিয়া কেঅয়াজের খবর পড়ি...তখন বিটিভি সংবাদে প্রচার করছে "খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় তার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছেন" বরাত আইএসপিআর ...নামটা কি চিনা চিনা লাগলো পাঠকের? জ্বী, এক সময় এই আইএসপিআর এর খবর রেগুলার টিভিতে দেখছেন. পিলখানার ঘটনায়. আইএসপিআর বিডিয়ারের ঘটনাতেও পাক্কা তিন দিন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে ...সুতরাং এই সরকারের আমলে তাদের হাচা কথা বলার রেইট প্রায় শুন্যের কাছাকাছি.

বাসা খালি কইরা তারা বলল ..."বাসাটি এখন পুলিশের হেফাজতে আছে"...ক্যান বাবা? ক্যান্তন্মেন্তের ভিতরের বাসা পুলিশ হেফাজত করব ক্যান ? আবার কিছুক্ষণ পরে...জানা গেল..বাসার ভিতরে সাদা পোশাকে সামরিক বাহিনীর লোকজনই পাহারা দিতেছে.. ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বাড়ির নিয়ন্ত্রণে আছে... এই কথাডা কইতে এত শরমের কি আছে?

এরপরে আসলো খালেদা জিয়া কান্না ভরা প্রেস কনফারেন্স. পাবলিকের মনে প্রশ্ন: এইটা কি আসল কান্না? 
বাংলাদেশের এমন কোনো মেয়ে নাই ...যে একটা বাড়ি(ঢাকা শহরের সবচেয়ে সুরক্ষিত জায়গায়) হারানো সহজে মাইনা নিতে পারবে...তার যতগুলান বাড়িই থাক ...সুতরাং খালেদা জিয়া হঠাত উদার হইয়া সুরসুর করে বাড়ি ছাইড়া দিবে ...তারে নিয়া আমি এইরকম উচ্চাশা করি না ..আফটার অল আমি নিজের দেশের মা-বোনদের অন্তত চিনি ...৩৮ বছরের ব্যবহৃত বাড়ি ফেলায়া আইসা কানবো না এইরম বাংলাদেশী  মাইয়া আমি কল্পনাও করতে পারি না

গতকাল যে নাটক ক্যান্টনমেন্ট মঞ্চায়িত হৈছিল, তা ছিল পুরাপুরি সামরিক বাহিনীর "রাজনীতি মুক্ত" থাকার প্রয়াসের সফল প্রতিফলন...সে জন্য আইএসপিআর মিথ্যা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে...আর তাদের দোসর "ব্যাপকমাত্রায় স্বাধীনতা ভোগকারী" পত্রপত্রিকা তা ফলাও করে প্রচার করে...তারা তিনটা বেসামরিক ট্রাক সাজায় রাখছিল বাড়ির সামনে...এটাও নাটকের একটা অংশ...আমি খুব খুশি হইতাম ...যদি বাংলা ভাই ধরার মত ...টিভিতে লাইভ টেলিকাস্ট করত... কিন্তু আফসোস ...আজ ক্যান্টনমেন্টের কোনো টিভি ক্যামেরাও যেতে দেয়নি সেনাবাহিনীর কড়া সামরিক প্রহরা... কারণ ওনাদের ভয়... এই ব্যাপক গণতান্ত্রিক সরকারের পোশাকের আড়ালে যদি সামরিক উর্দিটা ধরা পরে যায় আম জনতার চোখে

আমার আফসোস বেশিক্ষণ করা লাগে নাই, উচ্ছেদের ২৪ ঘণ্টা পর আইএসপিআরের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের নেয়া হয় সে বাড়িতে। দরজায় শাবলের চিন্হ রং-পট্টি মাইরাও মুছা যায় নাই... তবে সবচেয়ে বড় রগড় দিছেন তারা বিটিভির রাতের সংবাদে "খালেদার বাসা থেকে পর্ন  ম্যাগাজিন পাওয়া গেছে তা দেখাইল ".আইএসপিআর চরম খেলা দেখাইছে..জাতি ব্যাপক বিনোদিত ..ভিডিও দেখাইছে.
আমি এইটাও মাইনা নিতে পারি...ঐসব পাইতেই পারে ..সেনাবাহিনিত অনেক কিছুই পাইছিল "আধা সামরিক কাম তত্বাবধায়ক সরকার আমলে...ভিআইপিদের বাড়ির বাথরুমে বিদেশী শাড়ি, মদ, অস্ত্র ...তেনারা এইসব পাইতেই পারেন...অভ্যাস যায় নাই... সবকিছুর পরেও এইটা ছিল একটা বাসা ...মসজিদতো না? এইটা বিটিভিতে সারা দেশের ছোট-বড় সবার সামনে প্রচার করার মত মানসিকতা সরকারী দল ক্যান দেখাইল? ধরা যাক, উনার বাসায় দুইটা কনডম পাওয়া গেল...এখন সেনাবাহানীর দুইজন সোলজার কি সেইটা বিটিভির ক্যামেরার সামনে নাইরা চাইরা দেখানো উচিত?

এখন আসা যাক এই ঘটনার সুদুর প্রসারী খতরনাক প্রতিক্রিয়ায়

১. আজকে যেই আইএসপিআর সরকারের কথায় মিছা কথা কৈতেছে ...বিটিভির সাথে তাদের পার্র্থক্য় কি থাকলো?......এইখান থিকা তার রাজনৈতিক অভিযাত্রা শুরু হৈল...কালকে যেই গদিতে বসবে...সেই আইএসপিআর এর মাইক ভাড়া করবে প্রচার প্রপাগান্ডার কাজে ... জনগনের চক্ষেও তার রং ৫ বছর পর পর পাল্টাবে...সেনাবাহিনীর ভিতরেও এর প্রভাব ব্যাপক ক্রমিক পালাবদল তৈয়ার করবে.   পিলখানা-রূপগঞ্জের পরে, খালেদার উচ্ছেদ অভিযান সেনাবাহিনীকে আবারো কলঙ্কিত করলো

২. খালেদার সাথে সাথে তার পোলা দুইটাও নিশ্চিত কানতেছে আজকে ...যেকোনো সন্তান তার মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিবেই...যদি তার সেই ক্ষমতা থাকে ..তা সে যত বড় কুসন্তানি হোক .আজ হোক কাল হোক...এরা ক্ষমতায় আসবেই ..এবং এই অপমানের প্রতিশোধ নিবে (এদের নিয়েও আমার কোনো উচ্চাশা নাই ...এরা জিয়ার পুত্র হইতে পারে...কিন্তু জিয়া না)..এই প্রতিশোধের ভাষা গ্রেনেড কিংবা বন্দুকের গুলিও হইতে পারে ..ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটা বুলডোজার দিয়া গুরায়াও দিতে পারে ...২ বছরের সেনাশাসনের পরে এখন সবাই বুইঝা গেছে ক্যামনে আদালত চালাইতে হয়, আইএসপিআররের মাইক ভাড়া করতে হয়, পত্রিকাওয়ালাদের খামোশ রাখতে হয় (দেশে বিরোধীদলের পত্রিকা, টিভি ওয়েব্সিত সহ প্রায় হাফডজন প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে নানা উছিলায়...শুরুটা একুশে টিভি থিকা) ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসাটা জন্ম লগ্ন থিকা বাংলাদেশের রাজনীতির একটা স্বাক্ষী ...এই বাসাটারে এইভাবে হুমকির  মুখে ফেলাটা ভালো হয় নাই...সেই সাথে ক্যান্টনমেন্টের বাসাটাও একটা ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে..৭ই নভেম্বরে এই বাসা থেকেই মুক্তি হন ... সেনাপ্রধান হওয়ার পরও এ বাড়িতেই ছিলেন জিয়াউর রহমান। এ বাড়িটি ছেড়ে সেনাপ্রধানের জন্য নির্ধারিত বাড়িতে যান নাই।৯০ এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে একাধিকবার এই বাড়িতে গৃহবন্দী ছিলেন খালেদা জিয়া.....উচ্ছেদ করছে ভালো কথা...কিন্তু বাসাতারে সংরক্ষণ করা জিতে পারত...এইখানেই ক্যান পুনর্বাসন করতে হবে...সেনাবাহিনীর কি জাগার অভাব?  

৩. দেশের সহিংস রাজনীতির আগুনে আরেকটু ঘি দেয়া হইলো...জার ফলাফল ঈদের আগে আজকে একটা হরতাল পাইল দেশবাসী...সামনে আরো পাবে অথচ দুইটা দলের মূল সুরে কোনো পার্র্থক্ক নাই ..উদ্দেশ এক ...গন্তব্য এক ...গদি...জনগণ তাদের সেইটা বাই টার্নস দিতেছে...তারপরেও ক্যান এত দাঙ্গা ফ্যাসাদ ...এরা কি একটু শান্তিতে থাকতে দিবনা?
৪. শেখ হাসিনাকে গণভবন আর খালেদা জিয়াকে তার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি চিরস্থায়ী ভাবে দিয়ে না দিলে এই দেশে আর শান্তি আসবে না...দেশের শান্তি এই দুইটা বাড়ির সাথে জড়িত ...আমরা কি পারি না ..তাদের বাড়ি দুইটা দিয়া দিতে? বাপ, তোরা বাড়ি দুইটা নে, আর আমাগো একটু শান্তিতে থাকবার দে...কারেন্ট নাই, গ্যাস নাই, রাস্তায় জ্যাম, জীবনের নিশ্চয়তা নাই ...এলা একটু ক্ষান্ত দে!
৫. কিন্তু না, চলছে  চলবে    

ব্লগ থেকে পাওয়া বাড়ির ভিতরের ছবি...পাগলেও জানে এই ম্যাগাজিন ও মদের বোতল প্লান্ট করা হইছে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থদের বুদ্ধিতে

৮ সেপ, ২০১০

সেক্যুলার বিপ্লবে বাংলাদেশ ও ধার্মিক হাতির পিঠে মাতাল আমেরিকা

শিরোনামটা বেশি ভারী হৈয়া গেল। কিন্তু দ্যাশে ও দুইন্নাতে আসলেই শক্ত পরিবর্তন হৈতেছে। হৈতেই হৈব, কারন আমেরিকা থিকা বাংলাদেশ, সবখানেই পরিবর্তনের/চেঞ্জের/দিন বদলের সরকার।

The Wall Street Journal এ একটা আর্টিকেল ছাপছে আগস্টের ৩০ তারিখে  "Bangladesh's Secular Revolution"হেডিঙ্গের নিচে ছুট্ট কৈরা লেখা Women are powering the country's rejection of radical Islam, but more must be done. বুঝা যায়, লেখক বিশেষ কামেল লোক। আমাদের কি করা উচিত আর কি করা উচিত না তা তিনি বৈলা দিছেন "more must be done" হুহু।লেখক আনিস আহমেদ University of Liberal Arts Bangladesh Foundation এর ভাইস প্রসিডেন্ট।
যেকোন বাংলাদেশি পাঠক পয়লা প্যারাগ্রাফেই হেচকি খাইবো।
"... Bangladesh seems an unlikely place for a secular revolution. It is a dry country with no bars, casinos or horse races. ...And secular principles are far from being consistently upheld: Madrassas receive state funding, while citizens are often hounded for perceived slights to Islam"
  এর মানে দাড়াইল "সেক্যুলার রাষ্ট্র" হৈতে গেলে আমাদের "ড্রাই" কান্ট্রিটারে ভিজাইতে হবে...বার, ক্যাসিনোতে নাচাপিচা করতে হবে আর ঘোড়া দাবড়াইতে হবে... জুয়া খেলতে হবে। আর মাদ্রাসার মত ফালতু জাগায় টাকা পৈসা না দিয়া মদ- জুয়াতে ইনভেস্ট করা লাগপে। লেখকের সেক্যুলার রাষ্ট্রের নব্য মডেল্টার দিকে আমি তাকায়া থাকি...অনেকক্ষন।

ব্যান  
লেখক আরো বলছে, আমাদের সেক্যুলার সরকার ক্ষমতাগ্রহনের পরেই হাওয়া পাল্টায়া দিয়া এই সেক্যুলার বিল্পব শুরু করছে। এবং এই শুরুটা হোইছে, হাইকোর্টের মওদুদী বই ব্যান করার মাধ্যমে। একটা ধর্মীয় বই ব্যান কোইরা আমরা ক্যাম্নে ধর্ম নিরপেক্ষ হৈলাম, তা আমার মাথায় আসে না। হুমায়ন আজাদ স্যারের বই হোক বা মওদুদী বই হোক...আমি ব্যানের বিপক্ষে। এই ব্যান করার কালচারটা বাড়তেই আছে। আমাদের নব্য সেক্যুলার সরকার এরি মইদ্দে ফেইসবুক, ইউটিউব, ইস্পিন, আর কয়েক হালি টিভি চ্যানেল, পত্রিকা ব্যান কর্ছে। এমনকি অনলাইনে লেখালেখির প্লাটফরমগুলাও তাগো পছন্দ না। মঙ্গলধ্বনি নামের একটি অনলাইন মিডিয়া যেখানে প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশের পক্ষে লেখালেখি থাক্তো,সেইটাও ব্যান খাইছে সম্প্রতি। কারন ফুলবাড়ি কয়লাখনি নিয়ে লেখা তারা বরদাস্ত করে না, সিরাজ সিকদারের রক্তের দাগের সাথে সাথে তারে নিয়া লেখালেখিও তারা মুইছা দিতে চায়। আর ২৫মার্চ শেখ মুজিবের ভুমিকা নিয়া কোন আলোচনা (যেখানে তারে পর্যাপ্ত তেল দেয়া হয় না)তারা টলারেইট করে না। আমি যা শুনতে চাই, তুমি তা বলো নাই, তাই তুমারে আমার ভালো লাগে না...ব্যান খাও! 

পরের অংশে লেখক আনিস খান বাংলাদেশের এই "সেক্যুলার বিপ্লবের" মূল কারন অনুসন্ধান করছেন। উনার মতে নারী ক্ষমতায়নই মূল কারন।আর যুদ্ধাপরাধী থুক্কু মানবতাবিরোধীদের বিচারের মাধ্যমেও নাকি সেক্যুলারিস্ট বাংলা সমাজের গোড়া পোক্ত হৈতে যাইতেছে। পাঠকের উপ্রেই লেখকের দাবির সত্যতা খুজার ভার দিলাম।


সবচেয়ে বিরক্তিকর হৈল, ফরেন কমুনিটির আশির্বাদ কামনায় লেখকের উদাত্ত আহবান ।
The foreign community could reinforce these positive trends by supporting the war crimes tribunal. Important in its own right, the success of the trials is crucial to the secularization process as well. Trade and development partners also need to review their economic policies. The United States, for example, could reduce its punitive tariffs on Bangladeshi garments, providing an immediate boost to the economy.
যুদ্ধাপরাধী বিচার আর শুল্কমুক্ত সুবিধার সাথে সেক্যুলারিজমের কি কি যোগসূত্র আছে তা এই নাদানের মাথায় আসে না।
এই ধরনের লেখাকে হঠাত কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ভাবা ঠিক হবে না। ইলেকশনের ঠিক আগে আমাদের সজীব ওয়াজেদ জয় লিখছিলেন Stemming the Rise of Islamic Extremism in Bangladesh
Harvard International Review তে।প্রকাশিতঃ , ১৯ নভেম্বর ২০০৮।ইলেকশনের আগেই তিনি কিছু দিক নির্দেশনা দিছিলেন ক্যাম্নে সেক্যুলার বাংলাদেশ গড়া যায়। সঙ্গে ছিলেন আমেরিকান কোঅথার Carl Ciovacco।তারা লেখছেন-

“Can the Awami League stop the growing tide of Islamism in a country that has seen the sale of burkas rise nearly 500 percent in the last five years?"
৫০০% এর হিসাবটা জানা যায় নাই...এই সার্ভেটা কে করলো তাও জানা যায় নাই।তবে বোরখার দিয়া যে জঙ্গিবাদের চর্চা হয় সেইরম একটা ধারনা এখন সারা দুইন্নাতে এখন পোক্ত হইছে । ফ্রান্সে বোরখা নিষিদ্ধ হোইছে। ফরাসী আইনমন্ত্রী মিশেল মাখি এরপরে বলছেন , "গণতন্ত্র ও ফরাসি মূল্যবোধের জয় হয়েছে। বোরকা নারীর বিচ্ছিন্নতার চিহ্ন অতএব তাদের মুক্ত করতে হবে"। বাহ। সামান্য  একটা পোষাক নিষিদ্ধের মাধ্যমে বিখ্যাত ফরাসী জাতির গনতন্ত্রের ভিত মজবুত হৈল। সাধু সাধু। বাংলাদেশেও এই কিসিমের একটা হাইকোর্ট আদেশ দেখলাম। তবে এখনও সেইটা স্কুল-কলেজের উপ্রে আছে, কুন্দিন এই সেক্যুলার বিপ্লবের সামিয়ানা স্কুল-কলেজ ছাড়ায়া সারাদেশ ঢাইকা দিয়া আমাদের নড়বড়ে গনতন্ত্রের ভীত শক্ত কোইরা দেয়- সেই অপেক্ষায় আছি।

পাঠক খেয়াল কৈরা থাকবে, হার্ভাড ইন্টারন্যাশ্নাল রিভিউ আর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, দুইটাই আমেরিকার মেইনস্ট্রিম পাব্লিশার। টোটকা ফোটকা না। লেখকদের প্রফাইলো যথেষ্ট ভারি। তাদের লেখাগুলা গুরুত্বের দাবিদার । তবে সেক্যুলার রাষ্ট্রের স্বপ্নে বিভোর লেখকরা যাদের সাহায্যপুষ্ট, তাদের দিকে নজর দেই। তারা কেমন সেক্যুলার, সেইটা দেখি।

১। গ্রাউন্ড জিরো মসজিদ: আমি এইটারে আমেরিকার বাবরি মসজিদ বলি। একটা মুস্লিম কমিনিটি সেন্টার নির্মানের কাহিনি নিয়া সারা আমেরিকায় হাউকাউ। বুঝতে হবে খুবি সেক্যুলার দেশ। নাম শুইনা মনে হইতে পারে এই মসজিদটা নাইন ইলিভেনের টুইন টাওয়ার হামলার পড়ে টাওয়ার দুইটার পাদদেশে বানানো একটা মসজিদ। কিন্তু না ...এইটা মোটেও গ্র্যান্ড জিরোতে না , আসে পাশেও না, ঝারা ২ ব্লক দুরে যেখান থেকে গ্রাউন্ড জিরো দেখাও যায় না ....তার চেয়েও বড় কথা এইটা কোনো মসজিদ না ...এইটা একটা ইসলামিক কমিউনিটি সেন্টার যেখানে ফুড কোর্ট, বাস্কেটবল কোর্ট থাকবে। সাথে নামাজের জন্য ২টা ফ্লোর।প্রতিবাদী আমেরিকার মূল কথা- ইসলাম একটি ঘৃণিত ধর্ম। ক্রিশ্চিয়ানিটি নিশ্চিহ্ন করতে মুসলমানরা উঠে পড়ে লেগেছে। আমেরিকার গ্রামাঞ্চলে ২০ টি গোপন জিহাদি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প রয়েছে। ভবিষ্যতে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানোর জন্য সেগুলো এখনো সন্ত্রাসী তৈরি করছে। মুসলমানরা তাদের সন্তানদের হত্যা করছে।পাঠককে নিচের ভিডিওটা দেখার অনুরোধ রাখতেছি।

২। বার্ন কোরআনঃ "We believe that Islam is of the devil, that it's causing billions of people to go to hell, it is a deceptive religion, it is a violent religion and that is proven many, many times," Pastor Terry Jones, CNN. আমেরিকান এই ভদ্রলোক "Islam is of the Devil" নামের একটা জ্ঞানগর্ভ পুস্তকও লিখেছেন।
৩। বারাক ওবামাঃ এইলোক্টা হৈল আরেক ধর্মনিরপেক্ষতার পরাকাষ্ঠা। কাজে কর্মে আগেরটার (বুশ) মতই কিন্তু তিনি আবার হাদিস-কুরআন কিছু মুখস্ত করসেন ।এই হোইছে প্রব্লেম। এখন সেক্যুলার আমেরিকারে ঠান্ডা করতে হোয়াইট হাউস থিকা বিবৃতি দিতে হয় "আমাদের প্রেসিডেন্ট নিয়মিত চার্চে যান, তিনি নামাজ পড়েন না। আতংকিত হবার কিছুই নাই"।
আমাদের দেশের মন্ত্রিসভায় এত গুলান হিন্দুমন্ত্রি...আমাগোতো এত পেরেশানি লাগে না। হিন্দু এম্পিরে ভোট দিতেও আমাগো হাত পা এতো কাপে না। এরপরেও শুনতে হৈব, "আমাদের আরো সেক্যুলার হোইতে হৈব"।কি আজিব!

এদিকে আমাদের জাগ্রত বিবেক প্রথম আলোও ফিল্ডে নামছে...৫ সেপ্টম্বরের খবর
আদমশুমারির তথ্য মতে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ
লেখাটায় নানা দিকে ধানাই পানাই কৈরা...বার বার বলা হোইছে সামাজিক বৈষম্য, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, লুটপাট, সম্পদ ধ্বংস, দৈহিক নির্যাতন,ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে বাধা, ধর্ষণ ও পরিবারের সদস্যদের প্রাণহানি, ভূমি গ্রাস এবং ২০০১ সালে নির্বাচনের পরে সংখ্যালঘুদের উপ্রে নির্যাতন---এই হ্রাসের কারন।

প্রতি ইলেকশনের পরেই মাইরপিট হয়...এইটা দাড়ায়া গেছে বাংলাদেশের কালচার (দূঃক্ষজনক হৈলেও এইটাই সত্য)। এখন বিএনপি- আওয়ামী লীগ মাইরপিটে যদি আওয়ামীলীগের মোট ১০০জন হতাহত হয় ...তার মদ্দে যদি ২০জন হিন্দু-আওয়ামী সাপোর্টার হয়...সেইটারে কি সংখ্যালঘুদের উপ্রে নির্যাতন নাকি রাজনৈতিক বিরোধ বলবো? কিন্তু যেই ৮০ জন মুস্লমান হিট খাইলো...তাদের জন্য এইটারে "সংখ্যাগুরুদের উপ্রে নির্যাতন" বলা যাবে না। কারন তাইলেতো আমাদের সেক্যুলার হওনের বিল্পব মাঠে মারা যাইব। 

ধর্মীয় ব্যখ্যা শুধরাইতে চাইয়া মামলা-মোকদ্দমাও হইতেছে বাংলাদেশের ...যে মামলা করসে তার মতলব কি সুষ্ঠু ব্যাখ্যা খোজা ছিল নাকি একটা ধর্র্মীয় দাঙ্গা-ফ্যাসাদ লাগানো ছিল? দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের মত কুরবানির ইতিহাসও মনে হয় চেঞ্জ করতেই হইব! কিন্তু কেউ কোনো পাল্টা আঘাত করে নাই ...কারণ আমরা সেক্যুলার না. 

সবাইকে সেক্যুলার বিপ্লবের লাল সালাম।


লিঙ্কসঃ আমেরিকায় ইসলামঃ টাইম ম্যাগাজিন
পোষাক ও পর্দা: ধর্মনিরপেক্ষতা এবং রাষ্ট্র: চিন্তা 
Chronology of a Bizarre Controversy: Hurt Feelings and the Ground Zero Mosque: CounterPunch

নিরঙ্কুশ রাষ্ট্র আর বন্ধ মঙ্গলধ্বনি :বাধন অধিকারী

১১ জুল, ২০১০

হারবিচ্চারে তোবা কৈরা বল খেলাডা চাড়!

ফুটবল আমার বেলাডে। যদিও খেলাডা আমি সেরাম পারি না...কারন দৌড়াইলে ক্লান্ত লাগে। কিন্তু আমি ছিলাম এককালের মাঠ কাপানো---ম্যানেজার। অনেকে ভাবতে পারেন, ম্যানেজার মাঠ কাপায় ক্যাম্নে ...মাঠতো কাপায় খেলোয়াড় ...মানে স্ট্রাইকার, গুল্কি...হালে "রেফ্রি"...এরা।

হেহে। মিয়া ...কাপাইতে জানলে মাঠের বাইরে থিকাও কাপান যায়। মাঠে আমার পজিশন ছিল...সাইড লাইন বরাবর। উইং ব্যাকের মতো আমি মাঝে মাঝেই চিল্লাইতে চিল্লাইতে উপরে উইঠা জাইতাম...আবার লাইন ধইরা নিচে নাইমা আসতাম। আমার সাফল্য সেরাম। প্রথম বারেই আমি আমার দলরে ফাইনালে পৌছায়া দিছি। ফাইনালে কি কর্ছি সেইটা পরে বলতেছি...উত্তেজিত হইয়েন না, পাঠক।

আগে বৈলা রাখি। এইটা কৈলাম ১০০% সত্যি ঘটনা। আমার হল ফুটবল টিমের পারফরমেন্স মারাত্মক। ১২ বছরে কিছুই জিতে নাই। মাঝে মাঝেই ১১ জনের টীমে শর্ট পরে খেলোয়াড়ের। তো রেগুলার প্লেয়ার হিসাবে আমার রুমমেটকে দেয়া হৈছিল ক্যাপ্তানের দ্বায়িত্ব। সে দ্বায়িত্ব ঘাড়ে নিয়া রুমে আসল বেনসন হাতে লোইয়া। কয় "দোস্ত...বিড়ি খাওয়া এইমাসে ছাইড়া দেওন লাগবো রে...দম বাড়াইতে হোইব"।
-ক্যান দুস্ত?
- ফুটবল খেলা লাগবো...আমি কাপ্তান...তুই ম্যানেজার হবি?
- আলবত। আমিতো খুবি ভাল পারমু কাজটা...যদিও আগে করি নাই।
কাপ্তান মাথা নাড়ায়..."তোর কিছুই করা লাগবো না। তুই খালি সাথে থাক। পোলাপান জোগাড় কর...আমাগো হল টীমে ১১ জন প্লেয়ারি হয় না। আর কাজ বেশি দিনের না...ফাস্ট রাউন্ড পর্যন্ত। তোরে ম্যানেজার নিলাম...কারন কোন শালা খেলার আগের মূহূর্তে ফোন অফ কৈরা ডুব দিলে তোর খেলা লাগব"।
আমার হাড্ডির জয়েন্ট গুলা পটপট কৈরা ফুটা শুরু কর্ল... ভয়ে। ফুটবল খুবি রিস্কি খেলা...তাছাড়া আমার আবার হাড্ডিতে ক্যালসিয়াম কম।

নাইমা পড়লাম প্লেয়ার সংগ্রহে...রাইতে ডাইনিঙ্গে টেবিলে পোস্টার দিলাম...ইতং বিতং...কি লিখছিলাম মনে নাই...কিন্তু খাতা ভৈরা গেল আগ্রহীদের নামে। কাপ্তান রুমমেটরে আইসা রিপোর্ট দিলাম। সে পাশ ফিরা শুইয়া কোইল...
"ভালো...কিন্তু প্রথম ম্যাচ হারার পরে ২য় ম্যাচে কয়জন আইবো...সেইটাই দেখার বিষয়"।
ব্যাপারটা মাথায় ছিলো না। বুয়েটের ছেলেরা হারতে পছন্দ করে না। এরা রণেভংগ দিয়া পালাবে...কিন্তু পরাজয় মানি নিবে না। যাহোক এইবার সিনিয়র ধরতে বাইর হোইলাম। বুয়েট মাঠের পিরামিড ...পারভেজ ভাই আর মধ্য মাঠের কুশলী খেলোয়ার নাহিদ ভাইকে খেলানোর জন্য এদিক উদিক ফুন লাগাইলাম। তেনারা খেলবেন...রাজি হৈলেন।

নাইমা গেলাম প্রস্তুতিতে। প্রস্তুতির চেয়ে বিকালে হলের ফান্ড থিকা ১০টাকা নাস্তাই বেশি ভালো লাগত আমার।

যাহোক, প্রথম ম্যাচ পড়লো গেলবারের চ্যাম্পিয়নদের সাথে। ক্যান...দূর্বল দলকে প্রথম ম্যাচেই চ্যাম্পিয়নদের সাথে খেলতে দেয়া হয়...এইটা আমার মাথায় আসে না। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ হওয়া উচিত এক্স-চ্যাম্পিয়ন ভার্সেস এক্স-রানার আপ। তাইলে টুর্নামেন্টের শুরুতেই একটা চাঙ্গা ভাব চৈলা আসত। আমি ডিএসডাব্লিউ অফিসে গিয়া এই "সুক্ষু ষড়যন্ত্রের" মামলা করমু কিনা ভাবতাছিলাম...লুঙ্গি ছাইড়া প্যান্টো পড়ছিলাম, কিন্তু কাপ্তান আইসা আমারে থামাইলো। কয় এইটাই নাকি "ইন্টারন্যাশ্নাল প্রাক্টিস"। আজিব। সারা দুনিয়াতেই খালি শোষন...দূর্বলরে চড়ায় সবল।

যথা সম্ভব প্রস্তুতি নিয়া প্রথম ম্যাচে নাম্লাম। মানে টীম নামাইলাম। প্রথমার্ধে ফরমেশন ছিল ৯-০-০।মানে সবাই মিলা ডিফেন্স...এক্সেপ্ট পারভেজ ভাই। স্ট্রাইকার পারভেজ ভাই কিন্তু যেনতেন স্ট্রাইকার নন। দূরপাল্লা শটের সাথে তার ছিল ধাক্কায়া ডিফেন্স ভাঙ্গার ক্ষমতা। দূর থেকে তারে পাস দিয়া বল দিতে পারলেই হৈল...আর কাজ নাই।কিছু একটা হৈবই। তিনি হতাশ করেন নাই। হতাশ করে নাই ডিফেন্স। তাগো প্রধান কাজ ছিল...গেঞ্জি মুচড়ায়া ধৈরা রাখা, আর স্ট্রাইকাররে ২/৩বার মাটিতে ফেলায়া দিয়া দম বাইর কৈরা দেয়া। বুয়েট মাঠের এই স্ট্যাটেজি মধ্য মাঠের নাহিদ ভাইয়ের। আমি বরাবরই গান্ধিজী স্টাইলের ফুটবল প্রমোট করছি...অহিংস এবং রক্ষনাত্নক।

আমাদের স্ট্যাটেজি প্রথম ম্যাচে কাজে লাগ্লো। ১-০ গোলে চ্যাম্পিয়ন নজরুল হলকে হারায়া দিলাম। গোল্টা কর্ছিল পারভেজ ভাই।

আজকে আর লেখতে মন চাইতেছে না। শুধু ফাইনালের রেজাল্টটা জানায়া রাখি। ১-০ তে শোচনীয় ভাবে হাইরা গেছিলাম আমরা। অনেকেই ভাবতে পারে ৯০ মিনিটের খেলায় ১-০তে হারকে শুচনীয় বলোনটা ঠিক না। কিন্তু আসল কাহিনী হৈল ৯০ মিনিটে খেলা গোল শুন্য ড্র ছিল। এক্সটা ৩০ মিনিটেও গোল শুন্য। ট্রাইবেকারে...ফলাফল ১-০। না পাঠক। ভূল দেখেন নাই। আমার দল ৫টাই মিস করছিল, আর শেরেবাংলা হল ৪টা।

ওয়ার্ল্ড কাপের স্ট্যাটাস সংকলন পোষ্ট
পাদুকা-গোলক লৈ বেহুদা বাহাসে কাম নাই/ ১মাস পরে দেখপা *** ছাড়া আর কারো নাম নাই!

৮ জুন, ২০১০

ফেইসবুক ও পাঠকের শক্তি


ফেইসবুকে লেখালেখির শুরু কর্ছিলাম সেপ্টেম্বর ২০০৮ এ। আজকে ২০১০ এর জুন। আজকের নোটটা ৮৭ তম। শুরুটা ছিল এক্কেবারেই ঘরোয়া প্রবাস জীবনের রান্না বান্না-কান্না, ভ্রমণ- জীবণ দিয়ে। কিন্তু পরে আর লেখালেখি রান্না ঘরে থাকতে পারে নাই। কারন মাঝে অনেক কিছুই ঘটছে।

একটা আধাখেচড়া মিলিটারি সরকার গদি ছাড়ছে। মেলা নাটকের পরে ইলেকশন হৈছে। ইলেকশনের সময়টা চুপ থাকা যায় না। কারন তখনি সবচেয়ে বেশি মিথ্যা তৈরী হয়, আদর্শের বেচাকেনা হয়। চুপ থাকা যায় না।

চুপ থাকতে পারি নাই যখন মিথ্যাকে সত্যের সাথে মিশায়ে সত্য করতে চায় প্রতিষ্ঠিত দৈনিক পত্রিকারা (প্রথম আলো)। ২৫ বছর চুপ ছিলাম। আর না। এখন ফেইসবুক আছে...অভ্র আছে...কিছু লিখে ফেলা যায় চট করে। সবাইকে জানানোও যায়। দেশের নামে যখন মৌলবাদী তকমা পড়ে ইন্টারন্যাশনাল হার্ভার্ড বিভিউএ ... তখন আর বসে থাকা যায় না। সেটা যেই লেখুক...আমি তারে ছিড়েফুড়ে ফেলতে চাই আমার ফেইসবুক খাতায়। তাতে আমি রাষ্ট্রের চোখে দেশোদ্রহীতা হইলেও কিছু যায় আসে না। কারন সমর্থন পাবার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না...দেশ বিদেশ থেকে সমমনারা লাইক, কমেন্ট দিয়ে সমর্থন জানায়।

২দিনের নানা নাটকের পর যখন পিলখানায় বিডিয়ারের বিদ্রোহ ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে যায় আর প্রতি দিন লাশের হিসাবে গরমিল হয়... তখন আবারো আমরা লাশ গুন্তে বসি। সরকার ও সেনাবাহিনীর দেয়া গোজামিল গুলো নিয়ে কনস্পেরেসি থীওরী লিখি। এতগুলান লোক সারা দেশের কড়া নজরের মধ্যে মরে গেল...আবার হাজার খানেক পালিয়েও গেল...ফাইজলামো নাকি? সবচেয়ে বেশি তর্ক বিতর্ক হয় সেই সময়টাতে। সরকার অতটা সহিষ্ণু ছিল না। তারা ইউটিউব, মিডিয়া ফায়ার বন্ধ করে দেয়।

এরপর তেল গ্যাস নিয়ে অনেক হাঙ্গামা কর্লাম। অনেকের লাফছাপের পর...শেষ পর্যন্ত সরকারকে সমুদ্রসীমানার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে পাঠানো গ্যাছে। শেষ রক্ষা হলে হয়।

এরপর ক্যানো জানি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকদের মাথায় পোকা ঢুকলো। তারা বুঝলো ফেইসবুকেই সব ফাজিলের আস্তানা...সেখানেই তাদের সব অন্যায়ের বিপক্ষে জনমত গঠন হচ্ছে। সুত্রাংম কাটো মাথা। আমি টিভিতে ফেইসবুক বন্ধের খবরটা টিভির আগেই পাইছি..... মোবাইল ফেইসবুকেই। ভ্যান গাড়িতে বসে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্রাউজ কর্ছিলাম। টিভিতে শুনার আগেই ফেইসবুকেই এর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখলাম সবার মাঝে। আর কোন দিন সরকার এই দুঃসাহস কর্বে বলে মনে হয় না।

মাত্র ১ সপ্তাহ। সরকার আর ফেইসবুক বন্ধ রাখতে পারলো না। তারা আমারদেশ বা যমুনা টিভি, চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে যতটা জনপ্রিয়তা হারাইলো...ফেইসবুক বন্ধের ঘোষনা দেয়া মাত্র, তারচেয়ে বহুগুন পাব্লিক পচানি খাইছে। বিশ্বাস হয় না? প্রমান আছে। আমারদেশের সম্পাদককে সাজানো নাটক করে গ্রফতার করে এখন এটা সেটা নানান মামলায় জড়িয়ে আবার ৮ দিনের রিমান্ড নেয়া হয়েছে। শ খানেক সাংবাদিককে চাকরী ছাড়া করা হয়েছে। আবার একটা গণ মামলা দিয়ে সবাইকে দৌড়ের উপ্রেও রাখা হোইছে। কৈ...এত বড় অন্যায়ের পরেও সরকার দিব্বি রিমান্ড, গ্রেফতার চালাচ্ছে। অথচ ফেইসবুক বন্ধ করে সরকার ৭দিনও থাকতে পারে নাই। কাউকে গ্রেফতার না করেও...কারো কোন ভোগান্তি না দিয়েও...ব্রুট মজরিটির সরকার হঠাত জাতীয় ভিলেন হয়ে গেল। বাকশালের গালি হজম করতে হইলো?

সারাদেশে সুলভ ইন্টারনেট আর মোবাইল নেটওয়ার্কই হবে সবচেয়ে বড় মিডিয়ার শক্তি...টিভি চ্যানেল বা সংবাদপত্র না। জনগনই হবে দেশের প্রধান বিরোধীদল। এখনো হয়ত ইন্টারনেট অতটা জনপ্রিয় হয় নাই গ্রামে গঞ্জে। কিন্তু সেই দিন দূরে নাই যেদিন প্রত্যন্ত গ্রামের কোন কৃষক "সার দে হারামজাদা" স্ট্যাটাস বা টুইট দিয়ে সারাদেশে হৈ চৈ ফেলে দিবে।

ডিজিটাল সরকারকে ধন্যবাদ। ফেইসবুক বন্ধ না হলে আমরা ফেইসবুকের শক্তিটা পরখ কর্তে পারতাম না। এখন বুঝতে পারি...আমাদের কমেন্ট শেয়ার, লাইক, নোট, লিঙ্ক এগুলাই আগামী কালের গণতন্ত্রকে আকৃতি দেয়। শুধু এন্টারটেইন্মেন্টই না, ফেইসবুককেই আধিকার আদায়ের হাতিয়ার বানান। শাসকের দল আপনাকে তখনি ভয় পাবে, যখন আপনার আওয়াজ সারা দুনিয়ায় শোনা যাবে।

রাজা হবুচন্দ্রের সহিত বাঙ্গাল

একদা রাজা হবুচন্দ্রের দেশে স্বাদু জলের বড় আকাল পড়িল। দীর্ঘদিন বারিষ হয় না। মাঠের ফসলাদি জলের অভাবে বিনাশ হোইল। এমতাবস্থায় রাজ্য ত্রান সাহায্যের বড় জরুরত পড়িল। জলের অভাবে চারিদিকে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। প্রজাগণ রাজসভার হর্তাকর্তাদিগের নিকট ত্রানের আশায় নানান দাবি-দাওয়া তুলিল। রাজসভার সকলের এই ঘোর দূর্দিনে কোষাগার উন্মুক্ত করিয়া লঙ্গরখানা খুলিবার ব্যাপারে সম্মত হৈলেন। কিন্তু হাড় কিপ্টে রাজা হবুচন্দ্রেকে একথা কে বলিবে?কাহার ধড়ে দুইখানা মাথা! কেহই সাহস করিয়া উঠিতে পারিল না। সকলে মিলিয়া বাঙ্গালকে ছাই দিয়া ধরিয়া বসিল। বাঙ্গাল কিছুতেই তাদের না করিয়া পিছলাইতে পারিল না। রাজসভায় সস্তা বিনোদনের কাজ ছাড়া আর কিছুই সে পারে না বলিয়া দূর্নাম আছে। এবার তা ঘুচবে...সেই আশায় এই দুঃসাহস করিতে রাজি হৈল বাঙ্গাল।

কিন্তু রাজসভায় কথা পাড়িতে গিয়া বাঙ্গাল বুঝিল, ইহা মোটেও ছেলে খেলা নয়। তাহার হাটু কাপিয়া উঠে...গলা শুকাইয়া যায়। কিপ্টে রাজা গেল বছর ফেরিতে ডুবিয়া মরা সকল পরিবারকে একখানা করিয়া ছাগলের রশি দিয়া বাড়ি পাঠাইয়াছিল। জলের অভাবে এখনো কেউ মরে নাই...অবশ্য মরিতেও দেরি নাই। এবছর না মরলেও আগামী বছর না খেয়ে আদ্দেক মরবে নিশ্চিত। বাঙ্গাল ভাবিল...সোজাসাপ্টা রাজকোষ খুলিবার কথা বলিলে জুতো ছাড়া কিছুই মিলিবে না। তাই সে অনেক ভাবিয়া ভিন্ন পথ নিল।

পরদিন রাজসভার প্রভাতী অধিবেশনে বাঙ্গাল একখানা পুরনো ময়লা ধুতি... হাটুর কিছুটা উপরে পড়িয়া আসিল। সকলে মুখ টিপাটিপি করিয়া হাসিতে লাগিল। সবার পরনে চকচকে কাপড়চোপড়ের মাঝে মলিন বিমর্ষ বাঙ্গালের সুচিক্কন কৃষ হাটু বড়ই বেখাপ্পা লাগিতেছিল। ব্যাপারখানা রাজা হবুচন্দ্রের নজর এড়াইলো না। বাঙ্গালকে ডাকা হৈল।

"কিরে তোর কি হইয়াছে? ধুতিখানাও ঠিক মতো পড়িতে শিখিস নাই?" রাজা শুধান।
- জ্বী রাজা মশায়। বেয়াদপি লিয়েন না...আজ্ঞে রাস্তা ঘাটে বড্ড ধুলোতো তাই উঠিয়ে রেখেছি এক্টূ
"ক্যানো রে...ধুলো লাগ্লে ধুয়ে ফেল্লেই তো হয়...হেহে"... চারিদিকে হাসিতে কয়েকজন একে অপরের উপরে এলাইয়া পড়িল।
- "আজ্ঞে কাপড় ধোয়ার সাবানতো বাসায় রয়েচে...কিন্তু জল নেই"
- "বড় হাসালিরে...তোর বাসায় জল না থাকলে ধোপার কাছে দে..."
- "রাজা মশায়...আমার ধোপা গতকাল জল খাইতে না পাইয়া তেষ্টায় মারা গেছে"

চারিদিকে নিরবতা পড়িল। হবুচন্দ্র ক্ষিপ্ত হোইয়া তাহার ডিজিএফাইকে ডাকিলেন "প্রজারা পানির অভাবে মরিয়া জাইতেছে তোমরা আমায় সেই খবরটা দিতে পারিলে না...আমাকে শুনিতে হৈল নটাঙ্গি বাঙ্গালের কাছে...তাও আধা ঘন্টা নাটক করিবার পর!"

ডিজিএফাই বাহাদুর বিশাল গোফ নাড়ীয়া বলিলেন "খবর নিবার জন্য ঘোড়সাওয়ার পাঠাইতে চাইয়াছিলাম...কিন্তু রাজপ্রসাদ হৈতে এতটা পথ যাইতে ঘোড়ারো পানি খাইতে হয়...উহা পাইব কোথায়?"

পরদিন রাজা হবুচন্দ্র রাজ্যে নিয়ম জারি হোইল "প্রকাশ্যে কাপড় ধোয়া নিষেধ। ধুতি হাটুর উপরে পড়ীতে হবে"...লে হালুয়া!

------------------------------------------------------------------------------
এতটুকু স্বপ্ন দেখবার পরে বাঙ্গালের ঘুম ভাঙ্গল। হবুচন্দ্রের দেশে নয়...নিজের বাংলাদেশে। ফ্যানের পাখা ঘুরছে...কারেন্ট গেলেও সমস্যা নাই...আইপিএস আছে। রিমঝিম বরষাও এসে গেছে। কাথামুড়ি দিয়ে কষে ঘুম দিল সে। বাংলাদেশের সব মানুষই এখন আরামে ঘুমুচ্ছে। বিদ্যুত নিয়ে তারা আর ভাবে না। এ বছরটা না হয় গেল। আগামী বছর গ্রীষ্মে? একদিকে সরকার এডিবির ঋণে গ্যাস পাইপ বসিয়ে যাচ্ছে। গ্যাস কোথায়? পাচ বছর আগে আমরা খাম্বা পুতেছি। এখন বিদ্যুত নাই।
দুইকোটি মানুষের কংক্রীটের জঙ্গলে কি শান্তিতেই না আমারা আছি। ১১৭জন পুড়ে মরেছে? দুই দিন চুক চুক করে ঢাকাবাসি। আরো ডজন খানে ভবণ ধসে মরেছে? আহারে। ওরা অভাগা ছিল। আমিতো বেচে আছি। দামি ফ্লাটে আছি...লক্ষাধিক টাকায় কেনা...হুহু...হেল্বে না ফাটবে না...ভূমিকম্প? সেটা আবার কবে হয়েছিল?

ঢাকাবাসি আবার ঘুমায়। আগামী বছরের চিন্তা কে করে? আগামীকালের চিন্তাইতো মাথায় আসে না। হবুচন্দ্রের দেশে সবাই সুখেই থাকে। যাদের সুখ শেষ হয়...তারা মারা যায় বা পুড়ে যায় বা কোথাও মাথা থেতলে চাপা পড়ে থাকে...শিয়াল-শকুনেরা তাদের খোজ পায়। ঢাকাবাসী তাদের খোজ রাখে না।

২৯ মার্চ, ২০১০

গুরু ধরিতে বাঙ্গাল পুনরায় ঢাকায়

পূর্ব পাঠের পুনরালোচনাঃ বাঙ্গালের মিথ্যা ইমাম সাহেব ফাস করিয়া দেয়ায় গ্রামে ছি ছি রব উঠিল। একি করিল বাঙ্গাল? সামান্য একটুকরা জমিনের জন্য আপন দাদির পেটের চাচার নামে মিথ্যা অপবাদ। এত জ্ঞানপাপী!

বাঙ্গাল এই অপমান সইতে না পারিয়া। গ্রাম ত্যাগ করিল। সে বুঝিল, তাহার দরকার একজন মুরুব্বি। চট করিয়া মাথায় আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালার গুরুর নাম আসিল। হুম। সেবার বেমক্কা প্রশ্ন করিয়া মশায়ের ধুতিতে টান ফেলিয়া... বড় শর্মিন্দায় ফেলাইয়াছিল বাঙ্গাল। এবার গড় করিয়া পেন্নাম দিয়া তার প্রায়সচিত্ত করিবে বলিয়া সে মনে মেনে ঠিক করিয়া নেয় সে।ঢাকায় আসিয়া সোজা পাঠশালার দিকে রওনা হয় সে। পাঠশালায় আসিয়া বাঙ্গাল থমকিয়া দাড়াইল।একি। দরজা বাহির হৈতে বন্ধ। দেয়ালে সেই পুরানো নোটিশটাও আছে "কুকুর ও ছাগু প্রবেশ নিষেধ"। পাঠশালার নোটসমূহ বারান্দায় ছড়ানো। কিন্তু গুরুর দেখা নাই। প্রবেশদ্বারে গুরুর খড়ম জোড়াও নাই। তবে কি পাঠশালা বন্ধ হৈয়া গিয়াছে?

বাঙ্গাল কিছুক্ষন ঠায় দাড়াইয়া রয়। তারপর সে পথে পথে ঘুরিয়া বেড়ায়। উদ্ভ্রান্ত বাঙ্গাল তার আধুনিক ইতিহাসের পাঠ এখন কার কাছে লৈবে? কোথায় তার গুরু? প্রখর রদ্দুরে ঢাকার পথে পথে ঘুরিয়া বাঙ্গাল শ্রান্ত হৈল। সারা সকাল ঘুরিয়া ব্যর্থ হৈয়া এক বাড়ির সামনে আসিয়া তার পা থামিয়া গেল। দুয়ারে আঘাত করিতে ভিতর হৈতে ৮/৯ বৎছরের এক বালক দ্বার খুলিয়া উকি দিল।

বাঙ্গাল বলিল "দিদি, আমায় একটু জল দিবে?"
বালক মুখ ঝামটা দিয়া বলিল "আপনার মাথা ঠিক আছে...মশাই?"
বাঙ্গাল ক্লান্ত হৈয়া মাটিতে বসিতে বসিতে কহিল "গুরু হারাইলে কি মাথা ঠিক থাকে মা!"
----------------------------------------

সিরিজের অন্যান্য লেখা
আধুনিক ইতিহাসের জনককে বিদায় জানাইতে বাঙ্গাল উইঠা খাড়াইছে...ঐ তোরা তালি দে!

আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালায় বাঙ্গাল, 'আ' তে আওয়ামী, 'ব' তে বাকশাল

আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালায় বাঙ্গাল-দ্বিতীয় খন্ড।

২৭ মার্চ, ২০১০

আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালায় বাঙ্গাল, 'আ' তে আওয়ামী, 'ব' তে বাকশাল (দ্বিতীয় খন্ড)

পূর্বপাঠের পুনরালোচনাঃ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের নির্দেশে ইতিহাসে কাচা বাঙ্গাল বোলগে গিয়াছিল "আধুনিক ইতিহাস" শিখিতে। 'আধুনিক ইতিহাস' শিক্ষার পাঠশালায় গিয়া বিবাদে জড়াইয়া বাঙ্গালের নাম কাটা গেল। ফিরিবার কালে তার চটি জোড়াও খোয়া গেল।
------------------------------------------------------------------------------
কিন্তু অর্জনটাও কম নহে। গ্রামে ফিরিয়া নব্য ইতিহাস জ্ঞান ছড়াইয়া সে বেশ খ্যাতি পাইয়াছে। এ বাড়ির মিষ্টি কুমড়ো, ও বাড়ির পাকা কলা ইনাম আসিল।১০ গ্রামে এরম কথা কেউ বলিতে পারিয়াছে? দিকে দিকে তার বাণী ছড়াইয়া গেল। "বাকশাল ছিল দ্বিতীয় বিপ্লব, সমাজতান্ত্রিকমন্ত্রের বিপ্লব। যাহারা উহাকে স্বৈরশাসনের রুপকল্প বলে তাহারা আসলে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি"। তবে লোকে আরো জানিতে চায়। তাহারা আরো শুনিতে চায় বাঙ্গালের কাছে। বাঙ্গাল ভাবিয়া পায় না, সে নুতন কি বলিবে। কোথা হৈতে বলিবে, সবি তো ইতিহাস। সকলে দেখিয়াছে। বানাইয়া বলিলেতো ডাহা মিথ্যা হৈবে। এদিকে আমাগোবোলগের আধুনিক ইতিহাস শিক্ষার দুয়ারো বন্ধ।নাম কাটা। আর কে যায় ওপথে আবার চটি জোড়া হারাইতে!

অনেক ভাবিয়া একদিন প্রভাতে বাঙ্গাল ঢাকার পথে রওনা হৈল। ঝোলায় আধুনিক ইতিহাস শিক্ষার নানান ফরমান। ঢাকায় আসিয়া সে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডের রাস্তায় ঘুরিতে লাগিল। জনে জনে জিজ্ঞাসিল "আধুনিক ইতিহাস শিক্ষা কোথা পাই?"। এরুপ কোন ডিপার্ট্মেন্টের কথা কেহ বলিতে পারিল না। শেষে এক রিক্সাচালক ভ্রাতা বলিল "পাব্লিক লাইব্রেরী যান মামা, উহা জ্ঞান ভান্ডার"। পাব্লিক লাইব্রেরীতে গিয়া বাঙ্গাল নানা পুস্তক ঘাটিল। কিন্তু নুতন কিছুই পাইলো না। কোথায় আধুনিক ইতিহাস? সবি তো গ্রাম্য বিদ্যালয়ে পড়ানো সেই পুরাতন ইতিহাস লাগিচ্ছে। মোটা মোটা বই টানিয়া বাঙ্গাল হাপাইয়া উঠিল। শেষে পুস্তক ছাড়িয়া পত্রিকা ধরিল। সহসা তাহার জ্ঞান নেত্র উন্মোচিত হৈল। আহা! ইহাই তো খুজিতে ছিলাম। খাতা খুলিয়া বাঙ্গাল খসখস করিয়া নোট লৈতে থাকিল।

"দুনিয়া কাপানো ত্রিশ মিনিট"- ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বিষয়ে ২০১০ সালের পূর্বে কেহ এই বিষয়ে আলোকপাত করে নাই। শেষমেষ গ্রাম্যমুঠাফোন আর শহুরে প্রথম আলোই ইহা ইতিহাসের খনি হৈতে টানিয়া তুলিয়া লোকের সুনাম কাড়ীল। ইহা আধুনিক ইতিহাস না হৈয়া যায় না।

“ভাষা আন্দোলনে শেখ মুজিবের অবদান”...হুহু...ইহাও নুতন,২০১০ সালের আগে কেহ এরুপ দাবি করে নাই। ১৯৫২ সালে তরুন যুবা শেখ মুজিব সুদূর কলিকাতায় বসিয়া সুতা টালিয়া বাংলা ভাষাকে রক্ষা করেছেন।গুনীলোকের কর্মপ্রক্রিয়াই অন্যরকম। ইহারা স্থান-কাল-পাত্রকে জয় করিয়া কোথা হৈতে কবে উদয়, কাহাকে কুপোকাত করে বুঝা যায় না।
যথেষ্ট। বাঙ্গাল গুলিস্তান আসিয়া বাসে উঠিল।বাস যাত্রায় সে শুধুই ভাবিল। তাহার তন্ময় ভাবনা সুদূর প্রসারী।

পরদিন গ্রামের মুরুব্বি জমায়েতে বাঙ্গাল তার খাতা খুলিয়া জ্ঞান বিতরন সারিল। একি শুনাইলো বাঙ্গাল। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা-সকলের মুখ সদ্য প্রস্ফুটিত শাপলার ন্যায় প্রসারিত হৈল। খাতা নামাইয়া রাখিয়া বাঙ্গাল বলিয়া চলিল “ভাষা আন্দোলনের সেই ত্রিশ মিনিটের আন্দোলনে যোগদিতে আমার বাবাও ঢাকা গিয়াছিল। মিছিল করিয়াছিল। শেষে পুলিশের ধাওয়া খাইয়া গ্রামে ফিরিয়া আসিয়াছিলেন। কিন্তু টিয়ারগ্যাসের প্রভাবে তাহার চোখে সমস্যা দেখা দেয়। এই সুযোগে তমিজ চাচা জমির দলিলে বাবার সাক্ষর করাইয়া জমির দখল লৈয়াছে।”
তমিজ মিয়া দাড়াইয়া ছাতি উচাইয়া কহিল “তবেরে! ছ্যাপ দিয়া গুনিয়া তোর বাবারে জমির দাম দিয়াছি। ভুলিয়া গিয়াছিস!”
বাঙ্গাল নির্লিপ্ত “ভাষার জন্য লড়াই করিতে গিয়া আমার বাবা জমিন হারাইয়াছেন। তোমরা আমার জমিন ফিয়াইয়া দাও। তমিজ চাচা...স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি...ছলেবলে সে জমিন দখল নিয়াছে”। সকলে গুঞ্জন তুলিল। একিরম কথা, চাচা হৈয়া ভাতিজার হক মারিয়া দিল তমিজ! বেশ গোল বাধিল।

গ্রামের মসজিদের ইমাম কলহ থামাইতে বলিল "শোনো বাবা, বাঙ্গাল। তোমার বাবা আমার বাল্য বন্ধু ছিলেন। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী আমরা একত্রে পলাইয়া সিনেমা দেখিতে শহরে গিয়াছিলাম। আল্লাহ মাফ উনার আত্মার শান্তি দিন"
----------------------------------------
অন্যান্য রম্য লেখা
আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালায় বাঙ্গাল, 'আ' তে আওয়ামী, 'ব' তে বাকশাল-প্রথম খন্ড
ক্যান্টিনে শোরগোল!- বাই বুয়েটিয়ান ফর বুয়েটিয়ান অফ বুয়েটিয়ান
বুয়েটের ঝড় ডুয়েটেও আসিতেছে! হুশিয়ার!
নয় রশি পীরের(RP9) তাবীজ!

২২ মার্চ, ২০১০

আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালা, 'আ' তে আওয়ামী, 'ব' তে বাকশাল

ইতিহাসে বাঙ্গাল বরাবরই কাচা ছিল। কিছুতেই সন মনে রাখিতে পারিত না সে। তারপরেও কি করিয়া যেন সে পরীক্ষায় টানিয়া টুনিয়া পাশ করিয়া ফেলাইত। বিদ্যালয়ের ইতিহাস শিক্ষকের নজরে ব্যাপার খানা ধরা পড়িল। তিনি উপদেশ দিলেন...আধুনিক ইতিহাস কিছু শিখিতে চাস তালে... বোলগে যা। শিরোধার্য গুরুপদেশ।আধুনিক অনলাইন শিক্ষা। বাঙ্গাল আমগোবোলগে আর সামু বোলগে একাউন্ট খুলিল। খুজিয়া বেড়াইলো আধুনিক ইতিহাস শিক্ষার বোলগ। নানা লিঙ্ক ঘুরিয়া সে আধুনিক ইতিহাস খুজিল। শেষে পাইল ফুফার বোলগ। সেখানে সে আধুনিক ইতিহাসের জ্ঞান লাভ করিয়া গুরুর নিকট ফিরিল।

- তো বল, কি শিখিয়া ফিরলি!
- জ্বী। ফুফার বোল্গে দেখিলাম "হাজার বছরের শেষ বাঙ্গালী শেখ মুজিবর প লাশীর প্রান্তরে সিরাজকে ল ড়িবার নির্দেশ দিয়াছিলেন। কিন্তু অনভিজ্ঞ সিরাজ উনার নির্দেশ সঠিকরুপে পালন করিতে না পারিয়া, পলাশীর বাজারে বাংলার স্বাধীন তার সূর্য টানিয়া নামাইয়াছে। পরবর্তীতে সেই স্বাধীনতার সূর্য আবার টানিয়া উঠাইয়াছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী।"
বর্ননা শেষ হৈবা মাত্র বাঙ্গালের গালে চড় পড়ীল।
গুরু মশায় চটিয়া কহিলেন "এ তোর আধুনিক ইতিহাস শিক্ষা হৈল? অনলাইনে বসিয়া জ্বালা ডট কমের চটি পড়িলেও এর চেয়ে ঠের ভাল শিক্ষা পাইতি।"
মশায়ের মুখে একি কথা। রাম রাম। বাঙ্গাল মিউ মিউ করিয়া শুধাইল " তালে কোন বোলগ পড়িব?"

- হুম। জ্বালা ডট কমের দন্ডমুন্ডির কর্তা লিখিতেছেন আমাগোবোলগে। উহা পড়িয়া জ্ঞান বৃর্দ্ধি করিয়া আয়।

পরদিন প্রভাতে বাঙ্গাল স্নান সারিয়া আমগোবোলগে গেল। বোলগের প্রবেশ দ্বারে বড় করিয়া "ড়াজাকার ও কুকুর ঢুকিতে মানা" লেখা। বাঙ্গাল বুঝিল গুরু তাহাকে সঠিক শিক্ষকের সন্ধান দিয়াছেন। চটি জোড়া খুলিয়া সে প্রবেশ করিল।ইহা স্বাধীনতার স্বপক্ষের ইতিহাস শিক্ষক না হৈয়া যায় না। আধুনিক ইতিহাসের চর্চাতো ইহারাই করিতেছে। গুরু বলিয়াছিলেন "আধুনিক ইতিহাসই প্রকৃত ইতিহাস। যে ইতিহাস তোর বাবা-দাদা পাঠ করিয়াছে, কিন্তু ভূলিয়া ভ্রম ঠাউরাইয়াছে...এবং বতর্মানে সে ইতিহাস 'স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি' ঘবেষনা করিয়া টানিয়া তুলিয়া আনিয়াছে উহাই আধুনিক ইতিহাস।"

সুন্দর পাঠশালা। গুছানো। আধুনিক পিসি। স্ক্যানার। ভিডিও ক্যামেরা। আর একখানা পুরানো টাইপ রাইটার এক কোনায় পড়িয়া আছে। আধুনিক পিসির পাশে পুরানো টাইপ রাইটারের কি জরুরত তাহা বাঙ্গালের ক্ষুদ্র খুপ্রিতে ঢুকিল না।

মনিটরে সদ্য লিখা একখানা বোলগ দেখিল। "দ্বিতীয় বিপ্লব বা বাকশাল : শুনুন বঙ্গবন্ধূর মুখেই"। বাঙ্গাল দ্রুত টুকিয়া লইল খাতায় লিঙ্কঃ http://omipial.amarblog.com/posts/101959

কমেন্টে গিয়া বাঙ্গাল প্রশ্ন রাখিল "বাকশাল গঠন করিয়া উহাকে দ্বিতীয় বিপ্লব বলিয়া উহার শীর্ষপদে নিজেই আসীন হৈয়া 'হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী কি গণতান্ত্রিক কাজ করিয়াছে?'
-উত্তর আসিল। "উহা গণতান্ত্রিক নহে মূর্খ ... সমাজতান্ত্রিক সীদ্ধান্ত। তুই কেরে ...উনাকে তাচ্ছিল্য করিস!"

বেয়াড়া বাঙ্গাল শুধাইলো "গুস্তাফি মাফ করিবেন জনাব। শিক্ষার উদ্দেশ্যে আরো একখানা প্রশ্ন রাখিতে চাই। সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়িবার সাধ থাকিলে তা প্রথমেই কেন করা হৈল না। কেন হঠাত ৩ বছর রাজকার্য চালাইবার পর সব রাজনৈতিক দলকে নির্বংশ করিয়া বাকশাল করিতে হৈল। বিরোধীরা কি বড় বেশী গোল বাধাইতেছিল? আর যদি ইহা উনার শেষ খোয়াব হৈবে...তাহা হৈলে আওয়ামী সরকার তাহা বাস্তবায়ন না করিয়া ক্যানো বহুদল লৈয়া ভেজাল পাকাইতেছে? আজ উহাকে পিটায়...কাল তাহার মাথা ভাঙ্গে "

আর বরদাস্ত হৈল না।আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালা হৈতে বাঙ্গালের নাম কাটা গেল। তাহার অপরাধ... সে বড় বেয়াড়া প্রশ্ন করিয়া পন্ডিত মশায়ের ধুতিতে টান ফেলাইয়া দিয়াছিল।

১৩ মার্চ, ২০১০

আমার বউ কই?

সকাল থিকা মনটা কষা হয়া আছে...বিবিধ কারনে। আমার চারদিকে বিবাহিত লোকজন গিজগিজ করতেছে। অফিসে- সামনের টেবিল, পাশের টেবিল--- সব নব বিবাহিতদের দখলে। এরা প্রায়ই ফিসফাস কইরা ফোনে কথা বলে...আমার দিকে আড়চোখে তাকায়। এদিকে আমার আনন্দউদযাপনকারী দলটাতেও বিবাহিতরা এখন সংখ্যাগুরু...সবখানেই সমঝে চলতে হয়। জানুয়ারীতে শাওন মড়কটা লাগাইছে...মার্চে সাফফু, এই হপ্তায় পিয়াসের বিয়া, মে মাসে নাঈমের... হাসিব ভাই, প্রতনু, আবীর, রুশো সব পাইপ লাইনে ঢুইকা আছে......মাইনে সামনে পিছে...জলে স্থলে অন্তরীক্ষে সর্বত্র বিয়া। ফেসবুক খুল্লেই কারো না কারো বিয়ার ছবি। উফফফ। "বিবাহিতরা আমার হাড় জ্বালাতন করিতেছে"। এইজন্যি ইদানিং ফেসবুকে তেষ্টাইতে না পাইরা Somewherein ব্লগে আসছি।

এমতাবস্থায়, কেন জানি আজকাল যেকোন মেয়েরেই ভাল লাগতেছে । ভাবতেছি বাসায় হুমকি দিয়া বেনামে একটা উড়োচিঠি দিব কিনা...রেজিষ্টার শাহাজাহানের আদলে

"আপনার ছেলে ইউনিভার্সিটির কতিপয় মুষ্টিমেয় মেয়েদের সাথে লটরপটরে জড়িয়ে পড়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পরিপন্থী। মেয়েদের উস্কানিমুলক থুক্কু আস্কারামুলক মন্তব্য করে সে নিজের একাডেমিক জ়ীবনের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। তাকে সমঝে চলতে বলুন, নতুবা বিয়া দেন"------ ইউনিভার্সিটি রেজিষ্টার শাহাজাহান

হবু জামাই পিয়াস জব্বর একটা কবিতা লিখছে

ঢাকায় শিলা বৃষ্টি হইলে আমার ভেতরে তোলপাড় হয়
--পি.কা. (পিয়াস কাওসার)


ঢাকায় বৃষ্টি হইলো, আমি শুকনা / আমার শিলা কই?/
আমার কিশোর শহরে ভেজা রাস্তা , পীচ পথে মাটির ঘ্রান,/আমার মাটি কই? /
আমি থাকুম না এই খানে ,আমারে ছুটি দাও/ আমার জীবন কই?

আমার এত প্রতিভা নাই...তাই প্যারডি করার ছাড়া উপায় নাই...শেষ পর্যন্ত পিয়াসের কবিতাটাই হাতাইলাম

ঢাকায় পিকার বিয়া হইলে আমার ভিতরে গ্যাস্টিকের জ্বালা হয়

ঢাকায় পিকার বিয়া হইবো, আমার কি?/ আমার বউ কই?/
আমার পরিচিত ঢাকায়... বন্ধুর বিয়া, বিরিয়ানী, রেজালার ঘ্রান/ আমার প্লেট কই/
আমি থাকুম না এইখানে ,আমারে বিয়া দাও/ আমার বিবি কই?


অনেক কষ্টে আমি মোটে এক লাইন বাহির করতে পারছি...
"আজকাল মোবাইলটা লাগে না তেমন কাজে, মিসকল এসএমএস দাও না আর মাঝে মাঝে,
যখন এলার্ম দেই তখনি শুধু বাজে..."

---------------------------------------
অন্যান্য লেখা

ব্যানানা বাংলাদেশ-২ (প্রথম আলোর ইহুদীডিম্ব!)
ব্যানানা বাংলাদেশ-১ (ইকোনমিক হিটম্যান)
প্রথম আলো তাহার জাত চিনাইয়াছে
কন্সপিরেসি থিওরী-পারট ৩ (সিউডো-জ়ঙ্গি রাষ্ট্রের ছায়া)
তুমি অধম হইলে আমি ততোধিক অধম হইব!

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:১৮

জাহাজ নির্মান শিল্প,স্বাপ্নিক ডঃবারির ৭০ হাজার কোটি টাকা


আজকাল উলটা সিধা লেখা দেখলেই ঝারি পিটানি বদঅভ্যাসে পায়া বসছে আমার। পাব্লিকও ক্ল্যাপ দেয়।
আজকে ডিবাংক করবো জাহাজ শিল্প নিয়া লেখা সরকারি সহায়তা পেলে বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভবএই লেখাটা। এই টাইপ লেখা গুলান পেপার পত্রিকায়ও দেখে থাকবেন পাঠক। আমি আনন্দ শিপইয়ার্ডের একজন সাবেক ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে এই তেলবাজি ডিবাংক করা নাগরিক দায়িত্ব মনে করি। বাই দা বাই,আনন্দ শিপইয়ার্ডের সাথে আমার একটা পুরান হিসাব বাকি রইয়া গেছে...

লেখক হয়তো কোন খান থিকা কপি পেষ্ট করছেন লেখাটা। পুরা লেখাতেই আনন্দশিপ ইয়ার্ডের বিজ্ঞাপন, সাথে একটা সাক্ষাতকারো আছে।

লেখক বলেছেন "১ জন চেয়ারম্যান (ডঃ বারি স্যার, সাবেক বুয়েট শিক্ষক), ১ জন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৪ জন পরিচালক রয়েছেন।"----হাসাইলেন মিয়া। চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী, (স্ত্রী পাস করেছেন ইডেন থেকে) , ৪ পরিচালকের ৩ জনই তাদের স্নেহ ধন্য মেয়ে যারা বিদেশে থাকেন, অপর পরিচালকটি বড় মেয়ের জামাই, উনিও দূরপরবাসী। চমেতকার ব্যবস্থাপনা।কি কন?

আরো বলেছেন "এসব শিপইয়ার্ডের মধ্যে আনন্দ শিপইয়ার্ডের নির্মাণ কৌশল আলাদা। এই শিপইয়ার্ডের কাজ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে করা হয়। এখানকার কর্মকর্তারা জানালেন, আমাদের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এত বড় ও আধুনিক যন্ত্রপাতিতে সুসজ্জিত শিপইয়ার্ড আর দ্বিতীয়টি নেই।"- লেখক নিজে কি দেখে লিখেছেন নাকি শুনে লিখেছেন? জাহাজশিল্পে কি কি যন্ত্রপাতি থাকা উচিত বলে উনার ধারনা? ২/৪টার নাম কইতে পারলে আরাম পাইতাম।

"প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানালেন, বিশ্ববাজারে আমাদের তৈরি জাহাজ রফতানিতে সুনাম অর্জনের একমাত্র কারণ প্রতিষ্ঠানের মালিক, কর্মচারী ও শ্রমিকদের পরস্পরের অতি শ্রদ্ধাবোধ ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করা।"---আহা...সুনাম দেখি টপটপায়া ঝইড়া পড়তেছে। উক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তারে জিগান গত ৫ বছরে কয়বার বেতন বাড়ানো ও নিয়মিত করার দাবিতে ইঞ্জিনিয়াররা আন্দোলন করছে।মোট কয় জন ইঞ্জিনিয়ার চাকরী ছাড়তে বাধ্য হইছে।সঠিক কইতে পারলে লেবান চুস!

আপ্নাগো আমি কিছু ইনফো দেই- ক্লিয়ার কইরা শুইনেন

১। আনন্দ শিপিয়ার্ড ফুলে ফেপে বড় হয় বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ডের ১২৯টি ছোট পল্টুন বানায়া- অই প্রজেক্টে মোট লাভ হয় ১০০কোটি। যাগা মত ঘুষ দিতে যান্তে হয় দাদা! এই লাভের টাকা গুলান তো আপনার আমার পকেটের টাকা। জিডিপির ৫.৮% সামরিক ব্যয় কেমতে হয় বুঝলেন?

২। এই পর্যন্ত একটা জাহাজও আনন্দ শিপইয়ার্ড সময় মতো ডেলিভারী দিতে পারে নাই। কারন দক্ষতার অভাব।কাজের কাজ দেশের অন্যান্য শিপ বিল্ডারের রেপুটেশন নষ্ট করছে।

৩। নদী দখল করে বানাইছেন স্লীপ ওয়ে। নদী ভরাট করে জায়গা দখল করছে।( স্লীপ ওয়ে হইতাছে একটা বড় রেল লাইন যেটার উপর দিয়ে জাহাজ নদী থেকে ঊঠানো ও নামানো হয়)

৪। পরিবেশ ক্ষতি করে 'র'স্টিলে স্যান্ড ব্লাস্ট করেন উনারা নদীর পাড়ে, যা আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ ও ভয়াবহ ক্ষতিকারক।

৫। যে ৭০ হাজার কোটি টাকা মোহ দেখায়া সরকারের কাছ থিকা ইন্সেন্টিভ চাইতেছেন ডঃবারি সাহেব, তাই কি আস্লেই পাওয়া সম্ভব? শিপের অর্ডার এর সাথে বিল্ডিং স্পেসিফিকেশন নামের বিশাল একটা কিতাব থাকে, যেখানে লেখা থাকে কোন জিনিস্টা কোন কম্পানি থেকে কিনে জাহাজে দিতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যে দেশের জাহাজ মালিক সেই দেশের কম্পানির নাম সেখানে থাকে। প্রতিটা জিনিসের জন্য সাপ্লায়ার কম্পানির নাম উল্লেখ থাকে। তার মানে আপনি যার টাকায় জাহাজ বানাবেন তার দেশের জিনিস কিনতে বাধ্য...সুত্রাং অর্ডারের মিলিয়ন ডলারের মূলার ৮০-৯০% চলে যাবে বিদেশে...বাকিটা থাকবে ডঃ বারি সাহেবের পকেটে। এখন বলেন এই জন্য কি এটাকে পোশাক শিল্পের মতো ইন্সেন্টভ দেয়া উচিত?

আরেকটা জিনিস কমেন্ট থিকা যোগ করি। ডঃবারির অযোক্তিকভাবে ৭০হাজার কোটি টাকার মূলা দেখায়া সরকারি ইনসেন্টিভের দাবি করছেন। উনি বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের কাছে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি চেয়েছেন।

তাহলে উনি আবারো পুরান খেলা খেলতে পারেন। আগেও তিনি মোজাম্ববিক সরকারে টাকায় জাহাজ বানিয়ে উনাদের ডেলিভারি দেরি করান। ক্রেতাপক্ষ (মোজাম্বিক সরকার) ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি ভেঙ্গে নিয়া যাবার ভয়ও দেখালে তিনি নির্বিকার। কারন তত দিনে স্টিলের দাম বাড়ার জন্য জাহাজের মার্কেট ভ্যালু ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির চেয়ে বেশি হয়ে গিয়েছিল।মানে বাজারে নিজে বিক্রি করলে সেটা ব্যাংক গ্যারান্টির চেয়ে বেশি পাবেন।শেষ পর্যন্ট নানান দেন দরবারের পর মোজ্ববিকের সেই জাহাজ শিডিউল টাইমের বছর খানেক পর ডেলিভারি হয়।এই ঘটনার পুনরাবৃতি হইলে প্যাচে পড়বে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক (গ্রান্টার)।


এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ন কৃ্ষি, যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ করতে সরকারকে কেউ বলে না। ক্ষেতের লোকের কথা পত্রিকাওয়ালারাও শুনে না। আর সরকারতো থাকে চাঙ্গের উপরে।
-----------------------------------
অন্যান্য লেখা
হস্তীভক্ষন ও বিদ্যুৎখাতের স্টিকী পোষ্টঃ ডিবাংক
ব্যানানা বাংলাদেশ-৩ (গডফাদারের স্টিমুলাস মূলা)
ব্যানানা বাংলাদেশ-২ (প্রথম আলোর ইহুদীডিম্ব!)
ব্যানানা বাংলাদেশ-১ (ইকোনমিক হিটম্যান)
কন্সপিরেসি থিওরী-পারট ৩ (সিউডো-জ়ঙ্গি রাষ্ট্রের ছায়া)

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০০৯ সকাল ১০:৩৩

মর শালারা সব... আমারেও মার!


মঙ্গলবাণী

শুধু যদি পেটে থাকতো ভাত
খালি ঘুমাইতাম; রাত হইলেই কাত।
আমি তখন সিনেমা দেখতাম...সমুদ্র খাইতাম
চালাইতাম ফোর হুইল ট্রাক।

তখন শুধু এক্সিডেন্ট করতাম...
লাগত না ব্যাথা...
একুরিয়ামে মাছের মত চোখ খুইলা রাখতাম
কইতাম না কথা।

খাইতাম না বেতের বাড়ি
ঘাড়ে কিংবা পাছায়...
যাইতাম না ইস্কুল বাড়ি...কেডা আমারে পাঠায়?

শুধু যদি বুঝাইতে পারতাম...চিল্লায়া চিল্লায়া কইতে পারতাম
আজাইরা ফালাফালি করা ছাড়...
মর শালারা সব...আমারেও মার...

---পি.কা.


আজকের সকালটা মোটেও সুবিধার না। ১২ তলা কংক্রিট বস্তির ব্যালকনি থিকা দূর দিগন্ত জুইড়া ধোয়াশা দেখা যাইতেছে... ইন্দোনেশিয়ায় নাকি আগুন লাগায়া জংগল সাফ করতেছে...কাটাকাটির টাইম নাই...ডাইরেক্ট আগুন! আমার এক ইন্দোনেশিয়ান দোস্তরে কইছিলাম “কি মিয়া সারা দুনিয়াতো ধুয়া দিয়া ভইরা দিতাছ তুমরা”। আমারে কয় “আরে এগুলানতো বিড়ির ধুয়া, মালয়শিয়ান গো এক মাস বিড়ি খাওয়া বন রাখতে কও ...সব ফকফকা হয়া যাইব”।
আকাশটার মত মুবাইলটাও কালা হয়া আছে।“আজকাল মুবাইলটা লাগে না তেমন কাজে, যখন এলার্ম দেই তখনি শুধু বাজে।“

আইজকা মেলা দিন বাদে ফুন্টা বাজলো। প্রাইভেট নাম্বার। দ্যাশ থিকা মনে লয়। “বাবা কি ঘুম থিকা উঠছ?/ নাস্তা করছো?/ পড়াশুনা কি ঠিক মত করতেছ?/ আর কয় দিন লাগব?” ইটিসি প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত হইয়া ফুন ধরলাম।

--- ক্যামন আছ? (অনেকদিনের পরিচিত কন্ঠ, এই ধরনের কন্ঠকে রিমঝিম কন্ঠ বলা যাইতে পারে)
আলহামদুলিল্লাহ। তেমন ভাল নাই।
--- এর মানে কি? আলহামদুলিল্লাহ বললা ক্যান?
তুমি ফোন করছো ৮ মাস বাদে...তাই আলহামদুলিল্লাহ বলছি। আর মন ভাল নাই তাই ...ভাল নাই বললাম। তোমার কি খবর?
--- ভাল। তোমার ত্যাড়ামি দেখি কমে নাই।আগের মতোই...
এই যে একটা খুচা দিলা সকাল বেলা। মেলা দিন বাদে ফোন করছ... ভাল কিছু বল ...টাকা গুলান নষ্ট কইরো না। খুচা টুচা ইদানিং আমার গায়ে লাগে না।
--- তাই তো দেখতেছি...পাব্লিকের গাইল খাইতেছ... তাও ত্যাড়ামি কমে নাই
তোমার আংকেল ক্যামন আছে?ভাল?
--- এই জন্যই তোমারে ফোন করি না। আমার হাজবেন্ড নিয়া আজে বাজে কথা বলবা না।ফোন রেখে দিব।
অক্কে...আর বলবো না। আমারে খুচা দিলা তাই বদলা নিলাম... এখন কাটাকাটি।
--- তোমার বিদেশ ক্যামন লাগতেছে?
ভাল না। টুটের দ্যাশ।এর চাইতে দ্যাশেই ভাল ছিলাম। ডিজুস ছিল। একটা টুটের চাকরী ছিল। খালি তুমি ছিলা না।
---তুমিইতো বললা... বিয়ে করতে
অইটাতো তোমার লাইফে একটা সিগ্নিফিকেট কন্ট্রিবিউশন রাখার জন্য বলছিলাম...তুমিতো একনলেজ করলা না।তোমার লাইফের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্তটা নিয়া দিলাম... আর তুমি দাওয়াতও দিলা না। আংকেলরে বিয়া কইরা ফেলাইলা চুপচাপ।
--- দ্যাখো মানুষরে সম্মান দিয়া কথা বলা শিখ। পারোতো খালি খুচাখুচি করতে। ভাবছিলাম পাব্লিকের গালাগালি খেয়ে তোমার মন খারাপ...তাই ফোন করছিলাম। এখন দেখি তোমার মন আমার আমার চেয়ে ভাল আছে।ভাল থাক।রাখলাম।
অয়েট অয়েট...আমি গালি খাইলে কি তোমার খারাপ লাগে?

---হুম (আমার জন্য খুবি সিগ্নিফিকেন্ট উত্তর... যদিও খুবি শর্ট উত্তর )

তাইলে তো আরো গালি খাইতে হবে...হেহে
কোন রিপ্লাই নাই...কিছুক্ষন চুপচাপ। বুঝলাম হাওয়া ভাল না। যেকোন মূহূর্তে ফোন রাইখা দিবে।এবং কান্নাকাটি শুরু করবে। প্রসঙ্গ পাল্টাইতে বললাম
আচ্ছা... আমার ফ্লাইটের দিন তুমি ক্যামনে ঠিক টাইম মত ফোন করলা? তোমার জামাই টের পায় নাই? বাথরুমে গিয়া কল দিছিলা নাকি? সিকিউরিটি চেক কইরাই তোমার ফোন পায়া কি যে ভাল লাগতেছিল।
---ঠিক আছে ...তুমি ভাল থাইকো...বাই।

ধুসশালা। ফোন রাইখা দিছে।এখন কি করি? কল ব্যাক কইরা মেয়েটার কান্না থামানোর চেষ্টা করা যাইত। নাহ, যাবে না। প্রাইভেট নাম্বার।
সো কিছুই করার নাই আইজুদ্দিন। অপেক্ষায় থাক... আবার কবে কোন মাস ফোন আসে দ্যাখো। দেবদাসগিরি উদযাপন করতে আজকে সারাদিন বাসায় ঘুমানো যায়।কিন্তু ফোন অফ রাখতে হবে।কারন সুপারভাইজার ফোন করতে পারে।
কিন্তু ও যদি আবার ফোন করে? থাক...ডিপার্টমেন্টেই যাই। পাঠক আমার বন্ধু পিকার লেখা জব্বর একটা কবিতা পড়তে থাকুক...আমি যাই বেলতলায়।



----------------------------------------------
অন্যান্য লেখা, খুচা দিয়া পড়েন
বাংলাদেশ: কিরম আস?
আমার বউ কই?

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:১৫

জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দিয়াছেন?ডেনড্রাইটের কঙ্কালে সবুজ শ্যাওলা

হা ভায়া... জাফর স্যারের কথাই বলিতেছি।আমাদের একমাত্র সেলিব্রিটি শিক্ষক, বেলের গবেষক(যদিও গবেষনা উনি ছাড়িয়াছেন আজ ৮ বৎছর হইল), প্রথম 'কালো'র কলাম লেখক... সাধাসিধা মানুষ... যিনি কিনা টিভি দেখেন না বলিয়া কিশোর কিশোরীর চর্মচোঊক্ষে মহান হইয়াছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ঝান্ডা উচা করিয়াছেন রোজ মাসে একবার। উনাকে লিয়া লেখা ব্লগ, সর্বচ্চো সংখ্যক প্লাস ও মাইনাস উৎপাদন করিয়াছে। ব্লগীয় গোলাগুলিতে অনেকেই হয়েছেন লব্য ড়াজাকার। ভূমিকা না পড়িয়াই মাইনাস বাটন খানা খুজিতেছেন নাকি?খান্ত হোন।

আসেন শুরু করিঃ জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দিয়াছেন?
ক্যান ভায়া... এত লোক থাকতে জাফর স্যার ক্যানো? সহজ। একমাত্র সেলিব্রিটি শিক্ষককে একটু ভাল করিয়া জানার চেষ্টা আরকি...এছাড়া কিছুই না। তবে আমি কিন্তু ঈমান, দেশপ্রেম মাপার নিক্তি নিয়া বসি নাই।জামাতি ভাইদের নিক্তি আছে...ঈমানের বাটখারাও আছে হয়ত... উনাদের কাছে যান জাফর স্যারের দেশপ্রেম ও আস্তিকতা মাপিতে। উনার কোন লেখায় ইসলামকে চিমটি দিয়াছেন... তা খুজার সময়ও আমার নাই।রোজ হাশরেই সকলের ফলাফল প্রকাশিত হইবে... সুত্রাং এবিষয়ে এন্তার গবেষনার প্রয়োজন নাই।

তাহা হইলে বাছা খেপিলে ক্যানো?
জাফর ভক্তকুল ও তার এন্টিকুল। ফেসবুকে দুইখানা গ্রুপ খুলিয়াছে এরা। একটি ভক্তকুল অপরটি এন্টিকুল। এন্টিকূলের গ্রুপের নাম দিয়াছে United Thousands Member to Save Our Future Generation আহা, ভবিষ্যত প্রজন্মকে কি যাতনা হইতে যে বাচাইতেছেন উনারা, তাহা ভবিষ্যত প্রজন্মই বলিতে পারিবে।

আর আছে ভক্তকূল...উনাদের দাবি সবাইকে ঝাপাইয়া পড়িয়া এন্টিকূলের গ্রুপের নামে ফেসবুকের আদালতে জিডি করিয়া আসিতে হইবেক। মানে 'রিপোর্ট দিস গ্রুপ' বাটনে চিপিয়া দিতে হইবেক। বাহ বাহ। প্রশ্ন হইলো "জাফর সাহেবের নামে কেহ কুৎসা রটাইলে আমাকে ক্যানো রিপোর্ট করিতে হইবে? জাফর স্যারকে আসিয়া রিপোর্ট বাটনে চাপ দিয়া জাইতে বলো। ল্যাঠা চুকিয়া যায়"

আমি দুইদলের কাছ হইতেই নেমন্তন পাইয়াছি। বল মাঝ মাঠে, প্রশ্ন হইল নামিব কুন দিক দিয়া!
ভোটভুটির গেল হপ্তার রেজাল্ট দিয়া রাখিঃ
জাফর স্যারের ভক্তকুল গ্রুপে মেম্বার ১৩৯৪ জন
জাফর স্যারের এন্টিকুল গ্রুপে মেম্বার ১১৫৯ জন
বাহ বাহ... জাতির মোট ২৫৫৩ জন পাওয়া গিয়াছে... যারা দেশ ও জাতি উদ্ধার করিয়া ফেলাইতে লেংটি পড়িয়া ইন্টারনেটিয় মল্ল যুদ্ধে লামিয়াছে... আহা... দেশ তরতরাইয়া আগাইয়া চলিতেছে।

আমি এইরুপ আরেকটি মল্লযুদ্ধ দেখিলাম হাইকোর্টে... "স্বাধীনতার ঘোষনা কে দিয়াছেন?" শুনিয়াছি হাইকোর্টে নাকি হাজার হাজার মামলা আটকাইয়া রহিয়াছে... তো উহাদের টপকাইয়া পেঙ্গুইন পেশাজীবিরা ক্যানো ৩০বছর পূর্বে নিষ্পতি হইয়া যাওয়া একখানা কেস লইয়া পড়িয়া আছেন বুঝিলাম না। মুক্তিযুদ্ধ, রাজাকার, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাকার বিষয়াদির কচলাকচলি আমার কাছে এখন ভাড়ামি লাগে। পারলে দেশের জন্য কিছু করেন... চুল্কাইলে আদালতে যান...২/৪ খানা রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা দিয়া জিতিয়া আসেন...ব্রাভো দিব। কিন্তু চেতনার চামড়াটা আর চুষিতে বলিয়েন না। উহা ৩৮ বছর চুষিয়া দেশের এই হাল করিয়াছি।

ফিরিয়া আসি প্রশ্নেঃ জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দিয়াছেন?
গাল গল্প উপন্যাস শিশু সাহিত্য কলাম--- আর কিছু লেংটি পড়া ভক্তকূল দিয়াছেন জাতিকে, যাহারা জাফর স্যারকে কিছু বলিলে 'ড়াজাকার' গালি পাড়িতে পাড়িতে ছুটিয়া আসিবেক... মাইনাসের বন্যায় ভাসাইয়া দিবেক... তাহা না হইলে দেশপ্রেম থাকিল কোথায়?হুম। জাফর স্যার তাহা হইলে মুক্তিযুদ্ধ না করিয়াও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা...দেশপ্রেমের ধারক ও বাহক?! বাহ! বহুত খুব! কোন মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসার অভাবে মরিলে এমন গেল গেল রব উঠিতে দেখিয়াছেন কি? আর কুৎসা, বঞ্চনা..সেতো আকছার।

আলেকজান্ডার ভুল প্রশ্ন করিয়া পটল তুলিয়াছেন। প্রশ্নটা করা জাইত জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দেন নাই?
যাহা দেন নাই তাহা হইল... তিনি যে কাজটা সবচেয়ে ভাল পারিতেন...সেইটা করেন নাই।তিন তিন খানা ইউএস-পেটেন্ট তৈয়ার করিয়া আসিয়া... তিনি দেশে কি গবেষনা করিলেন... দেখিয়া আসি।


৩৫ খানা পাব্লিকেশ্নের মধ্যে ...২৮ খানা জার্নাল পেপার, ৭ খানা কনফারেন্স...স্কোপাসে এমন টাই দেখাইতেছে। খুটাইয়া দেখি। পেপারগুলান মোট সাইটেশন পাইয়াছে ৩১৪ খানা...আজ পর্যন্ত। বাহ! কিন্তু এর মধ্যে সেগুলানে জাফর স্যার প্রথম লেখক সেগুলান(মাত্র ৪ খানায় ফাস্ট অথার উনি নিজে) সাইটেশন পাইয়াছে মোটে ৩ খানা। মন্দ ভাগ্য আর কাহাকে বলে! স্কোপাসের লিঙ্কঃ অথার ডিটেইলস

ঘবেষনা দুনিয়ায় আমাদের একমাত্র পতাকাখানা উড়াইতেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল্যের একটি জার্নাল।BANGLADESH JOURNAL OF BOTANY (ISSN: 0253-5416)। বাংলাদেশের একমাত্র ISI Indexed জার্নাল। আর বিদেশ ফেরত বেশুমার শিক্ষককে পাইবেন ঢাবি, বুয়েট, জাবি ও অন্যান্য সব ইউনিতেই। প্রত্যেকেই বিদেশের উচ্চতর স্যালারীর মোহ ছাড়িয়া দেশে আসিয়া...লোডশেডিঙ্গে মশা মারিতেছেন... কই উনাদের ত্যাগটা কেউ খুজিইয়া পাইতেছে কি? উনাদের দেশপ্রেমটাও দেখিতে পাইতেছেকি? কই... উনাদের নিয়াতো হল্লা হইতে দেখি না। ভোটের বাজারে জাতির চেতনা লইয়া দু কলম লিখিইয়া কিশোর-কিশোরীর চোখের জল-নাকের জল এক করাইতে পারেন না, এইটাই কি তাহাদের দোষ?

অহ হো...আরেক্টা বিষয়... পাব্লিকেশন গুলানের টাইটেল পড়িয়া কোনটাই কম্পুবিজ্ঞানের বিষয় বলিয়া বোধ হইতেছে না... পদার্থ(অপ্টিক্স), ইইই, নিউক্লিয়ার সায়েন্স ইত্যাকার বিষয়াদি বেশি দেখিতে পাইলাম...যাহা হঊক আমি নিজে কম্পুবিজ্ঞানের ছাত্র নই...তাই ঘাটিয়া তেমন কিছু বুঝিয়া উঠিতে পারিলাম না।তবে কেহ যদি একটু তকলিফ করিয়া এই অধমকে বুঝাইতেন...কি করিয়া কম্পুবিজ্ঞানে কোন পাব্লিকেশন না করিয়া উনি একচান্সে কম্পুবিজ্ঞানের প্রফেসর হইয়াছেন... তাহা হইলে আরাম হইত।

ঝাতি তবে কি পাইল? ক্যান এক জন প্রবল আবেগী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত কলামিস্ট। হুম... এইতো লাইনে আসিয়াছেন। চলুন তবে...কিছু কলাম পড়িয়া আসি।

মুক্তিযুদ্ধ প্রযন্মের শেষ সুযোগ (!) ১৪মে প্রেথম আলু

লেখার শুরুতেই তিনি পাখিদের চাল খাওয়ান...চালের মূল্যবৃদ্ধিতে উনি পাখিদের চাল দিতে না পারিয়া যারপর নাই মনকষ্ট পাইয়াছেন...শেষাংশে...সাংসদ তৌহিদ জংএর সংবর্ধনায় স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের রোদে দাড় করাইয়া রাখার বিষয়টি...নিয়া আসিয়াছেন... উনার অন্যান্য লেখাতেও শিশু সাজিবার একটা ব্যর্থ চেষ্টা প্রকট। ব্যর্থ বলিলাম কারন লেখার পেটে রাজনৈতিক গ্যাসের ভুটুস-ভাটাস প্রবল। শিশুরা রাজনীতী করে না। উদাহরন দিয়া লই কিছু লাইন-

"সরকার ইচ্ছে করলে অসাধ্য সাধন করে ফেলতে পারে" (আওয়ামী সরকার)
"বিডিয়ার ঘটনা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে, যখন তদন্ত রিপোর্ট বের হবে তখন হয়তো অনেক কিছু নিয়ে আমাদের বিভ্রান্তি দূর হয়ে যাবে (বটেক!)।তবে যে বিউষয়টি নিয়ে কারো কোন বিভ্রান্তি নাই নেই সেটি হচ্ছে সেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের সময়টুকুতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অসাধারন রাষ্ট্রনায়কসুলভ ভুমিকা।সেনাকুঞ্জে সামরিক অফিসারদের সঙ্গে তাঁর বাগবিতন্ডার সেই সিডিটি কারা কীভাবে বের করেছে সেটা একটা রহস্য। যারা সেটা শুনেছে তাদের মনে অনেক নতুন প্রশ্নের জন্ম হয়েছে কিন্তু একি সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন করে আস্থা ফিরে পেয়েছে।"

-------তাই নাকি? তাহা হইলে এতগুলান লুক মরিয়া গেল... এতগুলান গ্রেনেড খোয়া গেল...সবই সাফোইল্ল্য(!)... সরকারী তদন্ত রিপোর্ট খানাও সাফল্য বটে।ইউটিউব সহ এক হালি ওয়েব সাইট বন্ধ করিয়া দেয়াও নেত্রীত্বের প্রতি প্রগাড় আস্থার বহি:প্রকাশ ছাড়া কিছুই নয়! সাধারন ক্ষমা ঘোষনার পর ডজন খানেক জোয়ানকে রিমান্ডে আত্নহত্যা করানো এবং তা দেখিয়া রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্ক্রিয়তা, প্রশ্নতোলা সেনা কর্মকর্তাদের ফোর্সড রিজাইন দেয়ানো...প্রগাড় আস্থার বহি:প্রকাশ নয় তো আর কি? স্যার ইহা কি বলিলেন... ইহাই কি ইতিহাস বিকৃতি নয়?

"ছাত্রলীগ করার নামে কিছু অবিবেচক ছেলেদের সেই সুযোগ নষ্ট করতে দেয়া যাবে না।"

----------অবিবেচক(!) ছেলে...বাহ চমতকার একটি নিরীহ বিশেষন খুজিয়া লইয়াছেন উনি... মহান বিজ্ঞানীই বটে।ছাত্রলীগকে"দুষ্টুছেলের দল" বলিলেও অবাক হইতাম না।

"আওয়ামী লীগের নেতারা জানেন কি না জানি না, গত নির্বাচনের বিজয়টি এই দেশের সব প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তবুদ্ধির মানুষেষেরা তাদের নিজেদের বিজয় হিসেবে ধরে নিয়েছে৷"
---------আর দশটা আওয়ামীপন্থী কলামনিষ্টের মতো আমাদের শ্রদ্ধেয় জাফর স্যারো আওয়ামীলীগের বিজয়কে নানা সুন্দর বিষেশনে জড়াইয়া মহোত্তম করিতে চাইতেছেন। আমার প্রশ্ন... যেহেতু ব্রুট মেজরিটি আওয়ামী সরকার পাইয়াছে তার মানে দেশের অধিকাংশ লোক... প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তবুদ্ধির মানুষ। তাহা হইলে আগের ইলেকশনে যারা বিএনপি জামাত জোটকে ভোট দিয়াছিল উনারা কি সবাই সাম্প্রদায়িক, গোড়া লোকজন ছিলেন। এরমানে সকল সাম্প্রদায়িক, গোড়া লোকজন এখন প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তবুদ্ধির মানুষ হইয়া গিয়াছেন? জ্বিনা জনাব, লোকের হাপাইয়া উঠিয়া ভোট দিয়াছে... যেমন আওয়ামী শাসনে হাপাইয়া উঠিয়া বিএনপিকে ভোট দিয়াছিল। ইহার মাঝে প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তবুদ্ধির যোচ্চুরি অনাবশ্যক... নিখাদ ভোটের হিসাব। হিসাব না বুঝিলে ৫ বছর অপেক্ষা করুন...বুঝিয়া যাইবেন।

মোটে এক খানা কলামের কথা বলিলেন দাদা... অন্যগুলান? হুম। ভাবাইলে বড়। অসাধারন কিছু কলামও আছে।আশা করি উনার ভক্তকূল সেগুলান সংগ্রহ করিয়া...শেয়ার করিবেক। তবে পেপারে আমার পড়া সেরা কলামটি হুমায়ুন আহমেদের লিখা। সিলেট নিয়া লিখিয়াছিলেন। অসাধারন অসাধারন অসাধারন। আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়া আমার পড়া সেরা লেখাটিও হুমায়ুন আহমেদেরই লেখা “অনীল বাগচির একদিন”।এই সুচিক্কন উপন্যাসটি নিয়া একখানা শর্ট ফিলিম বানাইবার স্বপ্ন আমার বহুদিনের।লেখককে তার ব্যক্তিত্ব দিয়া নয় বরং বক্তব্য দিয়া বিচার করি—সেই কামনা রইল।
-----------------------------------------
অন্যান্য লেখা, খুচা দিয়া পড়েন
ব্যানানা বাংলাদেশ-৪ (কি চমেতকার দেখা গেল!)
ব্যানানা বাংলাদেশ-৩ (গডফাদারের স্টিমুলাস মূলা)
ব্যানানা বাংলাদেশ-২ (প্রথম আলোর ইহুদীডিম্ব!)
ব্যানানা বাংলাদেশ-১ (ইকোনমিক হিটম্যান)
কন্সপিরেসি থিওরী-পারট ৩ (সিউডো-জ়ঙ্গি রাষ্ট্রের ছায়া)
----------------------------------------------
বাংলাদেশ: কিরম আস?
আমার বউ কই?

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:০৩

তেল-গ্যাস বুঝো না, স্বাধীনতা বুঝো?

হ। আমরা আর কিছু বুঝি না বুঝি, স্বাধীনতা বুঝি। অইটা নিয়া কুন কথা হইব না, এক বাক্যে স্যালুট দিতে হইবো জনক, ঘোষক, আহবায়কদের। সংসদে সব ভাষনের আগে ৫ মিনিট মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক ও আহবায়কদের সালাম জানাইয়া বিবিধ-বিশেষন বর্ষন... তাআআরপরে দ্যাশের অন্যান্য বাতচিত। আর যুদ্ধাপরাধীতো ভোটের আগের খেলা, "ড়াজাকার" ডাক ছাড়তে ছাড়তে মুখের ছ্যাপ ছিটায়া বেড়াই মিছিলে স্লোগানে। ক্ষমতায় গিয়া বলি "মাসুম সরকার" "ফরেন প্রেসার" "এত কাজ!"... সময় হয় না... ধরি ধরি কইরাও ধরা হয় না। কেউ কেউ আবার যুদ্ধাপরাধীদের ঘাড়ে চইড়া ক্ষমতায় আসি—“নির্বাচনী কৌশল” বললেই দায় শেষ।

কিন্তু শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা যেই দেশটা স্বাধীন কইরা রাইখা গেল... সেই দেশের স্বার্থ আপনি কতখানি দেখেন? কতটুকু বুঝেন বা বুঝতে চান?

বুঝতে চান না। কারন আপনার বিবেচনার দেয়ালে মোটা দাগ টানা আছে। তেল-গ্যাস ইস্যু? কোন কিছু না জাইনাই আপনি বইলা দিবেন "ওইটা বাম দলগুলার ইস্যু, ওরা সারা বছর ওইটা নিয়া ফালাফালি করতেই থাকব, সো কান দিয়া লাভ নাই"...টিপাইমুখ বাধ? ওইটা জামাতিগো ইস্যু..."ড়াজাকারের দল নতুন ভড়ং ধরছে"। এশিয়ান হাইওয়ে? "সাবমেরিন ক্যাবলের লাইন না নিয়া কি ভূল্টাই না করছিল বিএনপি, এইবার আর সেই ভূল করা যাবে না।এইটা সুবর্ণ সুযোগ"। আপনি এক্টুও চিন্তা করলেন না, সবগুলাই আসলে আপনার ইস্যু। কারন সব গুলাই বাংলাদেশের অস্তিত্বের ইস্যু।এই ইস্যুতেই নির্ধারিত হইতে যাইতেছেঃ আজ থেকে ১০ বছর পর দেশের কি অবস্থা হবে।

আজকে শুধু তেল-গ্যাস নিয়া একটু আলোচনা করবঃ

প্রোডাকশন শেয়ারিং কনট্রাক্ট(পিএসসি)-২০০৮ । এই চুক্তি হইল তেল গ্যাসের ভাগ বাটোয়ারার চুক্তি। মানে বাংলাদেশ কি পাবে, তেল গ্যাস উত্তোলনকারী কম্পানী কি পাবে সেইটা। ডিটেইলসে না গিয়া চুক্তির সামারী হইল, বাংলাদেশ বড়জোর (!) ২০ভাগ তেল গ্যাস পাবে। বাকিটা? বিদেশী কম্পানীরা।বাংলাদেশ কোন ভাবেই ২০% এর বেশী পাবে না,চুক্তিতেই তা পরিস্কার লেখা আছে(অনুচ্ছেদ ১৫.৫.৪, পেজ ৪০)। নিচের ছবিতে দেখেন(বড় ও স্পষ্ট দেখার জন্য পোষ্টের নিচের ছোট্ট ফডু্টাতে খুচান)।

তাইলে বাকি ৮০% থেকে আমাদের মুটামুটি আন্তর্জাতিক দরেই কিনা লাগবে। যাহোক, নিজের গ্যাস নিজে কিনা খাব। সেইটার পসিবিলিটিও নাই জনাব। কারন গ্যাস আনবেন ক্যাম্নে? পাইপে? পাইপ লাইন নির্মানের কাজটাও বিদেশি কম্পানির অধিকারে দেয়া হইছে।আবার পাইপ বসানর খরচটা আমাদের প্রাপ্য ২০% গ্যাস থিকা গ্যাসের দামে নিয়া রাখবে। কি বুঝলেন?(অনুচ্ছেদ ১৬)

আরো আছে, জ্বালানির বা পেট্রোলিয়ামের সংজ্ঞা মতে কঠিন-তরল-গ্যাস তিন কিসিমের বুঝাইলেও... বাটোয়ারার ক্ষেত্রে(অনুচ্ছেদ ১৫) শুধু গ্যাসের ভাগ বাটোয়ারার কথা বলা আছে।ফাঁকটা ধরতে পারছেন? তার মানে গ্যাসবাদে অন্যান্য পেট্রোলিয়াম (অশোধিত খনিজ তেল, অ্যাসফ্যাল্ট, ওজোকারাইট, বিটুমিন) পুরাটাই হাপিস করবে ইজারা প্রাপ্ত বিদেশী কম্পানী?!

বাংলাদেশের গ্যাস ব্যবহারের ক্ষমতা বিবেচনায় রাইখা গ্যাস উত্তোলনের সীমা নির্দিষ্ট করা হয় নাই। এরমানে আমাদের প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশী মাত্রায় গ্যাস তুল্বে... জানা কথা... কারন ফরেন কম্পানী আসছে ব্যবসা করতে তেনারা “জাতির জনকের স্বপ্ন” বা “স্বাধীন তার ঘোষকের স্বপ্ন” পুরা করতে আসে নাই, ব্রেক ইভেন পয়েন্ট মিট করতে আসছে। ফলাফল, দ্রুত অতিরিক্ত গ্যাস তোলার জন্য পুরা গ্যাস উত্তোলনের আগেই প্রেসার কমে যাবে, মাটির কিছু গ্যাস মাটিতেই থাইকা যাবে।আর আমি আপনি লোডশেডিঙ্গে ঘামতে থাকব, বিদ্যুতকেন্দ্র ঘেরাও দিব।

আর পেট্রোবাংলা, বাপেক্স কবে কোনকালে সক্ষম হইবো। স্থলভাগের গ্যাস তুলায় তারা মুটামুটি সক্ষম। যদিও সবচুক্তি বিদেশী কম্পানীরাই করে। আর তাদের হয়ে ঠিকায় নানান কাজ কইরা দেয় বাপেক্স।লাভের ধান, টিয়ায় খায়। কবে আমাদের পেট্রোবাংলা মালয়শিয়ার পেট্রোনাস কিংবা নরওয়ের StatoilHydro এর মত হইতে পারব? আমাদের কোন প্লান আছে কি, নাকি আমাদের জাতির পিতা বা স্বাধীনতার ঘোষকের কোন প্লান ছিল? নাই। উনাদের আওলাদদেরও কোন প্লান নাই। এদের প্লান ৫ বছরের। ক্ষমতায় থাকলে প্লানঃ “যা পার লুইটা খাও।“ আর বিরোধীদলে থাকলে প্লানঃ “প্রথম ৩/৪ বছর প্রেস ব্রিফিং দিয়া যাও। শেষ বছরে আইসা হরতাল দিয়া মাঠ গরম কর।“ এরপর ইলেকশন! ইলেকশন! ইলেকশন! ফলাফল বরাবরের মতোই জনগন পরাজিত। বাংলাদেশ পরাজিত।

কথায় না, কাজে দেখতে চাই..স্বাধীনতার চেতনার স্বরূপ। যদি দেশের স্বার্থ জ্বলাঞ্জলী দিয়ে তেল-গ্যাস, হাইওয়ে, বন্দর সব ইজারা দেয়ার পরেও যদি তা "স্বাধীনতার স্বপক্ষশক্তির"(!?!) দম্ভ হয়। তাইলে আমার সেই স্বাধীনতার চেতনার দরকার নাই।



ছবিতে খিয়াল কইরা ভারত-মিয়ানমারের দাবিটা দেখেন... এক্কেবারে চ্যাগায়া খাড়ায়া দুইপাশ থিকা আমাদের সমুদ্রসীমা চিপ্পা দিতাছে। আর আমরা কি করতেছি? এখন পর্যন্ত দাবিটাই জানাই নাই। নীল লাইন বরাবর আমাদের সমুদ্রসীমা হবার কথা। হায় ...দাবিই নাই, কোথায় সমুদ্রসীমা, কোথায় তেল-গ্যাস।

সরকার ফেলার আন্দোলনতো অনেক করলেন... তেনারা গদি পাইছে, আমি-আপনি পাইছি আসাদের লাল শার্ট। এইবার সরকারের চরিত্র নির্ধারনের জন্য একটা ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলন কইরা দেখেন। রাস্তায় নামতে বলতেছি না। শুধু নিজে জানেন আর অন্যকে জানান... যে যার জায়গা থেকে বলেনঃ ছিঃ

তথ্যসূত্রঃ
ডাউনলোড লিঙ্ক মডেল পিএসসি ২০০৮
পিএসসি-২০০৮: সহজ পাঠ:মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী
গ্যাস ব্লক ইজারা: এবার সাগর লুটের লাগলো ধুম: দিনমজুর
গ্যাস উৎপাদন কে করবে? দিনমজুর
সাগর বক্ষে গ্যাস ব্লক ইজারার উদ্দেশ্য গ্যাস সংকট মোকাবেল না রফতানি? ভিন্ন চিন্তা

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): PSC 2008তেলগ্যাস ;
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৩২

ফেইসবুকের বুকে বন্ধু ও বন্ধুতা


প্রফাইল পিকচার নিয়া একটা কাহিনী আছে। একদিন আমার মন মেজাজ খুব বিলা। এক ফ্রেন্ডরে ফোন দিলাম। কইলাম যে মন মিজাজ ভাল না। ওয়েদারটাও রেইনি। কয় "তোরে তো আমি হাসতে দেখতেছি।" আমি কইলাম "কৈ?"। কয় "ফেসবুকে তোরে ত সারা দিন হাসতে দেখতাছি। আবার একটা বুইড়া আঙ্গুল খাড়া কইরা চ্যাট দেখাইতাছ। এখন আবার ফোন কইরা মজা লস? জানস বেটা কত ঝামেলার মইদ্দে আছি। অফিস থিকা বাসায় আসতে আইজকা আড়াই ঘন্টা লাগছে..."

ফেইসবুক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠতেছে, এরম দাবিকে আমি একটা সম্পূরক ভাবনায় ফেলাইতে চাই। এইটা সত্য যে, পিসিতে বসলেই আমরা ফেইসবুকে লগইন করি। কিন্তু কেন? বন্ধুরাকে কোথায় কি করল সেইটা জানতে। ফেইসবুক হইল এমন একটা পত্রিকা যেখানে আমার বন্ধুরা লেখে, তাদের ছবি ছাপায়, খরব থাকে। এই বন্ধুরাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ন। ফেইসবুক না। ফেইসবুক উসিলা মাত্র।

বন্ধুত্বের রিকোয়েস্ট আজকাল অনেক পাই। (ভাব মারি নাই। রিকোয়েস্ট ছেলেদের কাছ থিকাই বেশী আসে।শেষ কবে কোন মেয়ের কাছ থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাইছিলাম খেয়াল নাই ;))। তরতর করে বন্ধুসংখ্যাও ৫০০ ছুই ছুই হইয়া গেল ক্যামনে জানি। মাত্র ৮/৯ মাসেই ৫০০! রোজ আরো কত জনায় বাড়াইতেছে বন্ধুত্বের হাত। কে এই নতুন বন্ধু তা চেক করতে, এই রিকোয়েস্ট গুলার জবাবে আমি বিভিন্ন কায়দায় মেসেজ দেই। কিছু স্যাম্পল দিলাম

"ভাইযানরে ঠিক চিনতে পারলাম না। আমার হরলিক্স ফুরায়া গেছে গতমাসে। তাই মেমরী লুজ করতেছি মনে হয়। নিজ পরিচয় দিলে আরাম হইত, ব্রেইনে প্রেসার আসত না"

"আপ্নারে চিন্তার্তাছি না। খাড়ান চশমাটা নিয়া আসি"

"ভ্রাতা তুমাকে কুথায় যেন দেখিয়াছি বলিয়া মনে হইতেছে, কিন্তু সঠিক ইয়াদ আসিতেছে না। নিজ পরিচয় দিয়া ফেলাও"

"প্রফাইলে যে ছবিখানা লটকাইয়াছেন, উহা কোন মনুষ্য প্রাণীর নহে। আপনি কি ভিন গ্রহ হইতে? তাহা হইলে দুঃক্ষিত, আমার আগ্রহ কেবল দুনিয়ার দুপায়া মানুষে" (ভদ্রলোকের প্রফাইলে এলিয়ানে ছবি লাগানো ছিল)

"উটের পিঠের ঐ সাওয়ারী যদি আপনি হন, নিশ্চিত আপনি আমার পরিচিত নন। উট থেকে নেমে ঝটপট নিজ পরিচয় দিয়া বাধিত করুন। খাজ্জুর মোবারক "(ভদ্রলোকের প্রফাইলে উটের পিঠে বসা ছবি লাগানো ছিল)

তবে আজকাল এইসব ভার্চুয়াল বন্ধু বন্ধু খেলা ভাল্লাগে না। সত্যিকারের রক্ত মাংসের বন্ধু চাই। যার সাথে লেকে বইসা বাদাম খাওয়া যায়। যার কাছে বসের নামে নালিশ করা যায়। সেইরম বন্ধু।


অন্যান্য লেখাঃ
তেল-গ্যাস বুঝো না, স্বাধীনতা বুঝো?
জনাব, আপনার মানসিক ভারসাম্য কোন দিকে হালিয়া আছে?
তাপস, বোমা ও প্রথম আলো- ঘুরে ফিরে দেখা

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:২৯

পনরই আগস্টের খুনের বিচারঃ জলপাই ট্যাঙ্কের পিঠে গণতন্ত্র


পনরই আগষ্ট নিয়ে এত বেশী লেখালেখি আর চাপাবাজি প্রতি বছর হয় যে, এই লাইনে কিছু লিখতে ইচ্ছা করে না।

কোন এক জ্ঞানী রাজনৈতিক ইতিহাস বর্ননার গুরুত্ব বুঝিয়ে বলেছিলেন-
"If you can control present, you can control the past. If you can control past, you can control future."

আমার কাছে ১৯ নভেম্বরের রায়ের চেয়ে এর মিডিয়া ইভেন্ট হিসাবে ধামাকাটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। রায়ে অপ্রত্যাশিত কিছুই ছিল না(রক্ষে!)। খুনির ফাসির আদেশ বহাল রাখা হয়েছে। কিন্তু তাকে ঘিরে যে মিডিয়ার অতিআগ্রহ এবং তা মানুষের মানুষের মাঝে সংক্রমিত করার ব্যর্থ চেষ্টা দেখা গেল, তা হাস্যকর। মিডিয়াতে এই "মাহেন্দ্রক্ষনকে" স্মরনীয় জন্য কাউন্ড ডাউন সহকারে যে বিপুল বিশ্লেষনের ছড়াছড়ি দেখলাম সপ্তাহ জুড়ে, তাতে একটা সহজ প্রশ্ন চাপা পড়ে গেল, সেটা হল ভবিষ্যত ভাবনা। সবাই অতীত নিয়েই ভেবেছে...নানান রঙ্গের ব্যাখ্যা দিয়েছে, দিচ্ছে...কিন্তু ভবিষ্যত নিয়ে কেউ ভাবছে না। ভবিষ্যত ভাবনার আলাপে পরে আসছি। আগে কে কি বললো তা খেয়ালে রাখি।

১। পনরই আগস্টের ঘটনা একটি সামরিক অভ্যুত্থান ছিলো।- জনৈক বিএনপিপন্থী সাংবাদিক
--আমার কথা, সামরিক অভ্যুথানে মানুষ মারা জায়েজ আছে কি, জনাব?
২। এইটা ছিল আওয়ামী দুঃশাসন, খুন, লুটতরাজের ফল।
-- খুনের বদলা পরিবারসহ খুন? তাহইলেতো জনাব জিয়ার সপরিবারে খুনটা পেন্ডিং রইছে। নাকি? এরশাদের আবার অনেক পরিবার, উনারটাও পেন্ডিং?
৩। বাকশালীয় শাসন ও রক্ষীবাহিনীকে ইন্ডিমিনিটি দেয়ায় সামরিক বাহিনীর আক্রোশের ফসল-- হুম। এটার যুক্তিযুক্ততা আছে।

১৯৭৪ এর সংবিধান থেকে "জাতীয় রক্ষী বাহিনী এক্ট (সংশোধীত)" Article 3: No suit, prosecution, or other legal proceedings shall be against any member of the Bahini for anything which is in good faith done or intended to be done in pursuance of this order or rule made thereunder.
সহজ তরজমায়ঃ রক্ষীবাহিনীর কারো কোন বিচার হবে না যদি কিনা সেইটা "গুড ফেইথ"নিয়ে করা হয়। প্রশ্ন হলোঃ এই গুড ফেইথ জিনিসটা কিসে? মুজীববাদে?
এরকম ইন্ডিমিনিটি প্রাপ্ত একটি নতুন সশস্ত্র বাহিনীর বেশুমার প্রভাব-প্রতিপত্তি-প্রতাপ, নিঃসন্দেহে তৎকালীন সেনাবাহিনীকে অস্তিত্বের সংকটে ফেলেছিল।

৪। রায়ের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: মওদুদ

৫। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জাতি কালিমাময় এক কলঙ্ক থেকে মুক্তি পেল।

-- বিভিন্ন সরকারের আমলে এই মামলার গতি প্রকৃতি বুঝিয়ে দেয় এই দেশের বিচার বিভাগ কুকুরে টানা স্লেজের মত। এরা চাবুকের কথা শুনে। খালেদা এরশাদের আমলে মামলা কাজ পুরোপুরি বন্ধ, আর আওয়ামীলীগ আমলে শোডাউন সহকারে রায়।হাহ!স্বাধীন বিচার বিভাগ বটে!

৬। রায়টি হোক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দিক নির্দেশনা--গবেষক ও কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ
-- হায় হায় স্যার। ৩৪ বছর পরে রায় দেয়াটাকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দিক নির্দেশনা ধরলে, কোন মামলাই ৩০-৪০ বছরের আগে শেষ হবে না।
৭। খুনিচক্রকে রক্ষা করেছে জিয়া এরশাদ খালেদা সরকার-- মতিউর রহমান
-- জ্বী। করেছে। যেমন আপনারা রক্ষা করেছিলেন জেনারেল মঈনকে।
৮। বাঙালি জাতির কাছে আজকের দিনটি ঐতিহাসিক দিন।তাই ওই রায় সবার মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। আমরা ওই ঐতিহাসিক রায়কে স্বাগত জানাই।--এরশাদ
-- তাহলে খুনিদের দেশে ফিরিয়ে ফ্রিডম পার্টি বানাতে দিয়েছিলেন ক্যানো আপনি?ক্ষমতার মাখন পেয়ে ভোল পালটে ফেললেন?আর কত?

"ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না বলেই, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে"
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে শেখ মুজিবের বংশধরদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা আইন হল। হাস্যকর। যতগুলো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের খুন হয়েছেন...ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, বেনজির, ইসরায়েলের Yitzhak Rabin, আমেরিকার জন এফ কেনেডি... এদের কারো কি নিরাপত্তা ঘাটতি ছিল? না। বরং রাষ্ট্রের সর্বচ্চো নিরাপত্তার মহড়াতেই এদের জীবণ দিতে হয়েছে।

মূল জায়গায় আমাদের কি কোন অগ্রগতি হলো? ১৫ আগষ্টের মত এক রাতে গনতন্ত্র হত্যা করে ক্ষমতা দখলের মানসিকতা আমরা ১/১১ এর পরে আবারো দেখলাম। এবারে একটু ভিন্ন মোড়কে। প্রথমে বলা হল, সামরিকবাহিনী সমর্থিত সরকার (যদিও চাকুরীর নিয়ম বলে সকল সরকারকে সমর্থন দিতে সামরিকবাহিনী বাধ্য... তাহলে এরম হাস্যকর নামকরনের মানে কি দাড়াইল?),এরপর বছর গড়াতেই নাম পালটে সবাই এটাকে জেনারেল মঈনের সরকার বলা শুরু করল। আবার জিয়া-এরশাদের মত গনতন্ত্রের হত্যাকারী খুনি সেনা কর্মকর্তাদের তোয়াজ করতে দেখলাম মুজিবকন্যাকেও। খেয়াল রাখতে হবে, এদের চরিত্র ভিন্ন, কিন্তু উদ্দেশ্য এক। ক্ষমতা। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা-রেহানা-জয়ের একই সাথে পাওয়ার এক্সিসে আসা ও সেইটার হরদম অপব্যবহার করা এইটাই প্রমান করে,ইতিহাস থেকে এরা কিছুই শেখে নি। দূর থেকে কলকাঠি নাড়ার চেয়ে আসন গেড়ে বসাতেই উনাদের আগ্রহ বেশী। বিএনপির কাউন্সিলে তারেক জিয়ার প্রমোশনও এইটাই প্রমান করে, কোথাও কোন অগ্রগতি হয় নাই। ব্যক্তিকেন্দ্রিক (মতাদর্শ বা ইস্যুভিত্তিক নয়) রাজনীতি বা ক্ষমতার তীব্র কেন্দ্রমুখীতা যদ্দিন থাকবে... তদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট থেকে জলপাই ট্যাংক বের হবার ভয় থাকবেই।

তাই আমার অনুরোধঃ ১। সেনাবাহিনীকে নিজের মত চলতে দিন। সামরিকবাহিনীতে রাজনৈতিক প্রমোশন দিয়ে দলবাজির সুফল আজ পর্যন্ত কেউ পায়নি। কাউকে বিশেষ সুবিধা দেয়া মানে...কাউকে বঞ্চিত করা। বঞ্চিতরা বিপথগামী হতে সময় লাগে না।

২। আসামের স্বাধীনতাকামী উলফা চেয়ারম্যানকে পাকড়াও করে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার আগে জানা উচিত... এরা ৩০ বছরের বেশী সময় ধরে যুদ্ধে করছে। হাজারো উলফা সদ্যস্য ও তাদের পরিবার খুন হয়েছে এপর্যন্ত। ৪/৫ হাজার সশস্ত্র যোদ্ধার দলটির নতুন শত্রুর খাতায় নাম তোলার কোন দরকার ছিল না। এদের দেশে ধুকতে না দিয়ে হাত পরিস্কার রাখলেই ভাল হত।

আর কোন ১৫ই আগস্ট নয়, এখন আমাদের দরকার অনেকগুলো ১৬ই ডিসেম্বর। ছবিঃ নাবিল
------------------------------------------------------------
অন্যান্য লেখাঃ
তেল-গ্যাস বুঝো না, স্বাধীনতা বুঝো?
জনাব, আপনার মানসিক ভারসাম্য কোন দিকে হালিয়া আছে?
ব্যানানা বাংলাদেশ-৪ (কি চমেতকার দেখা গেল!)
কন্সপিরেসি থিওরী-পারট ৩ (সিউডো-জঙ্গি রাষ্ট্রের ছায়া)

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): পনরই আগস্টরাজনীতিবাংলাদেশ ;
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৩৬

কপিরাইট, সাইটেশন ও জাফর ইকবাল সমাচার


দীর্ঘদিন থিকাই আমি বইলা আসছি "গরীবের জন্য কপিরাইট না...ঐটা বড়লোকের খেলা" এবং "আমার লেখা যে কেউ যেকোন অংশ যে কোনখানে প্রচার ও প্রকাশ করতে পারবে আমার সম্মতি ছাড়াই"। আজকে ক্যান যানি নিজেকে গরীব মনে হইতেছে না... বড়লোক মনে হইতেছে। হঠাত আমার এমন ঠাঁট বাড়ার কারন... একটি বিশেষগোষ্ঠী ও মতালম্বীর লোকজন আমার লেখাকে তাদের রাজনৈতিক প্রচারণার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতেছে বইলা মালুম হয়। একাধিক বন্ধু মারফত জানতে পারলাম ফেইসবুকে কে বা কারা আমার লিখা নোট "জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দিয়াছেন?ডেনড্রাইটের কঙ্কালে সবুজ শ্যাওলা" (পোস্টটি ৮৮ জনের ভাল লেগেছে, ৫৩ জনের ভাল লাগেনি ) হুবহু তুইলা দিয়া একটা গ্রুপ খুলছে ফেইসবুকে। নাম দিছে "Jafar Iqbal wants Islamic culture to be out of BD"

এইটারে ফেইসবুক সিকিউরিটির পরিভাষায় Intellectual property infringement বলা হয়ে থাকে। আমি ঐ গ্রুপের নামে ফেইসবুকের আদালতে DMCA (United States Digital Millennium Copyright Act) অনুযায়ী Notice of Copyright Infringement পাঠায়ে দিছি। আজ থেকে আমার লেখার কোন অংশ বা পুরাটাই কোথাও কপিপেষ্ট করলে অবশ্যই আমাকে সাইটেশন দিতে হবে... ব্লগ লিঙ্ক বা নাম দিতে হবে। জানায়া দিলাম কিন্তু।

মিজাজ চড়ার কারন শুধু সাইটেশন না দেয়া না। আরো কারন আছে।

এক। জাফর এন্টিকূলের তৈরী "Jafar Iqbal wants Islamic culture to be out of BD" গ্রুপটার ডিস্কাশন বোর্ডে জনাব Motiur Rahman Nizami নামধারী একলোক বলেছেন "JAFOR IQBAL amader birudde sob somoy kaj kore, Amader Rajakar bole gali dey. Jafor Iqbal-er fasi cai"..................গ্রররররর গ্ররররর

দুই। আমার লিখার শেষে পুরাতন লিখার লিঙ্ক থাকে। এই গ্রুপের তৈয়ারকারক এতই মাথা মোটা যে ...পোষ্টের শেষে আমার পুরাতন নোটের লিস্টটাও কপিপেষ্ট করেছেন। যার শেষে ছিল "আমার বউ কই?" পোষ্টটা।কিসের মইদ্দে কি?

তিন। এই বা*ছা* গ্রুপকে রিপোর্ট করার জন্য আবারে ভক্তকূল প্রচারনায় ঝাপায়া পড়ছে। এই গ্রুপে গ্রুপে নেংটি যুদ্ধ আমার ব্যাপক এলার্জি লাগে।

চার। গ্রুপের নামের সাথে আমার লেখার কোন সংশ্লিষ্টতা নাই। জাফর ইকবাল ইস্লামিক কালচারের পক্ষে না বিপক্ষে এইসব নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নাই তা আমার লেখায় সুস্পষ্টভাবেই ছিল---- "তবে আমি কিন্তু ঈমান, দেশপ্রেম মাপার নিক্তি নিয়া বসি নাই।জামাতি ভাইদের নিক্তি আছে...ঈমানের বাটখারাও আছে হয়ত... উনাদের কাছে যান জাফর স্যারের দেশপ্রেম ও আস্তিকতা মাপিতে।উনার কোন লেখায় ইসলামকে চিমটি দিয়াছেন... তা খুজার সময়ও আমার নাই। রোজ হাশরেই সকলের ফলাফল প্রকাশিত হইবে... সুত্রাং এবিষয়ে এন্তার গবেষনার প্রয়োজন নাই।"

ব্যাপারটা আরো পরিস্কার করতে বলি ---গ্রুপের এডমিন
* Mohammad Waliuddin Tanvir, Jannatul Ferdaus Nijhum
,Arik Hossain, * Hussain Shahria , Nazmus Sakib Nirjhor (University of Dhaka) (creator) এরা কেউ আমার ভাই ব্রাদার না। এই গ্রুপের সাথে আমার কোন যোগাযোগ নাই।

এর সাথে যোগ হইছে, জাফর স্যারের নাচাপিচার ভিডিও। উনি 'নো এন্টি' নামক হিন্দী গানের তালে উনার কিছু ছাত্রীকে নিয়ে নাচার ভিডিও কারা জানি ইউটিউবে ছাইড়া দিছে। এদের একজন shamim992 (youtube ID)....Country: Malaysia. কিছু জাফরমূর্ছা (জাফর স্যার বলিতে যে মুর্ছা যায় তাহাকে জাফরমূর্ছা বলে) ভাই আমাকেই shamim992 বলে সন্দেহ করতেছে। আমি জাফরমূর্ছা ও জাফরকুচ্ছা, সবাইকেই জানাইতে চাই, কে কোথায় কাকে নিয়া নাচল... গলায় ধরে নাচল নাকি কোমর ধরে নাচল... এইসব কাসুন্দি ঘাটায় আমার কোন আগ্রহ নাই। আমি ঘবেষক মানুষ, লেখার জবাব লেখা দিয়ে দেই। গসিপ রাইটিঙ্গে আমার আগ্রহ নাই। তারচেয়ে বড় কথা SUST এর ছাত্রীহলে আমার "নো এন্ট্রি"। আমার কোন ভইন, কিংবা ভাইয়ের ভইন SUST তে পড়ে না। তাছাড়া অপরের একটি ঘরোয়া টাইপ ভিডিও বিনা-অনুমতিতে ফেইসবুকে শেয়ার করার পক্ষপাতী আমি না। সঞ্জীব বলছিল "বাঙ্গালির প্রাইভাসি শুধু বাথরুমে"। কঠিন খাটি কথা। আমেরিকা ফেরত শিক্ষক নাচনাচি করলেও দেখি লোকে গেলরে গেলরে রব তোলে। হাহ!এদিকে নিজের পোলা যে ইয়াবাবা খায়...সেই হুশ নাই।
------------------------------------------------------------
অন্যান্য লেখাঃ
পনরই আগস্টের খুনের বিচারঃ জলপাই ট্যাঙ্কের পিঠে গণতন্ত্র

তেল-গ্যাস বুঝো না, স্বাধীনতা বুঝো?

জনাব, আপনার মানসিক ভারসাম্য কোন দিকে হালিয়া আছে?

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:০৫

মনের বাঘ যখন ঘরে- আমাদের "ভারতীয় কৃতজ্ঞতাবোধ সিন্ড্রম" ও চতুষ্পদীয় রচনাসমগ্র

ভারত- বাংলদেশ দ্বিপাক্ষীক বৈঠক, তার ফলাফল আর যৌধ বিবৃতির আলোচনায় সুসপষ্ট বিপরীত দুই পক্ষ দেখা গেল। পেপার-পত্রিকা, টক শো, ব্লগ সবখানে। সমস্যাটা হইল ভারত ইস্যুতে দুই পক্ষ আগেই হয়া ছিল। একদল কোন ভাবেই ভারতের সাথে কোন কিসিমের চুক্তি করতে রাজি না। বরং দেশ উলু ধ্বনিতে ভইরা যাবে,বিক্রি হইয়া যাবে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বরবাদ হইয়া যাবে, এইরকম একটা ধারনা প্রচারে সচেষ্ট। আরে মিয়া, তোমার তিন দিকে ভারত। দরজা বন্ধ কইরা কয় দিন থাকবা? ম্যাপটা দেখো। ডানে বামে ব্যবসা বাণিজ্যের বাজারটা দেখ। আর হিন্দু ধর্মপ্রচারে ভারত সরকারের কোন আগ্রহ নাই। যার সাথে দেন দরবারে বসতেছেন...তার আগ্রহ কোথায় সেইটা জানা জরুরী। উনাদের আগ্রহ বিদ্যুত, পেট্রোলিয়াম(মানে তেল-গ্যাস), ট্রানজিট, ব্যবসায়িক প্রভাব বিস্তার, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পারমানেন্ট মেম্বারশিপ পাওয়া...এইসবে।

আরেক দল আছে,৭১ এর কৃতজ্ঞতাবোধ সিন্ড্রমে আক্রান্ত। ৭১ এর কৃতজ্ঞতা আইজো তাদের ভাষণের আগা পিছায় ঝইড়া পড়ে। তাই ভারতীয় কূটনীতিকরা আমাদের দালাল, চোর, জঙ্গি যা খুশি তাই বলার এখতিয়ার রাখেন। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রি চুপ থাকেন। ৭১ এর কৃতজ্ঞতা দেখানি ভদ্রতা অনেক হইছে। আমেরিকা যেমন সোভিয়েত মারতে আফগানদের বিলিয়ন ডলারের যুদ্ধাস্ত্র দিছে, সেরম সোভিয়েতরাও ভিয়েতনামিজদের সাহায্য দিয়া আমেরিকাকে শায়েস্তা করছে। কৈ...আফগানিস্তান বা ভিয়েতনামকে এত কৃতজ্ঞতায় গদগদ করতে দেখি না। বাস্তবতা বুঝেন। ভারত কোন দিনই আমাদের সাহায্য করতো না, যদি আমাদের "কমন" শত্রু পাকিস্তান না হইত। সহজ স্ট্যাটেজিক্যাল হিসাব। ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে এইসব টাইনা ভারতরে আপার হ্যান্ড দেয়ার কোন মানে নাই।

যাহোক ভারত- বাংলদেশ দ্বিপাক্ষীক যৌধ বিবৃতির আলোচনায় ১০ এর একটা স্কেলের উপরে মার্কিং করতেছি সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। যাতে ভারত- বাংলদেশ কার স্বার্থ কিরম রক্ষিত হইল তা পরিস্কার বুঝা যায়। আজকাল হুমায়ূন আহমেদ থিকা শুরু কইরা প্রথম আলোর মতিউর রহমান সবাই চতুষ্পদীয় রচনা লিখতেছেন এইবিষয়ে...তাই আমি একটু অংকের সাহায্য নিলাম।

১। ট্রানজিটঃ অনুচ্ছেদ ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ৩৩, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯। ট্রানজিট জিনিসটা বুঝার আগে ম্যাপটা দেখেন। বাংলাদেশের একদিকে ভারতের সাতটা স্টেট আছে, যাদের বলে Seven Sister States। মূল ভারতের সাথে এদের যোগাযোগ শিলিগুড়ি করিডোর দিয়ে। এই চিকন শিলিগুড়ি করিডোর নেপাল আর বাংলাদেশের ফাকে। তাই এই ভৌগলিক সুবিধাকে কাজে লাগায়ে আমরা ভারতের কাছে স্থল ও জলবন্দর ব্যবহার করতে দিয়ে ভাল মুনাফা নিতে পারি। বিনিময়ে নেপাল, ভূটানে আমাদের পণ্য পরিবহনে সুবিধা চাইতে পারি। আবার ন্যায্য পানির হিস্যাও, শূন্য শুল্ক-সুবিধাও আদায় করা যেতে পারত। কিন্তু কি পাইলাম? নেপাল ভূটানে পণ্য নেয়ার সুসপষ্ট কোন পয়েন্ট দেখলাম না। কিন্তু ভারত ঠিকি মংলা, চট্রগ্রাম বন্দর, to and from India through road and rail পণ্য পরিবহনে ইজাজত লেখায়ে পড়ায়ে নিল। ২৩ নং পয়েন্টটা পড়লে ভারতের আনকম্প্রমাজিং মনোভাব সুস্পষ্ট হয়।
"23. It was agreed that Bangladesh will allow use of Mongla and Chittagong sea ports for movement of goods to and from India through road and rail. Bangladesh also conveyed their intention to give Nepal and Bhutan access to Mongla and Chittagong ports." প্রথম লাইনে "was agreed" বলে মংলা ও চট্রগ্রাম বন্দর ব্যবহারে বাংলাদেশের সম্মতি নেয়া হল। দ্বিতীয় লাইনে নেপাল ভূটানের বেলায় শুধু জানানো হইল "intention to give". নেপাল ভূটানে বিষয়ে একি কিসিমের ধোয়াশা রাখা হইছে ২৬ ও ৩৮ নং এ। আমরা এখনো দুইপাতা ইংরাজী পইড়া স্বাক্ষর দিবার মত লায়েক হইয়া উঠতে পারি নাই। স্বীকার করেন?

তাছাড়া একি সাথে জল ও স্থল ট্রানজিট দেবার মতো মেচিউরিটি কি এই প্রতিনিধি দলের ছিল? কোন এসেসমেন্ট করা হয়েছে কি? আমাদের অর্থনীতিতে এর প্রভাব কিরম পড়বে? আমাদের ইনফারস্ট্রাকচার (রাস্তা, কাষ্টমস, নৌবন্দর) কতটা ক্যাপাবল এই বিশাল ট্রাফিক সামলাইতে? কিছুই করা হয় নাই!
বাংলাদেশ- ২, ভারত- ৮

২। ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণঃ যদিও এইটাকে প্রধানমন্ত্রী "সবচেয়ে বড় সাফল্য" হিসাবে প্রচার করতেছেন, তারপরেও আমি এইখানে বাংলাদেশ- ০, ভারত- ১০ পয়েন্ট দিব। আমরা কোন ঋণ সুবিধা নেয়ার জন্য আমরা ভারতে যাই নাই। বরং ভারত এইটা আমাদের গিলায়ে দিছে। কারন এইটার সুদের হার ১.৭%। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এই ঋণ দিলে সার্ভিস চার্জ দিতে হইত ০.৭৫%। তার উপরে এইটা ক্রেডিটরস লোন। মানে বাংলাদেশ রেলের ইঞ্জিন-বগি, সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপের উন্নয়ন, বাস ক্রয় এবং ড্রেজিং প্রকল্পের জন্যই শুধু এই ঋণের টাকা ব্যবহার করা যাবে। হয়ত শুধু ভারতীয় বাস, বগি, মেশিনারীই কেনার শর্ত দেয়া হবে। আগ বাড়ায়ে এরম একটা ফান্দে পা দেয়ার কোন মানে খুইজা পাচ্ছি না।
বাংলাদেশ-০, ভারত- ১০

৩। তেল গ্যাস সমুদ্র সীমানাঃ সীমানা নির্ধারন নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয় নাই। জাতিসংঘে এইটার মীমাংসা হবে। এইটা ভাল হইছে।
বাংলাদেশ- ৫, ভারত- ৫

৪। টিপাইমুখ বাঁধ ও নিষ্ফলা পানি চুক্তি সমূহঃ টিপাইমুখ বাধ বন্ধের কোন দাবিই জানায় নাই আমাদের প্রধানমন্ত্রী। টিপাইমুখ বাধের পক্ষে সাফাই গাইতে গাইতে তিনি দেশে আসছেন...আর আগের করা তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টনের সমস্যাগুলান নিয়া হাসিনা সরকারের কোন মাথাব্যথা নাই বইলা মনে হইল।
বাংলাদেশ- ০, ভারত- ১০

৫। আতংকবাদঃ সন্ত্রাসী ধরতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে আমার কোন আপত্তি নাই। কিন্তু ভারতীয় সরকার ও মিডিয়া যে কথায় কথায় বাংলাদেশকে "আতংকবাদীদের আতুড়ঘর" প্রমাণে উইঠা পইড়া লাগছে...সেইখানে আমার আপত্তি। আমরা আমাদের সবচেয়ে বড় জঙ্গিগুলানরে ধরছি, ফাসিও দিছি। ইন্ডিয়া কয়টা পারছে? বরং উনাদের জঙ্গিরাই আমাদের মাটিতে ঢুকছে... ধরাও পড়ছে।"আতংকবাদীদের আতুঁড়ঘর" দায়টা উনাদেরই দেশি, আমাদের না।
বাংলাদেশ- ৫, ভারত- ৫

৬। জাতিসংঘ ও অন্যান্যঃ সুকৌশলে জাতিসংঘে ভেটো পাওয়ার হবার জন্য ভারত আমাদের দলে টানছে ৪৮ নং অনুচ্ছেদে। আমরাও বেকুবের মত কোন শর্ত না দিয়া "জ্বী হুজুর, সঙ্গেই আছি" জানায়া দিলাম। পানিবন্টন, সমুদ্র সীমানা ছিটমহল, বর্ডারে শতশত খুন...এত ঝামেলা যার সাথে তারে বিশ্বমোড়ল বানাইতে হাসিনা সরকারের এত আগ্রহের হেতু বুঝলাম না।
বাংলাদেশ- ০, ভারত- ১০

৭। ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতঃ ভারত নিজেই চরম বিদ্যুত সংকটে আছে। ইন্টারন্যাশাল এনার্জি এজেন্সীর হিসাব মতে, ২০৩০ সালে বিশ্বের মোট এনার্জি ডিমান্ডের ৫০% এর বেশি অংশ ভারত ও চীনের থাকবে। সুতরাং ২৫০মেগাওয়াট, যা কিনা আমাদের বিদ্যুত ঘাটতির খুবি ছোট্ট একটা অংশ, ভারত আদৌ কেনার মতো দামে ছাড়বে কিনা সন্দেহ আছে। মানে দাড়াইলো, পুরাটাই ব্লাফ।
বাংলাদেশ- ০, ভারত- ০

৮। শূন্য শুল্ক-সুবিধাঃ এইটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। অনেক দিন থিকাই এই মূলা আমাদের নাকের সামনে ঝুলতেছে, কিন্তু ক্যান জানি খাইতে পারতেছি না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) আওতায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জন্য বাজার খুলে দিতে হচ্ছে। গত নভেম্বরে জেনেভায় জানুয়ারি ২০১০ থেকে বাজার খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ব্রাজিল। ভারতকেও একই ধরনের ঘোষণা দিতে হবে। কিন্তু দিল কৈ?
বাংলাদেশ- ০, ভারত- ১০

৯। বৃত্তিঃ ভারত সরকার আমাদের সরকারী চাকুরেদের কিছু বৃত্তি দিতে চেয়েছেন। নিঃসন্দেহে তা কিছুটা হইলেও বাংলাদেশের অর্জন।
বাংলাদেশ- ১০, ভারত- ০

১০। ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কারঃ বাংলাদেশের পক্ষে টিপসই দেয়ার জন্য এটা মুটামুটই ভাল একটা পুরস্কার। কি বলেন? যৌধ ঘোষণায় এইটা থাকলে আরো মজাক পাইতাম।


অনেকেই ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে যাবে, ট্রাকের ড্রাইভারদের জন্য রাস্তার দুপাশে আমরা চটপটি বিক্রি কইরা অনেক পাইসা কামাব...এইরম সুখচিন্তায় জনগণরে অস্থির কইরা ফেলাইতেছেন। আবার মতিউর রহমান, হুমায়ূন আহমেদরা মনের বাঘ শিকার করতে কলম হাতে নামছেন। এদিকে "মনের বাঘ যে ঘরে" ঢুইকা গেছে সেদিকে খেয়াল নাই।


বাংলাদেশের পক্ষে আলোচনায় অংশগ্রহনকারী দলটি দেশ ছাড়ার আগে কি কি ইস্যুতে বাংলাদেশ দেনদরবার করবে...তা কি প্রকাশ করেছিল?---না
ব্যবসায়ী, ডিফেন্স স্পেশালিস্ট, পাওয়ার সেক্টরের কনসাল্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার কি প্রধানমন্ত্রীকে বিফিং করেছিলেন-?-- না
সরকারের বিগত ১ বছরে ট্রানজিট বিষয়ে কোন মন্ত্রাণালয় কি কোন রকমের নিরিক্ষা চালিয়েছে?--- না
এর মানে বাংলাদেশের স্বার্থ সম্পর্কে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ওয়াকিবহাল ছিলেন না। চুক্তির প্রতিটি লাইন ভারতের লিখা এবং পূর্ব নির্ধারিত। হয়তো ব্যাপারটা ইলেকশনের পূর্বেই মীমাংসা হয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের প্রবল জনপ্রিয়তার পূর্ণ স্বদব্যবহার করল ভারতের কূটনিতীকরা। দূর্দান্ত মাস্টার প্লান।

মোট ফলাফলঃ বাংলাদেশ- ২২, ভারত - ৫৮

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ
The Daily Star: 2010-01-13. Full text of jt communiqué
শওকত হোসেন মাসুমঃ ভারত থেকে ঋণ নয়, বাণিজ্য সুবিধা পাওয়া বেশি প্রয়োজন
মতিউর রহমান | তারিখ: ২২-০১-২০১০। মনের বাঘ তাড়াতে হবে
ব্লগারঃ একান্ত কথা"কৃতজ্ঞতাবোধ সিনড্রম" ও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা
ব্লগারঃ পি মুন্সি হাসিনার ভারত সফর: যৌথ ঘোষণার সুক্ষ কারচুপি

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:৩১