২১ ডিসে, ২০১১

রাজাকার নিধন ও যুদ্ধাপরাধ বিচারের মৌলিক পার্থক্যঃ রাজনীতি ২০১২

দেশবাসীকে উপদেশ দেয়া আমার উদ্দেশ্য না। কারন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর দুই হালি উপদেষ্টা আছে। যদিও সরকারী ওয়েবসাইটে উপদেষ্টা তালিকায় সজীব জয়ের নাম নাই, তথাপি উনি যেহেতু নিজেকে উনার মায়ের উপদেষ্টা হিসাবে পরিচয় দিয়া আনন্দ পান, তাই উনাকে গণনায় ধরতে হচ্ছে। আমার নিজের মাকে উপদেশ দিলে নগদ চটকানা খাওয়ার ভয় আছে। কিন্তু সজীব জয়ের কথা আলাদা। উনি জাতির পিতার আপন নাতি। বাকি ৭ জনের ৪জনের পিএইচডি আছে। ২জন আবার ব্যাপক প্রফেসর। তাই জাতিকে উপদেশ দিয়া ভারাক্রান্ত করতে চাই না। নিজের প্রয়োজনেই লিখা রাখা।

গুপ্ত হত্যা vs. চোরাগোপ্তা খেলা শুরু হৈছে। স্কোর ৪০-২। কোন পক্ষ কোন দিকে গোল দিতেছে বুঝা যাইতেছে না। ব্রুট মেজিরিটির সরকার ৩ বছরের মাথায় আইসা আবর-স্প্রিয়ের ভয়ে প্রি-এম্পটিভ এটাক চালাইতেছে। অজানা হাজার খানেক মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়া রাখছে। যাতে যেখানে যারে সন্দেহ হয়, তারে শ্রী ঘরে ঢোকান যায়। তবে রাজনীতির এই আগুনে কাবাব হৈতেছে পাব্লিক। নিতান্ত আম পাব্লিক।

এদিকে যুদ্ধাপরাধের বিচারে দেশী-বিদেশী মিডিয়াতে বেশ শোড়গোল পড়ছে। এতে বুঝা যাইতেছে বিদেশী মিডীয়াতেও অনেক ইনভেস্টমেন্ট হইতেছে। কোনটা যুদ্ধাপরাধ-কোনটা মানবাধিকার লংঘন এইসবের সংজ্ঞায় যাচ্ছি না। যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে হেন করা হচ্ছে, তেন করা হচ্ছে... এইসব ঢাল সরকার যত্রতত্র ব্যবহার করায় ব্যাপারটা বেশ খেলো হৈয়া গেছে। এমন কি মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ঢাকা ভাগের হরতাল সমর্থকদের (এই তালিকায় নব্যপ্রতিষ্ঠিত কিছু সুশীল ব্যানারের অনেক স্বনামধন্য শিক্ষক, কলামনিষ্টও আছেন) সাথে রাজাকার সমর্থকদের  মিল পাইতেছেন। তিনি কচ্ছেন "নিরপেক্ষ বা মধ্যমপন্থী বলে কিছু নেই" ...তাহৈলে উনার সাথে হিটলারের পার্থক্য কোথায় থাক্লো (বিশাল গোঁফটা ছাড়া)?  

তবে হঠাৎ হানাহানির রাজনীতি শুরু হওয়াতে মনে হচ্ছে বিরোধী জোট কোন কারণে আর বসে থাকতে পারতেছে না। কিসে যেন তাদের বেশ তাড়া। ইনফ্লেশন ১০% ক্রস করছে ৩মাসের উপরে। টিপাইমুখ নিয়া সরকারের অবস্থান ভারতের অঙ্গরাজ্য ত্রিপুরার চেয়েও দূর্বল ও অনুগত। সরকার ৬১ জন জেলা প্রসাশক একরাতে পরিবর্তন করে ভোটের মাঠ সাজাচ্ছে। স্টক মার্কেটে পৌনপুণিক দরপতন ও বিশাল অংকের টাকা গায়েব, তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশে সরকারের নিতান্ত অনিহা। এইসব কোনটাই বিরোধীদলকে তেমন অসুবিধায় ফেলে নাই, যতটা যুদ্ধাপরাধ বিচারের আন্তর্জাতিক(কার্যত দেশীয়) ট্রাইবুনালের মামলার গতি ফেলছে। ঢিমে তালে বছর খানেক চলার পরে হঠাৎ গতি বাড়ার কারন নির্বাচন হতে পারে। আমাদের বিচার বিভাগ মূলত গরুর গাড়ির গতিতে আগায়। সরকারের হাতে হালুয়া পেন্টির বাড়ি না খেলে তার নড়ন-চড়ন তেমন দেখা যায় না। ১৫ আগষ্টের আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিচার করতে ২বার ক্ষমতায় আসা লাগছে আওয়ামীলীগকে।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সরকারের বা দলের থাকতে পারে। উকিলের উদ্দেশ্য প্রফেশনালি অপরাধ প্রমান করা। কিন্তু মনে হইতেছে, তারা তাড়াহুড়া করতে চাইতেছে। এবং বিরোধীদল রাজনৈতিক সহদর বাচাইতে তাড়াহুড়া করে আন্দোলনে যাইতে চাচ্ছে। আবার স্বাধীনতার বিপক্ষ-শক্তির চোরাগোপ্তা হামলা ঠেকাইতে স্বাধীনতার স্বপক্ষ-শক্তির জনবল বৃদ্ধির বিশেষ দরকার পড়ছে তাই সরকার ফাসির আসামী, খুনের আসামী সবাইকে বেকসুর খালাস করে দিচ্ছে।


যুদ্ধাপরাধের বিচারের খবর নিউজ মিডিয়াতে তেমন পরিস্কার করে আশতেছে না। কারন প্রতিটা দৈনিকপত্রিকাই কম বেশি কোন না কোন ব্যবসায়ীক গ্রুপের বেতনভূক, সেই সাথে রাজনীতির ২ মেরুর কোন একদিকে ভরকেন্দ্র সরায়া রাখছে। তারা মাঝে মাঝে সাকা চৌধুরীর যেসব বক্তব্য শুনায়, তাতে মনে হয় ট্রাইবুনাল পল্টনে বসছে, সাকা নিশ্চিন্তে ভাষন দিয়াই যাচ্ছে।


আমি তাই কোট করবো ডেভিড বার্গম্যানের ব্লগ। বার্গম্যান ১৯৯৫ সালে War Crimes File নামের একটি চমৎকার ডকুমেন্ট্রি করেন ও পুরস্কার পান। উনার ব্লগে ভিউজ না দিয়ে তিনি নিউজ দিয়েছেন, ধারাবাহিক জেরার বর্ণনা দিচ্ছেন।
 
সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ প্রমানে প্রথম সাক্ষীঃ ২০০৪ সালে খালেদার আমলে মুক্তিযোদ্ধার খাতায় নাম লেখাইছেন। তাও আবার সাঈদীর সুপারিশে (সাঈদী আবার মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দিচ্ছে কবে থেকে? বেহেস্তের টিকিট কি শেষ নাকি?)। পরবর্তীতে আওয়ামী সরকার আমলে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা তাকে ভূয়া হিসাবে আখ্যা দেন!আশেপাশের গ্রামের পিস কমিটির সদস্যদের নামও বলতে পারতেছেন না। লিঙ্ক 

মুক্তিযুদ্ধের পরে প্রায় ৮২হাজার তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও পরে তা বাড়তে বাড়তে ৩ লাখ হৈছে। আবার একি সাথে রাজাকারের সংখ্যাও যুদ্ধের পরে বাড়তেছে। জিয়াউর রহমান, কাদের সিদ্দীকীর মতো অনেকেই নুতুন করে রাজাকারের খাতায় স্থান পাচ্ছেন সরকারী দলের নেক নজরের কারণে।
 
এই বর্ধিত রাজাকার ও মুক্তিযোদ্ধার তালিকা ভূয়া। সমস্যা হৈল এইরকম ভূয়া সাক্ষী একটা গেলে সমস্যা নাই। কিন্তু এইরকম অপরিপক্ক সাক্ষী পায়া জেরা করা হৈছে ৩দিন। এইটা স্পষ্টই সময় নষ্ট করার চেষ্টা। আর এই সময়েই রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়তেছে।


আশঙ্কার বিষয়ঃ
রাষ্ট্র বরাবরের মতই প্রসিকিউট করতে ব্যর্থ হৈতেছে। প্রতিটা ব্যর্থতার কন্সিকোয়েন্স আছে। আমরা হাসিনা-খালেদা-এরশাদের দূর্নীতি প্রমান করতে ব্যর্থ হৈছি। তার মাসুল দিচ্ছি। এখন নিজামী-গোলাম আযম-সাঈদীর বিচারেও ব্যর্থ হৈলে- এরা আগামীতে মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দিবে। গেল কয়েক বছরে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার হইছে, এরপরে রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধা সাজবে। ৫ বছরের মিউজিকাল চেয়ারের খেলায় বর্তমান বিরোধীদলের ক্ষমতায় যাবার সম্ভাবনাকে প্রকট ধরলে এই বিচার এই সরকারের আমলে শেষ না হলে, আগামীতে আর হবে না।

এরমধ্যে একটা অসহিষ্ণু ক্রাউড তৈরী হৈছে। এরা ৪০ বছর পরে, আর অপেক্ষা করতে পারতেছে না, স্রেফ কয়েকজনকে ঝুলায়া দেয়ার পক্ষপাতী। কিন্তু ঝুলায়া দেয়াটা বিচারের মূল উদ্দেশ্য না। আজকে ২টা রাজাকারের ফাসি দিলে, মূল অবস্থার তেমন পরিবর্তন হবে কি? আর ৪০ বছর পরে এদের মেমোরিয়াল হবে, সেই খানে সমাজের ১০জন গন্যমান্য লোক স্পিচ দিবে। ১০টা টিভি চ্যানেল, ২ হালি পত্রিকায় নিউজ দিবে। সেই প্রজন্ম হয়তো আমাদেরকেই খুনি, বর্বর বলবে।

কিন্তু যদি ২-৪জনের অপরাধ পর্যাপ্ত আর্গুমেন্ট ও স্ক্রুটীনির মাধ্যমে প্রমাণ করে, ঝুলায়া দেয়া যায়... আর ২০০ রাজাকার তাদের ১৪ গুষ্টি কোন দিন মাথা তুইলা দাড়াইতে পারবে না। 


কিন্তু ট্রাইবুলান যদি পত্রিকার লেখনী দেইখা বিচলিত হয়ে যায়, সম্পাদককে ডাইকা আইনা ঝাড়ি দিতে চায়--তাইলে ফ্রি-ফেয়ার ক্যাম্নে হবে? আসামী পক্ষকে যদি বাই ল(LAW) মাত্র ৩ হপ্তা সময় দেয়া হয়, আর সরকারী উকিল ১ বছর ধরে মামলা গুছায়, তাইলে ফেয়ার হইলো? ডিফেন্সের উকিল, সাক্ষীদের যদি মামলা-মোকদ্দমার ভয় দেখায়, তাইলেতো হবে না।

তার উপরে যদি সরকার প্রথমেই একটা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা দিয়ে শুরু করে, তাইলে বুঝতে হবে, তাদের উদ্দেশ্য তাড়াহুড়া করে দুই-এক্টা রায় দিয়ে বাকিদের ইলেকশন পর্যন্ত ঝুলায়া রাখা। ইলেকশনের আগে চয়েস ফর্ম ফিলাপ করতে হবে "রাজাকারদের কি জেলে দেখতে চান? চাইলে ভোট দেন"। কারন বিএনপি আজ পর্যন্ত রাজাকারের বিচার করবে এমন কোন স্টেটমেন্ট দেয় নাই।



কোয়ালিশন ইলেকশন কমিটমেন্ট
রাজনীতির ঘোলা পানিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করাই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের আসল শক্তির মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।  সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম আবার সক্রিয় হতে পারে। তারা অরাজনৈতিকভাবে কিছু মৌলিক দাবিতে আওয়ামীলীগ ও বিএনপিকে রাজি করাতে পারে। এটাকে বলা যেতে পারে "কোয়ালিশন ইলেকশন কমিটমেন্ট", নির্বাচনের পরে (নির্বাচন হবে কিনা সেইটা নিয়াও সন্দেহ আছে) যাতে বিচারকাজ আপন গতিতে চলতে পারে সেইজন্য দুইপক্ষে কাছে কিছু স্পষ্ট কমিটমেন্ট আদায় করতে হবে। যেমনঃ 
*ট্রাইবুনাল ভেঙ্গে দেয়া যাবে না
*কোন আইনে বিচার হলে সেটা গ্রহনযোগ্য হয়- সেটা আন্তর্জাতিকমানের হয় সেটার শোনা। শুধু শুধু, ট্রাইবুনালের নিরপেক্ষতা প্রশ্ন করা যাবে না,
*মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক, বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধের তথ্য-প্রমান দলিল করতে গবেষনায় বরাদ্দ কত হবে ও মূল গবেষক কারা হবেন তার লিখিত তালিকা নেয়া 
* এরকম আরো কিছু পয়েন্টে মতামত আদায় করা যেতে পারে।

তবে এই কাজে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের লে.জেনারেল হারুন-অর-রশিদকে ডেস্টিনি ২০০০লিমিটেডের ডিরেক্টর হিসাবে নয়, হাত বাড়াতে হবে চেয়ে প্রবল জনসমর্থন আদায়ে। স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির এইটাই শেষ সুযোগ। আমাদের এক্ষনী আরেকজন জাহানারা ইমাম প্রয়োজন।
ছবিঃ মেঘ রোদ্দুর

৯ নভে, ২০১১

খসড়া ঈদ আনন্দমেলা ২০১১

ঈদ আসছে তাই লোক হাসানো গুরু দায়িত্ব নিয়া অনেক টিভিতেই ভাড়দের প্রানান্ত চেষ্টা কর্তে দেখা যায়। চোখ বন্ধ করে বলতে পারি, এরা অধিকাংশই ব্যর্থ হবে। সারাবছর দেশের রাজনিতীবিদরা যে পরিমান বিনোদন দেন, পেপার-পত্রিকা বন্ধ থাকায় ঈদে সেই বিনোদন ধারা ব্যহত হয়। এতে দেশে ব্যাপক বিনোদন ঘাটতি দেখা যায়। দেশের বিনোদন ঘাটতি একটি বড় সমস্যা। এজন্য অনেকে ঈদে হিন্দী-ইংরাজী সিনেমার দিকে ঝুকে পড়েন। সরকার ও পিচ্ছল বুদ্ধিজীবিদের উচিত ব্যাপারটা গুরুত্ব নিয়া ভাবা।

এবছর দেশের সেরা বিনোদন দিয়েছেন গোলাম মওলা রনি। আমি কোন চ্যানেল মালিক হৈলে (শুঞ্ছি সঠিক চ্যানেল থাকলেই দেশে চ্যানেল মালিক হওয়া যায়)...ঈদের আনন্দমেলা টাইপ কোন অনুষ্ঠান উনারে দিয়া করাতাম। স্ট্যান্ডাপ শো অফ গোলাম ম. রনি। অনুষ্ঠানের পরে সারা দেশ হাস্তে হাস্তে শুয়ে পড়তো আর উনি দাড়ায়া থাকতেন। স্ট্যান্ডাপ যাকে বলে!

আগে সব আনন্দমেলায় কৌতুক অভিনেতারা একটা অংশ করতেন, যেমন টেলিসামাদ, কাজল। এখন আর এদের ভাত নাই। এরাও ব্যবসা গুটাইছে বা পরিবর্তন কর্ছে। কারন আবুলদের পারফরমেন্স দেখার পরে এইপেশায় থাকা বুদ্ধিমানের কাজ না।

দেশের সংগীতাঙ্গনেও স্থবীরতা আসছে। আগে রবী চৌধুরী, আসিফ- এরা হাত পা ছুড়ে গান গেয়ে এলবাম ছাড়তেন ঈদের আগে। এগুলাও বেশ বিনোদন ছিল। এখন সেই যায়গা দখল করছে কিছু মিউজিশিয়ান যারা সবাইকে ফিয়েচারিং করে। সাম-বডি ফিয়েচারিং এভ্রিবাডি (আনিলা ft. ফুয়াদ, মিলা ft. ফুয়াদ, তাহসান ft. ফুয়াদ)। বা, এভ্রিবাডি ফিয়েচারিং সাম-বাডি। এইরকম কিছু গান ঈদ আনন্দমেলায় থাকতে পারে। গানের পরে কুইজঃ এই গান্টি কোন কোন ইংরাজি গানের নকল। A. B. C. D. এসেমেস করূন ২১২১ নাম্বারে।

এক দমে দেশের সবগুলো জেলার নাম বলে ইতিপূর্বে অনেকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তাই এবার নতুনত্ব আনতে একদমে নিজের ১৪ গুষ্টির সবার নাম বলে তাক লাগিয়ে দিবেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। সাথে কাকে কোথায় কবর দেয়া হয়েছে- সেটাও বলে দিবেন চক্ষু বন্ধ করে। আমি এই অংশটুকু পরে ইউটিউবে আপ্লোড করবো। এতে ইউটিউব দেশে আবার ব্যান খাইলেও আমি আপ্লোড করবো। প্রবাসীদেরও বিনোদনের দরকার আছে।

গেইমশোতে খাওয়া-দাওয়ার একটা দারূন পর্ব থাকে, যেখানে সবাইকে খেতে দেয়া হয় ফল বা মিষ্টী। এবার নুতুন কিছু আনতে পারি আমরা। উপস্থিত দর্শকদের মধ্য থেকে "জিন্স-টিশার্ট পড়ুয়া তরূন প্রজন্মের" ৩জনকে স্টেজে আনা হবে। উল্লেখ্য, পাঞ্জাবি ছেড়ে জিন্স পড়ে যদি শামীম ওসমান আসেন উনাকে কোনভাবেই তরুন প্রজন্মের সাথে খেলায় অংশ নিতে দেয়া হবে না। কারন, তিনি সবকিছু "উল্টায়ে ফেলতে পারেন"। বা উল্টা দিক দিয়ে খাওয়া শুরু করতে পারেন। খাবার হিসাবে দেয়া হবে সীসা। বাদশাহী ভাব আছে।

ঈদে সংবাদের খুব অভাব। কারন সাংবাদিকরা ঈদে পালন করেন। তাই আনন্দমেলায় ফান-সংবাদ করা যেতে পারে। এটা করা হবে ১মাসের প্রথম আলোর কাটপিছ সংবাদ থেকে টূক্লিফাই এন্ড রিসাইকেল করে। যেমন- "বিন্দুর অনেক জ্বর", "মেয়েরা ছেলেদের কাছে যা চায়", "জামাইরা শ্যালিকাদের কাছে যা চায়", ইত্যাদি ইত্যাদি।

আনন্দমেলাইয় সামান্য টকশো করা যেতে পারে। টকশো করবেন মকসুদ সাহেব ও রনী। রনী কাহিনী বলবে, কেন মকসুদ সাহেব গরমের দিনে চাদর পড়ে ঘুরেন। তবেঁ অনুষ্ঠানের আগেই মকসুদ সাহেবকে জানায়ে দেয়া হবে, ভূলেও যেন "আনন্দমেলা করে ভুরুঙ্গুমারীর কি লাভ?" এজাতীয় কোন ক্রিটিকাল প্রশ্ন জাতিকে না করতে। ঈদের দিনে নো প্রশ্ন।

ফ্যাশন শো না থাকলে অপূর্ণ থেকে যায়। ঈদে খালেদা জিয়ার ১০০টি বাহারী শাড়ি ও তার সাথে ম্যাচিং করে পড়া ফ্যাশন সামগ্রীর বর্নণা দিবেন আইএস্পিয়ার ডিরেক্টর। তবে উনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে হবে, এটি পরিবারের ছোট-বড় সবাইকে নিয়ে দেখার মত একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান- বিটিভির সংবাদ না। তাই, সবকিছু(!) এখানে দেখানো যাবে না।

অনুষ্ঠানের শেষের দিকে একটা ভালো গান থাকা লাগবে। ইভা রহমানের গান দেয়া যাইতে পারে। উনি খুব জনপ্রিয়।খুব। গানের শেষে এসেমেস থাকবে- গানটি বিশ্বের কয়টি দেশে চিত্রায়িত? A) 2 B) 4 C) 6 D) 14
এসেমেসের পয়সায় আগামী ২ ঈদের গরু কেনার খরচ উঠে আসবে।


ঈদ মোবারক। ছবিঃ ফ্লিকার Anil T M
Captured from a poster, electrical dept., monash
#এইটা ৯৮ তম ফেইসবুক নোট। ধানাই-পানাই করেও ১০০ করতে পারতেছি না। ব্লগস্পটে সব লেখা 

৯ অক্টো, ২০১১

পোস্ট গ্রাজুয়েটের জীবন থেকে নেয়া

বাংলাদেশের প্রবাসীদের  মাঝে যে পোস্ট গ্রাজুয়েট পেশার লোকজন নগন্য হৈলেও- ফেইসবুকে তাদের আধিপত্য নারায়ঙ্গঞ্জের শামীম অস্মানের আধিপত্যের চেয়েও বেশি। কারন পরিস্কার- রাজনিতীর মাঠ দখল করে যেমন আধিপ্ত্য প্রতিষ্ঠা হয়, তেমনি ফেইসবুকে সারাক্কন পৈড়া থাইকাও আধিপত্য বজায় থাকে।

শিক্ষাদীক্ষার লাইনে জাগো যুগাযোগ কম, তারা এই পেশার লোকজন সম্পর্কে ভূল ধারনা রাখেন। তাদের মনে বদ্ধমূল ধারনা... পোস্টগ্রাজুয়েট্রা ব্যাফক মেধাবি...তাই তাগ পোইসা দিয়া বিদাশিরা পড়ায়। কথা আংশিক সত্য। এত কম টাকায় এতবড় ছাগল বিদাশে পাওয়া যায় না... তাই বাংলাদেশ থিকা আমদানী করা হয়।

একজন পোস্টগ্রাড সকালে ঘুম থিকা উঠে কিংবা কেউ কেউ সকালে ঘুমাইতে যায়। এদের লাইফ স্টাইল ঘড়ির কাটায় সেট থাকে না। ক্যালেন্ডারের পাতায় সেট করা থাকে। কোন সুপারভাইজার কখন জিগাবে না "গতকাল তুমি কি করছো?"। বরং জিগাবে " হোয়াট ইউ ডিড লাস্ট উইক/মান্থ?"

আদর্শ পোস্টগ্রাডের প্রথম কাজ...সকালে ঊইঠা ফেইসবুক-টুইটার নিজের মুবাইলে দেখা...এরপরে ডিপার্মেন্টে আইসা...আবার একি নোটিফিকেশঙ্গুলারে বড় পর্দায় (ডেস্কটোপে) দেখা। এরবাদে ১০-১২টা নিউজপেপারের গুতায়া ...ফেইবুকে শেয়ারিত কৈরা...নিজে ও নিজের ভাই-ব্রাদারদের হোম পেজ ভাসায়া দিয়া হাপায়া উঠলে...লাঞ্ছের পরে...এক্টা বিজ্ঞানবিষয়ক পেপার ডাউনলোড কৈরা প্রিন্ট দিয়া...বিকালের কফি খায়া বাসায় চৈলা যাওয়া। এমন একটা ভাব...। ডিপার্টমেন্টে পড়া হৈতেছে না... বাসায় গিয়া মাথা ঠান্ডা কোইরা পড়া লাগপে।

খাওয়াদাওয়া কথা যখন চৈলাই আস্লো... তাইলে আরেকটু বিস্তারিত না বললেই না। অধিকাংশ পোস্টগ্রাড জৈবিক চাহিদা দ্বারা তাড়িত প্রানী। এরা কোন অনুষ্ঠানের শেষে ফ্রি-ফুড না থাকলে জিন্দেগীতে পশ্চাদ্দেশের ১ ফুট সরণ ঘটাবে না। যেকোন দাওয়াতে সবার আগে কবুল করবে। এবং বেশুমার খাইয়া খাবারে শর্ট ফেলাবে। পোস্ট-গ্রাজুয়েটের জন্য ভার্সিটী ফ্রি চা-কফি-চিনি-দুধ দিয়া রাখলেও... সব সময় দুধের সংকট থাকবে। দুধ খাওয়া থেকে বিরত করতে বড় বড় নোটিশ টাঙ্গায়েও কোন লাভ হয় না। কারন পড়ালেখা করতে পুষ্টির বড় প্রয়োজন। এদের জীবণে বিনোদনের বড় অভাব। IMBD থিকা ২৫০ মুভির লিস্ট শেষ হৈলে ...৫০০ মুভির লিস্ট নামানো হয়...কিন্তু বিনোদনের ক্ষুধা শেষ হয় না। তাই খাদ্য এদের এক্মাত্র বিনোদন। ভোজন এদের হবি। একমাত্র কমন ভিলেন- সুপারভাইজার।

তবে এর ব্যতিক্রম আছে। সবখানেই থাকে। জগত সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন একদল পোস্টগ্রাড আছে যারা বাইরের দুনিয়ার কোন খোজ রাখে না। এরা ফেইসবুকে শুধুমাত্র জন্মদিনের দিন আসে... বন্ধুদের উইশ পাওয়ার আশায়। ২ বছর পরপর দেশে যায়, ২ সপ্তাহের জন্য... কারন অনেক কাজ...অমূক পেপারটা সাবমিট করা লাগবে...তমুক এক্সপেরিমেন্ট আবার করা লাগবে। পোলাপানের তমুক পরীক্ষার খাতা কাটা লাগপে। 

আর সবার মত সকল পোস্টগ্রাডের স্বপ্ন বাড়ি-গাড়ি-চাকরী- পরিবার। যা তারা পাবে...কিন্তু শেষ বয়সে

১৭ সেপ, ২০১১

বাঙ্গালের মহাদেশ ভ্রমন

1.           আগের জামানায় পিঠে চিড়া গুড় লৈয়া মুখে আল্লাহর নাম নিয়া লোকে দূর দুরান্ত চলিয়া যাইত...বাসা হইতে বাহির হইয়া প্রকৃতি দেখিয়া আগাইয়া চলিত মুসাফির.....আজকাল আর সেই আরাম নাই...ক্ষণে ক্ষণে মোবাইল বাজিয়া উঠিবে ...উধার হইতে পুছিবে- এখন কোথায়, কি বৃত্তান্ত...দিনকাল কেমন চলিতেছে... ইত্যাদি বিবিধ প্রশ্ন....আগের  মত আরাম নাই ..ইহাকে অবশ্যই বিজ্ঞানের অভিশাপ বলা যাইতে পারে 

            সম্প্রতি এশিয়া মহাদেশ ত্যাগ করিয়াচি ...তাও আবার যুগের সেরা ও ব্যাপক সাশ্রয়ী বাহন এয়ারেশিয়াতে কাপিয়া ...হ্যা পাঠক ...আমি ইয়ারেশিয়াতে চাপিয়াচিলাম নাকি ইয়ারেশিয়া আমাতে চাপিয়াছিল তা নিয়া বেহুদা বাহাসে যাইব না...তাই বললাম ইয়ারেশিয়াতে কাপিয়া...কারণ ইহা পরিস্কার যে...আমি ও হাওয়াই যান উভয় ব্যাপক কাপিয়া ছিল... মাঝ রাস্তায় আসিয়া লাল বালিকাদের বলিয়াছিলাম...প্লেনের এসি বাড়াইয়া দিতে ..."ঘেমে একদম নেয়ে গেলাম যে " ..

প্লেনের এসি কমাইয়া তেল সাশ্রয় করা যায় ...এমন থিওরি দিয়া তাহার যন্ত্রকৌশল সহকারে পাশের অস্ত্রালিয়ান যাত্রীকে বুঝাইয়া বলিলাম ...মহিলা আমার দিকে ব্যাপক বিস্ময়ে চক্ষু বড় করিয়া কহিল "রিয়েলি?"  ..আমি বলিলাম ...আলবত!

          বাকিপথ আমাকে নানান প্রশ্ন করিয়া ব্যতিব্যস্ত করিয়া রাখিল সে ..প্লেনে খাবার না নিয়া ৩০ রিঙ্গিতে মিডিয়া প্লেয়ার নিয়া চলচীত্র দেখবেন ...আর বাঙ্গালের নিকট খাদ্যই  প্রধান  বিনোদন...যাহার যা অভাব ..হেহে ...খাবারের সাথে  কিঞ্চিত  চাপাবাজি  হইলেই  আমার সময়  দিব্বি  কাটিয়া যায়.....যাহোক মহিলা ফ্রিতে একখানা মুভি দেখাইল ...৮ ঘন্টা হওয়ায় ভ্রমণের ২ ঘন্টা কাটিয়া গেল চামে:)


          ৬ ফুটিয়া দেহ লৈয়া ইয়ারেশিয়ার চাপা সিটে ৮ ঘন্টা বৈসিয়া থাকার পর যখন অসিদেশে নামিলাম...নিজেকে বেশ কারামুক্ত বলিয়া ভ্রম হইলো ...ভ্রম বলিলাম কারণ -জীবন একখানা  মস্ত কারাগার ...কারো সেল্খানা ক্ষদ্র...কাহারো বড়

          দেশ হিসাবে অস্ট্রলিয়া কেমন তাহা বলিতে পারি না ...তবে শহর হিসাবে ১ম খেতাব জেতা মেলবর্র্ন যে কোনো উপায়েই সেরা তালিকায় থাকিতে পারে না ...তাহা আমি হলপ করিয়া বলিতে পারি ...নিশ্চয় সুক্ষ্ম কারচুপির আশ্রয় লইয়াছে অসি ভ্রাতারা ...মেলবর্ণের প্রধান সমস্যা ইহার আবহাওয়া ...বর্র্ণচোরা গর্গিটির ন্যায় এর আকাশে রং ক্ষণে ক্ষণে পাল্টায় ...সেই সাথে তাপমাত্রা ...থার্মোমিটারের পারদ স্তম্ভে এখাবে বিন্দু মাত্র স্বস্তি পায় না ...সর্র্বদা লাফালাফি করিতেছে ...সকালে শীত, বিকালে গ্রীষ্ম, রাতে  বর্র্ষা... ঋতুগুলান যেন প্রতিদিন পারমুটেশন কম্বিনেশন করিয়া বিন্যস্ত হয়

           শেখ হাসিনাকে নোবেল দিবার জন্য তদ্বির না করিয়া ...ঢাকার অবস্থান  ১৩৮ হইতে  উপরে তুলার জন্য মাল-পানি ঢালিলে শির্র্ষ শতকে স্থান পাওয়া আমাদের জন্য তেমন কঠিন হইবে না!
জয় বাংলা !

2. এয়ারপোর্টে নামিয়া কিছু নাদুস নুদুস কুকুর আমার ব্যাগ শুকিলো...হাড়গড় কিছু না পাইয়া তারা অন্ত্যত্র তালাশ করিতে লাগিল ...চেকআউট করিতে সময় লাগিল না...সেলাম ঢুকিতে ঢুকিতে বিদায় জানাইয়া দিল

আমাকে লইতে যে বেয়ারা ড্রাইভার আসার কথা...তাহাকে কথাও দেখিতে পাইলাম না ...কিছুক্ষণ ইতস্তত ব্রাউনিয় কনার ন্যায় পায়চারী করিয়া দেশে ত্যক্ত হইয়া ফোন করিয়াল তল ফ্রি নাম্বারে... বলিল ১০ মিনিটে পৌছাইয়া যাইবে গাড়ি ...ঠায় দাড়াইয়া থাকেন ..."ওক্কে ফাইন "    

ড্রাইভার একখানা আইফোন হাতে বকবক করিতে করিতে ১০মিনিট পর আমায় খুজিতে লাগিল ...হাতে একখানা কাগজে আমার বিশ্ব্বিদ্দ্যালয়ের নাম লেখা ...আমি এক খানা এসেমেস চাপিতেচিলাম...গরিবের বন্ধু নকিয়া ফোনে ...সুরুত করিয়া তা পকেটে ভরিয়া রাখিলাম... মান-ইজ্জ্বত-খান্দান আর অবশিষ্ট রহিলো না দেখি! এখানে বাসের ড্রাইভাররা এমন চোস্ত ইংরাজি বলে ..যা আমাকে ব্যাপক ভাবাইল...ইহারা বাস না চালাইয়া...আমাদের দেশে IELTS কর্র্স করাইলে সাইফুরস স্যার ব্যবসা গুটায়তো, নিশ্চিত!

১ সেপ, ২০১১

শহীদ মিনারে হবে ঈদ, আবুল তুমি গাও গীত-১

মেলাদিন কিছু লেখি না...তাই হাত গরম পোষ্ট । ঢাকাইয়া বুদ্ধিজীবি সমাজের একটা বড় সমস্যা, এরা ঢাকার বাইরে ভাবতে চায় না। যেমন ঢাকায় ১০ ঘন্টা কারেন্ট না থাকলে তাদের কলমে বজ্র ঝরে...কিন্তু গ্রামে যখন দিনে ১০ঘন্টা কারেন্ট থাকে তখন তারা নিরব থাকেন। তারা উন্নত জীব, কারন তারা পত্রিকায় লেখেন--গ্রামের লোকে তাদের জন্য ফসল ফলাবে ক্ষেতে খালায়, গরমে ঘামাচি ফুটাবে...সেইটাই তাদের নিয়তি। এইবার ঈদে আন্দোলন করতে চান তারা।সুন্দর পরিকল্পনা। শহীদ মিনারে যারা যাবেন (যদি মন্ত্রীসাব আজকে চান রাইতে পদত্যাগ না কৈরা ফেলেন), তাদেরকে ঈদ মুবারক। তবে উনাদের এই অভিনব আন্দোলনের দাবিগুলাতে আমার কিছু গ্যাটিস চিন্তা সাপ্লাই দেয়ার ইচ্ছা আছে।
আসল আবুল দূরে বৈসা মজাক দেখতেছে

উনাদের দাবিসমূহ:

এক. আমাদের প্রধান দাবি ৩১ আগস্টের মধ্যে যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে পদচ্যুত করতে হবে।
দুই. অবৈধ লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে।
তিন. সড়ক ও পরিবহন সেক্টরের দুর্নীতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
চার. গণপরিবহন ব্যবস্থায় দ্রুত শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে হবে।
পাঁচ. সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিদ্যমান আইনটি কঠোর করতে হবে।
ছয়. চালকদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
সাত. সড়ক ও পরিবহনসহ প্রশাসনের সবস্তরে কার্যকর জবাবদিহিতার কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে হবে। (লিঙ্ক )


মূলদাবি যোগাযোগমন্ত্রীর পদত্যাগকে আমার কাছে অগুরুত্বপূর্ন মনে হয়, যদিও উনার পদে থাকার কোন যোগ্যতা নাই। তবে দেশের ঢাকাইয়া বুদ্ধিজীবি সমাজ জেমতে তারে চাইপ্পা ধর্তে চাইতেছে তাগো কলামে, চোপাতে...আমার কাছে সেইটা আজাইরা মনে হয়। এই মন্ত্রী গেলেও রাস্তাঘাটের তেমন কোন উন্নতি হবে না...যোগাযোগ ব্যবস্থার কিছুই পরিবর্তন হবে না। তাই মন্ত্রীর গদি ধৈরা টান দেয়ার চেয়ে পুরা যোগাযোগ ব্যবস্থার (সড়ক-রেল-নৌপথ) সমস্যা নিয়া ভাবা উচিত...এবং আরো গুরুত্বপূর্ন সাজেশন সরকারকে দেয়া উচিত। কিন্তু আফসোসের বিষয়, শুধুমাত্র আবুল সাহেবের নিকুচি কইরাই বুদ্ধিজীবি ও সোশাল সুশীল সমাজ (ফেইসবুক ঘরনা) তাদের সমস্ত গলার রগ ফুলায়া ফেলতেছেন। বুদ্ধিজীবিদের কলামে তারেক মাসুদ ও আশফাক মুনীরকে (আল্লাহ তাদের আত্মার শান্তি দিন) হারাবার বেদনাই প্রকট...বুদ্ধির চর্চা নাই। সড়ক নিরাপত্তা দিয়া যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন হয় না। আমার মনে হয় ৩টা গুরুত্বপূর্ন ইস্যুকে আরো শক্তভাবে এড্রেস করা উচিতঃ

১। রেল ও নৌপথে যাতায়াত ব্যবস্থায় সরকারী ইনভেস্টমেন্ট ও তার ব্যবহার ২। সড়ক রক্ষনাবেক্ষন বাজেট ঘাটতি পূরনে পরিপূরক ব্যবস্থা ৩। ট্রানজিটে ভারতের কাছে প্রতিটি রুটের জন্য পর্যাপ্ত টোল আদায় করা যা "রোড ফান্ডে" ব্যবহার করা যাবে

উনাদের দাবিগুলা শুধু মন্ত্রীর বিরুদ্ধে, কিছু চালকের বিরুদ্ধে। আর ট্রানজিট উনাদের কাছে একটা এলিয়েন ইস্যু। কিন্তু উপরের তিনটিই সড়কের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত বিষয়---যার উপরে নির্ভর করতেছে আগামী ১০ বছরে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার কোন পরিবর্তন হবে, নাকি শুধু মন্ত্রীর পরিবর্তন হবে।


ঈদ মুবারক। (চলছে চলুক)

১২ আগ, ২০১১

জার্নাল রিভিউয়ারদের মোকাবেলা করবেন কিভাবে?


আগের পর্বে পেপার লেখার কিছু মৌলিক বিষয় নিয়ে এসেছিলাম এবার পেপার সাবমিট করার পরের অংশ নিয়ে লিখব পেপার লিখার পরেই আপনার দ্বায়িত্ব শেষ হলোনা। পেপারটি এখন নানান ধাপে মূল্যায়ন হবে, মুল্যায়নের যেকোন ধাপে আপনার পেপারটি রিজেক্টেড হতে পারে। প্রথমেই যেসব কমেন্ট আশতে পারে তা আলোচলা করি।

প্রথম ধাপঃ জার্নাল এডিটর বা জার্নাল ম্যানেজার
এটাকে বলা হয় টেকনিকাল চেক। এদের হাতে নানান অত্যাধুনিক সফটওয়ার আছে। জার্নাল এডিটর বা ম্যানেজার আপনার পেপারটি প্রথমেই যেইসব কারনে রিজেক্ট/কমেন্ট দিতে পারেন-

১) আপনার পেপারটি আমাদের জার্নালের স্কোপে পড়ছে না। দুঃক্ষিত।
          অনেক পেপার এভাবে হিটেই বাদ পড়ে যায়। তাই সঠিক জার্নাল খুজে বের করা জরূরী, নইলে মূল্যবান সময় নষ্ট হতে পারে। সাবমিশনের আগে স্কোপ দেখে নেয়া উচিত। পুরোপুরি নিশ্চিত হতে চাইলে এডিটরের কাছে ইমেইল লিখে জানতে চাইতে পারেন

২) অত্যন্তদুঃক্ষের সাথে জানাচ্ছি যে, আপনার লেখার গুনগত মান আমাদের পেপারের উপযোগী না। বা, আপনার লেখার অরিজিনালিটি নাই।
          এরকম একটি কমেন্ট আপনার পেপার লেখার আগ্রহ-উৎসাহ শেষ করে দিতে পারে। কিন্তু হতাশ হবার কিছুই নাই। অনেক বিজ্ঞ প্রফেসরের পেপার এভাবে রিজেক্ট হতে দেখা যায়Bornmanm & Daniel (1993), Liesegang et al. (2007), Ray et al. (2000) এবং আরো অনেক গবেষক স্ট্যাটিসটিক্স ঘেটে দেখেছেন, ৫০% এর বেশি রিজেক্টেড পেপার পরবর্তীতে অন্যকোন কম ইম্প্যাক্টের জার্নালে ঠিকি পাব্লিশ হয়ে যাচ্ছে। সুত্রাং লেগে থাকতে হবে। একটি রিজেকশন আসলে, কমেন্টগুলো পড়ে পেপারটাকে আবার শুধরে নিয়া অন্য জার্নালে দিতে হবে। 
৩) আপনার পেপারের রেফারেন্সগুলার স্টাইল সঠিক নাই। লাইন নাম্বার দেন নাই। অমুক ফিগারের ক্যাপ্সন নাই। ফিগার আছে কিন্তু তার বর্ননা নাই। ফিগার বা চার্ট খুবি অস্পষ্ট। লেখা বেশি বড় হয়ে গেছে। ইত্যাদি।
                এই ভূলগুলান স্বাভাবিক। পেপার লেখা শেষ হলে, অনেকেই অতি উৎসাহে তাড়াহূড়া করে একটি জার্নালে সাবমিট করে ফেলেন। এই তাড়াহুড়ার কারনে জার্নালে "অথার গাইডলাইন" পড়ে পেপারটিকে ফরম্যাট করতে ভুলে যান। যারা প্রথমবার কোথাও সাবমিট করছেন, তাদের কমপক্ষে ২ দিন সময় দিয়ে ধীরে সুস্থে সাবমিট করা উচিত। তাহলে সহজেই এই ভূলগুল এড়ানো যায়।

৪) আপনার ইংরাজির অবস্থা ভালো না। উন্নত একাডেমিক ইংলিশ লেখেন।
                এইটা এশিয়ান অথার দেখলেই এডিটরদের কমন বরাদ্দের কমেন্ট। মোটেও ভয় পাবেন না। আপনার জিয়ারি ১৪০০ থাক্লেও এই কমেন্ট হজম করতে হবে, কারন আপনার নামের মধ্যে এশিয়ান গন্ধ আছে। যাহোক, এই সমস্যা মেটাতে আপনার বন্ধু/কলিগকে পেপারটি পড়তে দিন। পাঠকের চোখে অনেক ভুল ধরা পরে যা লেখকের চোখ এড়িয়ে যায়। এছাড়া অনেক ইংলিশ এডিটীং সাইট আছে। Elsevier নিজের একটি সার্ভিস খুলেছে Elsevier English Language Editing Service  প্রায় প্রতিটি পাব্লিশানেরে এমন সার্ভিস আছে। পেপার আপ্লোড করে দিয়ে ক্রেডিট কার্ডে ডলার ছাড়ুন- এডিট করে দিবে ২/৩ দিনে। তবে চার্জ অনেকআমার নিজের এমন একটি সার্ভিস আছে Publication.Easy, বছর দুয়েক হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপঃ রিভিয়ার

প্রথম ধাপে ছাড়া পেলে আপনার পেপারটি দ্বিতীয় ধাপে রিভিউতে যাবে।
পেপার লিখার পরের একট লম্বা সময় যাবে রিভিয়ারের কমেন্টের প্রতিক্ষায় সময়টা জার্নালভেদে বিভিন্ন  হতে পারে। আবার এমন হতে পারে, আপনার লেখা পেপারটি যেসব রিভিউয়ারের কাছে পাঠানো হয়েছে তারা সময় করে কমেন্ট দিতে পারছেন না...তাই আটকে আছে এরপরে দুই/তিন রাউন্ড  রিভিউ ও তার উত্তর চালাচালির পরে হয়ত আপনার পেপার এক্সেপ্ট হবে...বা রিজেক্ট তবে কিছুক্ষেত্রে সরাসরি এক্সেপ্টেড হতে পারে। 

পিয়ার-রিভিউড জার্নালে রিভিয়ার নির্বাচনে আপনার কোন হাত নাই। কিছু ক্ষেত্রে রিভিয়ারের নাম চাইতে পারে পাঠকের কাছে কিন্তু জার্নালের এডিটর সাহেব নিজের ইচ্ছা মত দুই/তিন জন রিভিয়ার সিলেক্ট করবেন। সমস্যা হচ্ছে, রিভিউয়াররা নানান কিসিমের হয়ে থাকেন। অনেকক্ষেত্রেই ব্যস্ত প্রফেসররা নিজে রিভিউ না করে প্রিয় পোস্টগ্রাজুয়েটের কাছে দিয়ে দেন, রিভিউ করে দেবার জন্য। আবার অনেকক্ষেত্রে এডিটর নিজেই আরেকজন মাস্টার্স বা পিএইচডি ছাত্রকে রিভিউ করার আমন্ত্রন জানান। অনেকক্ষেত্রে আপনার রিজিওনের একজনকে রিভিউয়ার নির্বাচন করতে পারে। 

কিছু রিভিউয়ার সামান্য ৩/৪ লাইন লিখে ক্ষান্ত দেন, এরা বেশ শান্তি প্রিয় রিভিউয়ার। তবে কমেন্ট যত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হোক, আপনাকে তার জবাব দিতে হবে খুবি মোলায়েম ভাষায়।
আবার অনেকে আছে বিশাল দুই তিন প্যারাগ্রাফ লিখে আপনার ধৈর্যবিচ্যুতি ঘটিয়ে একটি খুব সাধারন প্রশ্ন করেন। কয়েকপাতা রিভিউ কমেন্ট মোকাবেলা করতে হতে পারে। দমে যাবেন না। উত্তর দেবার বেলায় আপনি একিভাবে বিশাল গল্প ফেদে বসবেন না। উত্তর হবে সংক্ষিপ্ত, বর্ননামূলক ও সম্পূর্ন প্রাসঙ্গিক।

কমেন্ট দেবার পাশাপাশি রিভিউয়াররা একটি কাজ করে থাকেন। তা হলো পেপারটি কি পাব্লিশ করার উপযুক্ত কিনা তা নির্ধারন করা। এক্ষেত্রে তাদের জবাব ৪ ধরণের হতে পারে।

ক। এক্সেপ্টড
খ। এক্সেপ্ট উইথ মাইনর কারেকশন (এরমানে সামান্য ঘষামাজার পরে পাব্লিশ করা যাবে)
গ। এক্সেপ্ট উইথ মেজর কারেকশন (এরমানে ব্যাপক প্রিমার্জন-পরিবর্তন- পরিবর্ধন করতে হবে, মন মতো না হলে বাতিল)
ঘ। রিজেক্টেড বা বাতিল।

তিন/দুইজন রিভিঊয়ারের ভোটের গড় করে মূল সিদ্ধান্তটি এডিটর নিয়ে থাকেন। যেমন তিন জনের ২ জন যদি মাইনর কারেকশন দেন, আর একজন এক্সেপ্টেড দেন -তাহলে সিদ্ধান্ত আসবে মাইনর কারেকশনআবার একজন মাইনর কারেকশন আর দুইজন মেজর কারেকশন দিলে আপনার মেজর কারেকশন পাবার সম্ভাভাবনা বেশি।
বাতিল হলে আপনার করার কিছুই নাই।  ২ সপ্তাহ পরে পেপারটি নিয়া আবার বসেন। কমেন্টগুলা পড়ে ধীরে ধীরে পরিবর্তন করে, আরেকটি জার্নালে পাঠিয়ে দিন। আর যদি এক্সেপ্টেড হয় তাহলে কিছুই করনীয় নাই, এডিটর সাহেবকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইমেইল করুন। কো-অথারদের নিয়ে কাচ্চি খেতে যান।

যদি মাইনর কারেকশন পান, তাহলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করুন। বিনা হাঙ্গামায়, কোন তর্কে না গিয়ে নামে নামে কমেন্টগুলোর জবাব দিয়ে দ্রুত পাঠিয়ে দিন।

আসল সমস্যা মেজর কারেকশনে। অনেকে কমেন্ট সহ্য করতে না পেরে পেপার উইথড্র করে অন্য জার্নালে দেন। এইটি একটি ভূল সিদ্ধান্ত। বুঝতে হবে, নুতুন সাবমিশন করলে আরো বেশি সময় যাবে। কারন সেক্ষেত্রে আবার প্রথম ধাপ থেকে রিভিউ শুরু হবে। তাই সময় নিয়ে (১- ২ মাস) হলেও কমেন্টগুলোর জবাব দেয়া উচিত।

* কমেন্টের জবাব একটি আলাদা ফাইলে জমা দিতে হয়। এটাকে বলে "রেস্পন্স লিস্ট"। 

* প্রতিটি কমেন্টের সাথে আলাদা রঙ দিয়ে পরস্কার করে একটি জবাব দিন। জবাবের সাপোর্টে সূত্র, রেফারেন্স দিতে পারেন। ছবিও দিতে পারেন।

* প্রতিটি উত্তর হতে হবে খুবি নম্র ভাষায়। ভূলেও রিভিয়ারকে আক্রমন করবেন না। রিভিয়ারের পয়েন্ট ভূল হতে পারে, তারাও মানুষতাড়াহুড়ায় তারা আপনার পেপার পুরোটা না পড়েই কমেন্ট করতে পারেন, যা কিনা আপনি পেপারে ব্যাখ্যা করেছেন। "We totally disagree", "For your information", "Please go through the book DDD, page no. 16"- এই রকম কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন। সবক্ষেত্রে রিভিয়ারের যুক্তি মেনে নিতে হবে এমন কথা নাই। তবে পালটা যুক্তি খুব জুতসই ভাষায় দিতে হবে।

* প্রত্যেক কমেন্টেই রিভিউয়ারের সবগুলো আঙ্গিক বুঝতে হবে এবং প্রতিটি আঙ্গিকেই উত্তর দিতে হবে। আংশিক উত্তর দেয়া পরিহার করতে হবে। 

* ক্ষেত্র বুঝে রিভিউয়ারকে সামান্য তেল দিন। এর বিকল্প নাই। 

* জ্ঞানী রিভিউয়ার সম্পূর্ণ নূতন বিষয় বা আঙ্গিকের অবতারনা করতে পারেন। এবং প্রশ্ন দিতে পারেন, কেন এই আলোকে পেপারে কিছু লেখা হয় নাই। হয়তো উঙ্ক বিহশ্যে রিভিউয়ারের জ্ঞান অগাধ। তাই সে আপনাকে গভীর জলে টেনে নিতে চাইবে। এমতাবস্থায়, সাইড দেয়াই সমীচীন। "The reviewer have pointed out a very unique research aspect. But unfortunately current research article is focused in KKK only. We hope to shade more light in future research endeavor."

* অনেক রিভিউয়ার একদম আনাড়ি কমেন্ট করতে পারেন। বা কনফ্লিক্টীং কমেন্ট দিতে পারেন। ধরেন, প্রথম কমেন্টে একটি জিনিস কেন যুক্ত করেন নি সেটি বললেন। আবার পঞ্চম কমেন্টে একি জিনিস কেন যুক্ত করেছি তা জানতে চাইলেন। অনেকক্ষেত্রে একি পেপার ২ মাস পরে দ্বিতীয়বার রিভিউ করার সময়, একি কমেন্ট দুবার করে ফেলতে পারেন। কারন প্রথম্বার কি কমেন্ট করেছিলেন উনি, সেটা ভূলে বসা স্বাভাবিক।  এসবক্ষেত্রে নম্রতা বজায় রেখে জবাব দিন। আর সরাসরি এডিটরের কানে ব্যাপারটি তুলুন।

রিভিউয়ায়দের যেসব বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়, সেগুলা নিচে দিলাম। আশা করি এথেকে পাঠক কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে, তা বুঝতে পারবেন

  1. Does the subject fall within the general scope of the journal?/ Is the topic of the manuscript appropriate for the Journal?
  2. Is this a new and original contribution?
  3. Is the information of significant interest to the readers?
    Is the title accurate and sufficiently descriptive of the content?
  4. Is the abstract sufficiently informative, especially when read in isolation?
  5. Are appropriate keywords given?
  6. Are the statistical methods used correct and adequate?
  7. Is the organisation of the article satisfactory?
  8. Does the content justify the length?
  9. Are the methods appropriate and scientifically sound?
  10. Are the conclusions supported by the data presented?
  11. Are the tables and figures well designed and add to understanding of the text?
  12. Is information in the tables and figures redundant?
  13. Are the references cited the most appropriate to support the manuscript?
  14. Should the manuscript be shortened?

এতকিছু শিখে-বুঝে এবং বছরব্যাপি গবেষনা করেও আপনি ভয়াবহ রিভিউ কমেন্ট পেতে পারেন। "আমি এমন খারাপ আর্টিকেল জীবনে রিভিউ করি নাই", " লেখকদের আবারো স্কুলে গিয়ে থার্মোদাইনামিক্স পড়া উচিত", "বিজ্ঞানের কোন শাখাতেই এইধরনের কোন পেপার পাব্লিশ করা সম্ভব না"। অভদ্র রিভিউয়ারের পাল্লায় পড়লে নিজেকে দূর্ভাগা ভাবুন। পেপার ইউথড্র করে এডিটরকে জানান আপনার অনুভূতির কথা। এবং অন্য একটি জার্নালে সাবমিট করুন। হ্যাপী পাব্লিশিং!

১ আগ, ২০১১

যেভাবে পাব্লিশ করবেন আপনার গবেষণা- থিসিস থেকে জার্নাল পেপার


শুরুতেই বলে নেই, এই লেখাটি যারা গবেষণা জগতে নতুন, প্রথমবারের মত আপনার আর্টিকেল কোন জার্নালে প্রকাশ করতে চান, তাদের জন্য। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেক আন্ডারগ্রাজুয়েট থিসিস আছে যা ভালো জার্নালে প্রকাশ করা সম্ভব। কিন্তু অনেক শিক্ষক এ ব্যাপারে উদাসীন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ততোধিক। শুধুমাত্র পাস করার জন্য লেখা হলেও, অনেক থিসিসের গুনগত মান আন্তর্জার্তিক জার্নালে প্রকাশ করার মত। এগুলো পরবর্তীতে বিভিন্ন স্কলারশিপ পেতে ছাত্রদের যেমন সাহায্য করবে, তেমনি শিক্ষকদের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ ফেলো/ পোস্ট ডক্টোরাল ফেলো হিসাবে মনোনায়ন পেতেও গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। বাইরের দুনিয়ায় ছাত্র-শিক্ষকদের উন্নতমানের পেপার লিখতে উৎসাহ দিতে আর্থিক পুরস্কার দিয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো গবেষনা প্রকাশণাকে তেমনভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয় না। মনে রাখতে হবে, রিসার্চ পাব্লিকেশন আমাদের দেশের ও ভার্সিটির নাম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যায়। এটি রিসার্চ কোলাবোরেশন ও আন্তর্জার্তিক গবেষণা অনুদান আনতেও বিশেষ ভুমিকা পালন করে।

কিভাবে আপনার থিসিসকে পেপারে রূপান্তর করবেন?
আন্ডারগ্রাজুয়েট ও পোস্ট-গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের থিসিস জমা দেবার পরে, সেটাকে পেপারে রূপ দেয়া খুবই সহজ একটি কাজ। পেপারের মূল গঠন থিসিসের চেয়ে অনেক কম হয়ে থাকে। ৬০০০শব্দে হয়ে যেতে পারে একটি পরিপূর্ন জার্নাল পেপার। থিসিস থেকে কাট ছাট করার এই প্রক্রিয়াটি করার জন্য দরকার হবে ২/৪ দিন সময়।
প্রথমে একটি আউটলাইন তৈয়ার করুন। যেমনঃ
১।টাইটেল ২।এবস্ট্রাক্ট ৩।কী-ওয়ার্ড ৪। ইন্ট্রোডাকশন ৪।বিষয় ভিত্তিক আলোচনা ১ ৫। বিষয় ভিত্তিক আলোচনা ২ ৬।রেজাল্ট ও ডিস্কাশন
৭।একনলেজমেন্ট ৮।কনক্লুশন ৯।রেফারেন্স

এরপর এই কাঠামোর ভেতরে লিখতে থাকেন।
১.ক। থিসিসের টাইটেল টিকে জার্নাল পেপারের টাইটেল হিসেবে চালিয়ে দিতে পারেন, অথবা কিছু স্পেসিফিক কি-ওয়ার্ড জুড়ে দিয়ে সুন্দর-সংক্ষিপ্ত কিন্তু বিশ্লেষনাত্মক একটি প্রাসঙ্গিক শিরোনাম দিতে পারেন। অথারলিস্টে শিক্ষার্থীর নাম, সুপারভাইজারের নাম ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন অব্দান যারা রেখেছেন তাদের নাম থাকা উচিত। এফিলিয়েশনে ভার্সিটির নামের সাথে ঠিকানায় একটি ভাল ইমেইল এড্রেস দিন। পূর্ণ নাম যুক্ত ইমেল এড্রেস দেয়াই প্রচলিতরীতি।
 ১.খ। এবস্ট্রাক্টটি সংক্ষিপ্ত হতে হবে। সাধারনত ৫০০ বা তার কম শব্দের মদ্ধ্যেই পুরো লেখার সারমর্ম এই অংশে প্রকাশ করতে হয় , জার্নালের গাইড লাইন অনুযায়ী। অবশ্যই আপনার পেপারের গুরুত্ব বুঝিয়ে কিছু ভুমিকা দিতে হবে। এরপরে খুব সংক্ষেপে পেপারে মূল কি বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে, কি কি মেথড ব্যবহার হয়েছে তার উল্লেখ থাকতে হবে। রেসাল্ট-ডিস্কাশন থেকে ধার করে কিছু রেজাল্টও এই অংশে যুক্ত করতে হবে।
১. গ। কী-ওয়ার্ডঃ ৫/৬ টি শব্দ নির্বাচনের মাধ্যমে আপনার লেখাটির মূল বিষয় ও সীমানা পরিস্কার করে ফেলতে হবে। কীওয়ার্ড হিসাবে বৈজ্ঞানিক টার্ম, প্যামিটারেরগুলোর নাম ব্যবহার করা যেতে পারে। টাইটেল থেকেও কিছু মূল শব্দ ধার করতে পারেন।
১.ঘ। থিসিসের ইন্ট্রোডাকশন থেকে নির্বাচিত অংশ নিয়ে জার্নাল পেপারের ইন্ট্রোডাকশন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ইন্ট্রোডাকশন সাম্প্রতিক রেফারেন্সযুক্ত করা উচিত, বিশেষ করে যেই জার্নালে পাঠাবেন- সেই জার্নালে প্রকাশিত কিছু পেপার অবশ্যই যুক্ত করুন। এই অংশে লেখার স্কোপ, তাতপর্য, গুরুত্ব, উদ্দেশ্য, আপনার পেপারের মূল আলোচ্য সমস্যার বর্নণা থাকতে হবে।
১. ঙ। বিষয় ভিত্তিক আলোচনাঃ এই অংশটি লিটারেচার রিভিউ থেকে নিতে পারেন। পেপারের রেজাল্টগুলোর প্যারামিটারগুলো বর্ননা করতে পারেন। যেসব ইকুপমেন্ট-যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে তার পরিচিতি ও একুরেসী দিতে হবে। এই অংশে যে মেথডলজি এই পরীক্ষার ব্যবহার করা হয়েছে, সেটাও থাকতে হবে।
১.চ। রেজাল্ট ও ডিস্কাশনে গ্রাফ ও টেবিল থাবে। প্রতিটি টেবিল ও গ্রাফের/চার্টের বর্ননা পাশাপাশি থাকতে হবে। ডিস্কাশনে প্রাসঙ্গিক কিছু পেপারের রেজাল্টের সাথে তুলনা থাকতে পারে।
১.ছ। একনলেজমেন্টঃ আপনার ল্যাব এসিস্টেন্ট, সহকারী, পরামর্শদাতা, আর্থিক সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এই অংশে উল্লেখ করুন।
১.জ। কনক্লুশনঃ রেজাল্টে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ন তথ্য এইখানে পয়েন্ট আকারে লিখুন। থিসিসে অনেক বড় করে লিখা থাকলে, সেখান থেকে কেটে ছেটে সংক্ষেপে দিন। অবশ্যি কিছু নিউমারিক রেজাল্ট থাকতে হবে, শুধু তুলনামূলক আলোচনা থাকলে চলবে না।
১.ঝ। রেফারেন্সঃ রেফারেন্স লিখার অনেক পদ্ধতি আছে। আপনি যে জার্নালে পাঠাবেন, সেখানে কোন পদ্ধতিতে লিখতে বলছে সে অনুযায়ী সাজান। যেমনঃ হার্ভার্ড, নাম্বারিং সিস্টেম। রেফারেন্স সাজানোর অনেক সফটওয়ার আছে, যেমনঃ END NOTE(http://www.endnote.com/ ), ProCite (http://www.procite.com/ ) ইত্যাদি। ইউটিউব থেকে এগুলোর ব্যবহারবিধি সহজে শিখতে পারবেন।


 কোথায় পাব্লিশ করবেন আপনার আর্টিকেল?
অনেক জার্নাল আছে, অনেক কনফারেন্স হচ্ছে প্রতি বছর আপনার বিষয়ে। কনফারেন্স পেপারের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রেই জার্নাল পেপারের মূল্য বেশি। সঠিক জার্নাল নির্বাচন আপনার পেপারকে দ্রুত পাব্লিশ করতে সহায়তা করে। শুরুতেই আপনার বিষয়ে কোন জার্নালগুলো ভালো, তা বুঝার জন্য আপনি যেসব পেপার সাইট করেছেন পেপারে, সেগুলো কোন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে তা দেখে নিন। ১০-১৫টি জার্নালের একটি তালিকা তৈরী করুন। এবার একটি করে জার্নাল সার্চ করে তার ওয়েবসাইটে গিয়ে ভালো করে নিচের তথ্যগুলো টুকে নিন।
ক. স্কোপ
খ. ইস্যু/ইয়ার
গ. ইম্প্যাক্ট ফেক্টর
ঘ. এডিটরের নাম ও ইমেইল ঠিকানা
এবার স্কোপ পড়ে নিশ্চিত হোন, কোন কোন জার্নাল আপনার বিষয়ের পেপার প্রকাশ করে। ইস্যু সুংখা প্রতি বছরে ৪ এর বেশি হলে বুঝবেন জার্নালটির প্রচুর পেপার দরকার হয়। এরমানে এদের সম্পাদনা ব্যবস্থা বেশ দ্রুত, আপনার লেখাটি প্রকাশ হবে কিনা তা দ্রুত জানাবে। কিছু জার্নাল ১ বছর পর এক্সেপ্ট করে, কিছু জার্নাল ৩মাস এর মধ্যেও এক্সেপ্ট করে। ১০দিনেও অনেক পেপার এক্সেপ্ট হয়েছে দেখা যায়। তাই পেপার সাবমিট করে ধৈর্য্য নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। স্কোপ নিয়ে কোন সন্দেহ থাকলে জার্নালের এডিটর বরাবর ইমেইল করে নিশ্চিত হতে পারেন (আপনার পেপারের টাইটেল ও এবস্ট্রাক্ট দিতে হবে)।
এরপরে আসে ইম্প্যাক্ট ফেক্টর। এটা আসলে বুঝায়, জার্নাল্টির পেপারগুলো কত বেশি অন্য পেপার দ্বারা সাইটেড হয়। উচ্চ ইম্প্যাক্টের জার্নালে পাব্লিশ করা কঠিন, কারন সেখানে লেখা পাব্লিশ করার জন্য অনেক পেপার এডিটরের কাছে আসে। কারন উচ্চ ইম্প্যাক্ট যুক্ত জার্নালে পাব্লিশ করা যেমন সম্মানের তেমনি এতে অনেক সাইটেশন পাবার সম্ভাবনা থাকে। ইম্প্যাক্ট ফেক্টর ৫ মানে, জার্নাল্টির প্রতিটি পেপার গড়ে ৫টি করে সাটেশন পায় প্রতি বছর। 
খেয়াল করে দেখবেন, অনেক জার্নালে পেপার পাব্লিশ করলে তারা লেখকের কাছ থেকে পাব্লিশ করার জন্য টাকা নিয়ে থাকে (৫০০-১০০০ডলার)। আবার অনেক জার্নালে ফ্রি পাব্লিশ করে। আপনার সংগতি বুঝে জার্নাল নির্ধারন করুন।
ISI ইন্ডেক্সড জার্নাল খুজতে পারেন http://science.thomsonreuters.com/cgi-bin/jrnlst/jloptions.cgi?PC=K
SCOPUS ইন্ডেক্সড জার্নাল খুজতে পারেন http://www.scopus.com/source/browse.url


কিভাবে পাঠাবেন আপনার পেপার?
অধিকাংশ জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক জার্নালে পেপার পাঠানোর অনলাইন সিস্টেম আছে, যেখানে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করে পেপারটির ফাইল আপ্লোড করতে হবে। আবার অনেক জার্নালে সোজাসুজি ইমেইল করলেই হয়। আপ্লোড করার আগে খেয়াল করে জার্নালের ‘অথার গাইডলাইন’ পড়ে পেপারটির ফরম্যাট করুন।
পাঠিয়ে দেবার আগে একটি কভার লেটার লিখুন, যেখানে ফরমালি এডিটর সাহেবকে আপনার পেপারটি পাব্লিশ করার অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি দিবেন। অবশ্যই আপনার পুরো নাম ও ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্টের ঠিকানা ব্যবহার করবেন চিঠির শেষে। লেখা শেষ হলে খুব সতর্ক হয়ে লেখার ফ্লো, বর্ননার খুত, গ্রামারের ভুল-চুকগুলো শুধরে নিন। এরপর সাবমিট করে অপেক্ষা করুন রিভিয়ারের কমেন্টের।

লেখাটি সায়েন্টিফিক বাংলদেশে প্রকাশিত http://www.scientificbangladesh.com//details/?pid=170&cat_id=5

৭ জুল, ২০১১

সার্বজনীন হরতাল স্কেল

ভূমিকম্প মাপার স্কেল আছে। ফলে দুনিয়ার যেই চিপাতেই হোক আপ্নে ঘরে বৈসা টিভিতে শুইনা...ঝাক্কিডা আন্দাজ কর্তার্বেন। চার্লস রিখটার এই স্কেল বানাইছিলেন।

দুধের ভেজাল মাপ্তে ল্যাক্টোমিটার আছে। গোয়ালা যতই ফালাফালি করুক...ল্যাক্টোমিটার ডুবাইলেই কাহিনী পরিস্কার।

হরতালের কোন স্কেল নাই। তাই বিটিভি সারাজীবন ভ্যানভ্যান কর্তেই থাকবো "আজ হরতালে জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। ব্যাংকগুলোতে লেন্দেন হয়েছে।" কথা সত্য। হরতালের দিনেই শুধু ঢাকার জীবন স্বাভাবিক থাকে। অন্যদিনগুলাতেই যা জ্যাম থাকে ...সেইটারে কোন ভাবেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বলা যায় না। আরেকদিকে বিরোধী সংবাদ মাধ্যমে থাকবে পুলিশের মাইরপিটের ছবি।

তাই হরতালে একটা পরিমাপক ইউনিট করা দর্কার। ব্যাপারটায় সায়েন্টিফিক জাস্টিফিকেশন আনার জন্য সিভিলের ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্য নেয়া যাইতে পারে...ঢাকার গুরুত্বপূর্ন কিছু পয়েন্টে এভারেজ ট্রাফিক চেঞ্জ দেখে এইটা করা জাইতে পারে...সাথে আরো কিছু ফ্যাক্টর যোগ-বিয়োগ-গুন-ভাগ কৈরা সর্বজনীন হরতাল স্কেল সূত্রে ফেলায়া ১০ এর মদ্ধে নাম্বারিং করা যাইতে পারে।

বাস পুড়াইলে ১০ পয়েন্ট
টেম্পু জ্বালানো ৫ পয়েন্ট
রিক্সা ভাংলে ২ পয়েন্ট
পুলিশের মাথা ফাটাইলে বেশি পয়েন্ট
এছাড়াও আহত-নিহত এইসব ফ্যাক্টর দিয়া হিসাবটা পাকা করা লাগব।

তবে এই স্কেলের নামকরন নিয়া খালেদা হাসিনার মদ্ধে ব্যাপক কাজিয়ার সম্ভাবনা আছে।

পাঠক, আপনি কি হাস্তেছেন? আমরা এত অসুস্থ ক্যান?




২ মে, ২০১১

একজন দরিদ্র পোস্ট গ্রাজুয়েটের সবিনয় নিবেদন

লাস্ট কাপুলোভ ইয়ার্স বিদাশে থাকার কারনে আমার নানান কিসিমের ইমেইল করতে ও পড়তে হৈছে। (শুরুতে ইংরাজী না কৈলে পাব্লিক বিশ্বাস নাও খাইতে পারে...তাই লেখকের খুদ্র প্রয়াস)। তবে এই প্রবাস জীবণে আর যাই হোক ইংরাজির চেয়ে খাটি বাংলার চর্চা বেশী হৈছে। কারন অভ্র এস্তেমাল করে শুধু বাংলা টাইপিং না...সাথে যুক্ত হৈছে পথে ঘাটে ফরেন বালিকাদের প্রতি নানান মন্তব্য নিখাদ বাংলায় করার অভিজ্ঞতা। আধুনিক বাংলায় এইটারে নাকি এখন 'ইভ টিজিং' কয়।

যাহোক, দরিদ্র পোস্ট গ্রাজুয়েট জীবণের কিছু বাংলা ইমেইল দিয়া পাঠকের মনোরঞ্জেনের ইচ্ছা নিয়া শুরু করছিলাম...সেইখানে ফিরা আসি।

একদা ইউরোপে যাইবার জন্য মনে বড় টান আসছিল। এর মূলে আছে "ইউরো ট্রিপ" নামের একটা মুভি। এই থিকা আমরা কিছু নালায়েক...ইউরোপ যাবার জন্য চেষ্টা চরিত্র করতে লাগলাম। কোন এক বেওকুফ জানি জানাইলো...জার্মান দেশের দাউদ স্কলারশিপে ব্যাফক পৈসা...কিন্তু এরজন্য দরকার সৈয়দ মুজতবা আলীর মত জার্মান ভাষায় দক্ষতা। এরপরে দলে বলে ভর্তি হৈলাম...জার্মান কালচারাল সেন্টারে...গোঊঊঊথে ইনিস্টিটুট (ইনিস্টিটিউট না কৈলাম...হৈব... ট্টূট...খুব খিয়াল কৈরা)...দলে ছিলেন সাফফাত ভাই, ইয়াকুত, রাসেল ভাই, হের রানা, শামস এবং আরো কিছু ভেন্ডারজেক্স পিপাসু ভাই ও বৈনেরা। নানা ইউনিভার্সিটির প্রস্পেক্টাসে্র কভারে প্রস্পেক্টিভ ললনাদের সবুজ ঘাসে শুইয়া বসিয়া পড়িতে দেখিয়া শিহরিত হৈতাম। একে অপরকে দেইখাইয়া গা টিপাটিপি করিতাম।  কিন্তু আফসুস...জার্মানির রাস্তায় জিলাপি বেচা আর হৈল না আমার...চিয়ার বয় রাসেল ভাই নাচ দেখায়া স্ট্রিট শো কোইরা বেড়াইতে চাইছিলেন...হৈল না। এক-এক জন এক-এক মহাদেশে ছিটকায়া পড়লাম।

মাস্টার্স শেষ কোইরা আবারো নিশা চাপ্লো...এইবার পিএইচডিতে ইউরুপ যামু...বাপ চাচারা জতই মানা করুক...
তাই কতিপয় ইউরোপীয় ডিগ্রীধারী ভাই-ব্রাদারদের (স্রষ্টার বিশেষ আশীর্বাদপুষ্ট) ইমেইল করলামঃ

প্রিয় ভাইও, সাথীও,

আসসালামু আলালিকুম

আপনারা নিশচই অবগত আছেন, আমার প্রবাস জীবণের ১.৫ বছর অতিক্রান্ত হইতে চলিতেছে। ইতমধ্যে আমার মাষ্টার্সের কাজ প্রায় শেষের পথে। আশা করা যায়, মে ২০১০ এর মধ্যে থিসিস জমা দেয়া যাইবেক। এমতাবস্থায়, বিবাহ জরুরী হইয়া উঠিয়াছে। কিন্তু বিবাহের নিমিত্তেই পিএইচডির এডমিশন নেয়াও জরুরীতর হইয়া দেখা দিয়াছে। কেননা, বিবাহ বাজারে বেকার পোস্টগ্রাজুয়েটের মূল্য শুন্য...

আপনারা  আরো ।ইউরোপ আমার স্বপনে শয়নে আসিতেছে...অন্যদিকে GRE আসিতেছে দুঃস্বপ্নে। মশায়ের অবগতির জন্য জানাচ্চি, আমার অর্ধশত ব্লগ পোষ্টে জাহার খানে্ক হিটের পাশাপাশি কিছু বিজ্ঞান বিষয়ক ফ্লপ প্রবন্ধ রহিয়াছে, সুগুলো পাব্লিকেশন লিস্টে মেইলের সাথে বাধিয়া দেয়া হইল। অবগত আছেন যে, ইংরাজী ভাষা সাহিত্যে (GRE) আমার অরুচী প্রগাড়।
আপনাদের সুচিন্তিত মতামত প্রত্যাশী...

বাঙ্গাল

ফলাফল হৈল আরো হালি খানেক রিজেশন...ইউরোপের নানান প্রান্ত হৈতে...রিজেকশন লেটার গুলান বাংলায় তরজমা করলে দাড়ায়ঃ

সম্মানিত আহাম্মক, পিএইচডি কামলা পদে আবেদনকারীদের মধ্যে এইবার অনেক উচ্চমানের আহাম্মক ছিলেন...তাদের মধ্য থেকে খুব কম সংখ্যককে আমরা নিতে পারছি। সেইজন্য আমাগ মনে অনেক দুক্ষু! এইবারের জন্য ক্ষান্ত দেন, আগামীবার ভালো কিছু কৈরা আবার আইসেন...দেখবানে কি করা যায়। (ডু নট রিপ্লাই টু দিজ মেইল...ইনাফ এজ ইনাফ!)


হুম। বিধর্মী রাষ্ট্রে গিয়া ডিগ্রী অর্জনের সৌভাগ্য আর হৈয়া উঠলো না।

২৫ মার্চ, ২০১১

ঢাকায় থাকি

দেশ থেকে ঘুইরা আসলাম.....এয়ারপোর্টএ ব্যাপক কাজ কাম চলতেছে দেখলাম ...নুতন টাইলস, আলোক-সজ্জা, ফুলের গাছে ডেকোরেশন ...দেইখাই মন্ডা ভালো হইয়া গেল ...দেরিতে হইলেও বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করছে ঢাকা ...

দিনাজপুর থিকা ঢাকায় আসার সময় বাস কাউন্টারে ঘন্টা খানেক অপেক্ষায় ছিলাম ..কাউন্টারের কোনায় একটা কালার টিভি ছিল...সময় সুজোগ বুইঝা টিভির রিমোট খান দখল নিয়া চ্যানেল ঘুরায়া দেশ টিভি দিলাম...খবর হইতেছে...শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের ধৈরা পুলিশ বেধড়ক পিটাইতেছে..আর কোনো দেশে বিনিয়োগকারীদের পিটানো হয় কিনা জানা নাই... মাল মুহিত স্যাররে কথাডা জিগান দরকার...তেনার অনেক জ্ঞান...

তবে পুলিশের মাইর-পিটের খবর শেষ হইতেই একজন দাবি করলো...সে স্টার প্লাস দেখবে....বেশ মুরুব্বি লোক ...
আমি একটু বেয়াদপি কৈরাই রিমোট নিয়া বইসা থাকলাম..না শুনার  ভান ধইরা ...
কিছুক্ষণ বাদে আরেকজন কইলো...কি জানি একটা সিরিয়াল...এখন নাকি শুরু হইছে ..তাড়াতাড়ি সেই চ্যানেল দেন ..আমি রিমোট আগায়া দিয়া বললাম "আপনি চ্যানেল খুইজা দেখেন"...

সিরিয়াল শুরু হইলো...কিছুক্ষণের মধ্যে টিভির সামনে ভিড় একটু বাড়ল...সিরিয়ালটার মূল বিষয়ঃ কার জানি বিয়া হইতেছে...এর মধ্যে একই পরিবারের জনৈক কুটনা ও কুটনি চালবাজি কইরা বিয়াটা বন্ধ করার পায়তারা করতেছে...সিরিয়াল শেষ হওনের আগেই পাত্র পাত্রীরা এরপরের সিরিয়ালের হালকা একটা বিজ্ঞাপন দিয়া দিল...বাহ ...এই অভিনব বিজ্ঞাপনপন্থা দেইখা আমি টাসকি ...
একটা নাটক একজন লোক লেখে...তার ডায়ালগ সিকোয়েন্স সাজানো থাকে...এর মইধ্যে হুট কইরা যারা একটা বিজ্ঞাপনী সংলাপ ভইরা দিতে পারে...তাদের ব্যবসা সচেতনতা থাকলেও শিল্প সচেতনতা কতটুক আছে তা নিয়া আমার সন্দ হয়.

এইবার দেশে গিয়া আরেকটা অভিজ্ঞতা হৈছে রাস্তায় নাইমা... প্রথম কয়েকদিন কপাল গুনে গাড়ীওয়ালা বন্ধুদের কাছে লিফট পাইছি। কিন্তু একদিন আইজুদ্দিন আটকায়া পড়ল। ৯টার সময় খিলক্ষেত থিকা বাসের জন্য টিকিট কাইটা খাড়াইলাম। সাড়ে ৯টায় দেখালাম...আমার আশেপাশে একটা জন সমুদ্র তৈয়ার হোইছে...যা শুধুমাত্র উন্নত দেশে স্টেডিয়ামে দেখা যায়। আমার বাস আস্লো- চৈলাও গেল। লাইন হৈয়া গেল আকাবাকা। এরপরে আর কোন বাস থামলোই না। আমি বুঝলাম আজকাল দেশে সোজা আঙ্গুলে ঘি দূরের কথা, জ্যাম-জেলি কিছুই উঠে না। লাইন থুইয়া হাটা দিলাম। উত্তরাভিমুখে। ৩/৪ মিনিট পরে দেখলাম...আরো অনেকেই এইরম সামনে গিয়া খাড়ায়া আছে...ফুটপাতে মানুষ ভরা, তবে ভিড়টা পাতলা। আরো সামনে আগাইলাম। আগাইতে আগাইতে নিটোলের বিল্ডিং পর্যন্ত আইসা পড়লাম। এরপরে একটা বাস পাইলাম...কারে জানি নামাইতে একটু স্লো করছিল... হেল্পাররে একটা কুনি মাইরা উইঠা পড়লাম। ২ ঘন্টা পরে শাহবাগ। আহ! এই শহরের লোক গুলান কি ২ বছর পরের কোন চিন্তা মাথায় রাখে? জাপানের মত ভূমিকম্প (আল্লাহ না করুক) একটা ডান বাম দিয়া হোইলেও কি অবস্থা হৈব ভাইবা, পাব্লিকের লুঙ্গির গিট আলগা হোইয়া যাওয়া উচিত।

জাপান এখন

৮ জানু, ২০১১

টুট টূট 2010

২০১০ সালে আমার সবচেয়ে বড় আবিস্কার টুইটার। আমার টেকি জ্ঞানের বহর সম্পর্কে পাঠকের ঠাহর হাল্কা ধাক্কা খাইলো নাকি? বাংলাদেশে টূইটারের ব্রান্ড এম্বাসেডর @aminulahsan এর কাছে হাতেখড়ী হয় ২০১০ এর মে মাসে। তার ব্যাপক আগ্রহ...টুইটার জিনিস্টা নাকই জব্বর। আমার কাছে অবশ্য সেইরম মনে হইলো না। ১৪০ ক্যারেক্টারের মধ্যে চাইপা চুইপা লেখার অভ্যাস আমার কুঙ্কালেই ছিল না। ছুটুবেলায় মাস্টারে শিখাইছে বড় বড় ফাক ফাক কোইরা উত্তর দিতে। বাড়ায়ে ছাড়ায়ে লেখতে। কারন তাইলে নাকই লাম্বার বেশি পাওয়া যায়। আফসুস...আমি যা লেখি তাই এখন ১৪০ ছাড়ায়া গিয়া মাইনাসে চৈলা যায়...

তবে টুইটারকে বড় আবিস্কার ভাবার মূল কারন, টুইটার না, টুইটারের মানুষ গুলান। পুলাপাঙ্গুলান খুবি পাগলা কিসিমের। ২/৪ দিন কিছু টূট না করলেই এরা সমানে টূটুট গালি দেয়া শুরু করে। এদের টানেই (ঝাড়িতেই) কিছু টূট করা হোইছে গেল বছর। আজকের নোটটা তার সংকলন মাত্রঃ

২জুনঃ ক;ফেইসবুক আমারে কৈছে পাজামা(privacy settings) ঠিক কর্তে...আমি কৈছি "পারলে টান দিয়া দেখ!"
খঃ Another newspaper ban in Bangladesh! Youtube, facebook, daily newspaper...whatnext? blog-sites?

১৬ জুনঃ ক।ওরে ভিসি তুই কোন দল/ চল গিয়া দেখি ফুটবল

১৯ জুনঃ তুমার ভালোবাসা রাইখো ফ্রিজে, ঘৃনাগুলান ওভেনে/ গভীর রাইতে ফিরমু আমি, তুমার প্রেমের গহীনে।

৩ জুলাইঃ Maradona Starts match preparation by scolding referees..damn smart. #worldcup will lose remaining 50% attractions without him. Love u man!

৮ জুলাইঃ ATNবাংলা যদি মূসা ইব্রাহীমরে স্পন্সর কর্ত তাইলে পেপারে খবর আসত "বাংলাদেশী তরূনের 'ইভা'রেস্ট জয়"!
 How many mountains must a man climb down, before you call him a Musa Ibrahim!#Bangladesh#Prothomalo

খিদা লাগছে...হনারেবল হাইকোর্ট...আমারে কিছু মামলা দেন...খাই।
২৬ আগস্টঃ সংবিধানটা পেন্সিল দিয়া লেখা উচিত ছিল...তাইলে বারে বারে কাটাকুটি করা লাগতো না...স্যাপ দিয়া ডৈলা লৈলেই হৈত।

দেশের সেমি নির্র্বোধ তরুণ সম্প্রদায় নিয়া আমি খুবই হতাশ #YabaGeneration


২৭ আগস্টঃকাজী নজরুল বাইচা থাকলে টুইট কইরা ভাসায়া ফেলতেন..কারণ উনারতো কাগজ কলম কিনার পয়সা থাকত না, মোবাইলে টুইট করতেন খালি:D

১ সেপ্টেম্বরঃ দেশে নুতন গাড়ি কিনা আর নুতন বিয়া করা একই...দুইটাই রিকন্ডিশন্দ #লিটনেরফ্লাট_জেনারেশন

৩ সেপ্টেম্বরঃ Greatest Science Fiction Writer of this Godless Universe #Stephen Hawking

গরিব হওয়ার অনেক জ্বালা- জসিম #GoriberPrem

৪ সেপ্টেম্বরঃ রাজীব তুই একটা ছোটলোক-অপূর্ব/অপূর্ব তুই একটা বেইমান -রাজীব/প্রভা ভিডিওটা চাইরা ভালা করলা না -রাজীব #MathaNosToMaaN

৮ সেপ্টেম্বরঃ বাসার সামনের মাঠে খেইলা অর্র্জেন্তিনা যে ফাল দিছে, তাতে তাগো একটা ওয়ার্র্ল্ড কাপ না দিলেই না ....#শ্রমের_মর্যাদা

১০ সেপ্টেম্ম্বরঃ #Obama said "Quran burning is destructive",Indeed! bcz its the nature of burning!

১৫ সেপ্টেম্ম্বরঃঢাকাবাসীর এখন খাটের তলায় ঘুমানো উচিত।#Earthquake #Again&Again

১৬সেপ্টেম্ম্বরঃদুপুরের ঘুম ঠেকানো যায় না, আর রাতের বেলায় সে আসে না ...ঘুম: তুই বড় লস্কর

২৪ সেপ্টেম্বরঃ How many chat box must a man open, before u call him bachelor? #JatiBIYApagla

২৯ সেপ্টেম্বরঃপাবনার ডিসি, এসপি, ওসিকে দৃষ্টান্ত মূলক শান্স্তি দেয়া হোক...কত্ত বড় সাহস ছাত্রলীগের হাতে মাইর খায়া আবার কান্নাকাটি করে

১৪ অক্টবরঃ শ্যাকিব তুমি এগিয়ে চলো, আমরা আছি টিভির সামনে

২০ অক্টবরঃ -বদি, তোমার কি ভয় কর্তেছে? # ছি ছিঃ আমার ভয় কর্বে ক্যান বাকের ভাই?

৮ নভেম্বরঃ আগে মেম্বার চেয়ারম্যানের ভাস্তারা রেইপ করত, এখন ইভ টিজিং করে #DigitalPREM

ট্রানজিট নিয়া বিএনপির ধর্ফরানি দেইখা গন্ডারের কাতুকুতির গল্পটা ইয়াদ আসল #JatirGhumVangse

১৪ নভেম্বরঃ দেশের রাজনীতিতে মাথায় সক্রিয় মগজযুক্ত প্রাণীর বড় অভাব

১৪ নভেম্বরঃ গরু আগামীকালের হরতালের আওতামুক্ত থাকবে, কারণ বিএনপি একটি গরুবান্ধব রাজনৈতিক দল

১৫ নভেম্বরঃ Iawami-Service Public Relations Directorate (ISPR)

১৭ নভেম্বরঃPrince William has given his fiancee Kate Middleton his late mother Diana's sapphire and diamond engagement ring #rajaBadsharPREM

১৯ নভেম্বরঃ#DontAskDontTell that u r a gay. Just do the job in #USArmy.Kill some innocent bloody civilian in #Afghanistan #Iraq #Pakistan.#Senate

১৭ ডিসেম্বরঃদুনিয়ার সকল পোস্ট গ্রাজুয়েটের একমাত্র কমন বিনোদন...সুপারভাইজারকে গালি দেয়া #bangal

২২ ডিসেম্বরঃ WikiLeaks cables: US pushed for reopening of Bangladesh coal mine http://t.co/KTdPb26 via @guardian

এছাড়া অনেক মজার মজার টুট পেইছি। ফেইসবুকবাসিদের জন্য কিছু শেয়ার করতেছি।

by palashmustafiz:  "জাতীয় পার্টি দেশে সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়েছে": এরশাদ..http://bit.ly/d5UKWq .Hit me in my ass so i can stop laughing.

by NaomiAKlein Rape is being used in the #Assange prosecution in the same way that women's freedom was used to invade Afghanistan. Wake up! #wikilieaks

by sifat2188 porikkhar khatay 140 character er besi lekte issa kore na :s #twitter #fb

সেরা ট্রেন্ডজ ছিল #mathaNOSTOmaaan #ProvabitoJati (প্রভা স্ক্যান্ডালের সময় চলছে) #JatiJanteChay