২৯ মার্চ, ২০১০

গুরু ধরিতে বাঙ্গাল পুনরায় ঢাকায়

পূর্ব পাঠের পুনরালোচনাঃ বাঙ্গালের মিথ্যা ইমাম সাহেব ফাস করিয়া দেয়ায় গ্রামে ছি ছি রব উঠিল। একি করিল বাঙ্গাল? সামান্য একটুকরা জমিনের জন্য আপন দাদির পেটের চাচার নামে মিথ্যা অপবাদ। এত জ্ঞানপাপী!

বাঙ্গাল এই অপমান সইতে না পারিয়া। গ্রাম ত্যাগ করিল। সে বুঝিল, তাহার দরকার একজন মুরুব্বি। চট করিয়া মাথায় আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালার গুরুর নাম আসিল। হুম। সেবার বেমক্কা প্রশ্ন করিয়া মশায়ের ধুতিতে টান ফেলিয়া... বড় শর্মিন্দায় ফেলাইয়াছিল বাঙ্গাল। এবার গড় করিয়া পেন্নাম দিয়া তার প্রায়সচিত্ত করিবে বলিয়া সে মনে মেনে ঠিক করিয়া নেয় সে।ঢাকায় আসিয়া সোজা পাঠশালার দিকে রওনা হয় সে। পাঠশালায় আসিয়া বাঙ্গাল থমকিয়া দাড়াইল।একি। দরজা বাহির হৈতে বন্ধ। দেয়ালে সেই পুরানো নোটিশটাও আছে "কুকুর ও ছাগু প্রবেশ নিষেধ"। পাঠশালার নোটসমূহ বারান্দায় ছড়ানো। কিন্তু গুরুর দেখা নাই। প্রবেশদ্বারে গুরুর খড়ম জোড়াও নাই। তবে কি পাঠশালা বন্ধ হৈয়া গিয়াছে?

বাঙ্গাল কিছুক্ষন ঠায় দাড়াইয়া রয়। তারপর সে পথে পথে ঘুরিয়া বেড়ায়। উদ্ভ্রান্ত বাঙ্গাল তার আধুনিক ইতিহাসের পাঠ এখন কার কাছে লৈবে? কোথায় তার গুরু? প্রখর রদ্দুরে ঢাকার পথে পথে ঘুরিয়া বাঙ্গাল শ্রান্ত হৈল। সারা সকাল ঘুরিয়া ব্যর্থ হৈয়া এক বাড়ির সামনে আসিয়া তার পা থামিয়া গেল। দুয়ারে আঘাত করিতে ভিতর হৈতে ৮/৯ বৎছরের এক বালক দ্বার খুলিয়া উকি দিল।

বাঙ্গাল বলিল "দিদি, আমায় একটু জল দিবে?"
বালক মুখ ঝামটা দিয়া বলিল "আপনার মাথা ঠিক আছে...মশাই?"
বাঙ্গাল ক্লান্ত হৈয়া মাটিতে বসিতে বসিতে কহিল "গুরু হারাইলে কি মাথা ঠিক থাকে মা!"
----------------------------------------

সিরিজের অন্যান্য লেখা
আধুনিক ইতিহাসের জনককে বিদায় জানাইতে বাঙ্গাল উইঠা খাড়াইছে...ঐ তোরা তালি দে!

আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালায় বাঙ্গাল, 'আ' তে আওয়ামী, 'ব' তে বাকশাল

আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালায় বাঙ্গাল-দ্বিতীয় খন্ড।

২৭ মার্চ, ২০১০

আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালায় বাঙ্গাল, 'আ' তে আওয়ামী, 'ব' তে বাকশাল (দ্বিতীয় খন্ড)

পূর্বপাঠের পুনরালোচনাঃ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের নির্দেশে ইতিহাসে কাচা বাঙ্গাল বোলগে গিয়াছিল "আধুনিক ইতিহাস" শিখিতে। 'আধুনিক ইতিহাস' শিক্ষার পাঠশালায় গিয়া বিবাদে জড়াইয়া বাঙ্গালের নাম কাটা গেল। ফিরিবার কালে তার চটি জোড়াও খোয়া গেল।
------------------------------------------------------------------------------
কিন্তু অর্জনটাও কম নহে। গ্রামে ফিরিয়া নব্য ইতিহাস জ্ঞান ছড়াইয়া সে বেশ খ্যাতি পাইয়াছে। এ বাড়ির মিষ্টি কুমড়ো, ও বাড়ির পাকা কলা ইনাম আসিল।১০ গ্রামে এরম কথা কেউ বলিতে পারিয়াছে? দিকে দিকে তার বাণী ছড়াইয়া গেল। "বাকশাল ছিল দ্বিতীয় বিপ্লব, সমাজতান্ত্রিকমন্ত্রের বিপ্লব। যাহারা উহাকে স্বৈরশাসনের রুপকল্প বলে তাহারা আসলে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি"। তবে লোকে আরো জানিতে চায়। তাহারা আরো শুনিতে চায় বাঙ্গালের কাছে। বাঙ্গাল ভাবিয়া পায় না, সে নুতন কি বলিবে। কোথা হৈতে বলিবে, সবি তো ইতিহাস। সকলে দেখিয়াছে। বানাইয়া বলিলেতো ডাহা মিথ্যা হৈবে। এদিকে আমাগোবোলগের আধুনিক ইতিহাস শিক্ষার দুয়ারো বন্ধ।নাম কাটা। আর কে যায় ওপথে আবার চটি জোড়া হারাইতে!

অনেক ভাবিয়া একদিন প্রভাতে বাঙ্গাল ঢাকার পথে রওনা হৈল। ঝোলায় আধুনিক ইতিহাস শিক্ষার নানান ফরমান। ঢাকায় আসিয়া সে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডের রাস্তায় ঘুরিতে লাগিল। জনে জনে জিজ্ঞাসিল "আধুনিক ইতিহাস শিক্ষা কোথা পাই?"। এরুপ কোন ডিপার্ট্মেন্টের কথা কেহ বলিতে পারিল না। শেষে এক রিক্সাচালক ভ্রাতা বলিল "পাব্লিক লাইব্রেরী যান মামা, উহা জ্ঞান ভান্ডার"। পাব্লিক লাইব্রেরীতে গিয়া বাঙ্গাল নানা পুস্তক ঘাটিল। কিন্তু নুতন কিছুই পাইলো না। কোথায় আধুনিক ইতিহাস? সবি তো গ্রাম্য বিদ্যালয়ে পড়ানো সেই পুরাতন ইতিহাস লাগিচ্ছে। মোটা মোটা বই টানিয়া বাঙ্গাল হাপাইয়া উঠিল। শেষে পুস্তক ছাড়িয়া পত্রিকা ধরিল। সহসা তাহার জ্ঞান নেত্র উন্মোচিত হৈল। আহা! ইহাই তো খুজিতে ছিলাম। খাতা খুলিয়া বাঙ্গাল খসখস করিয়া নোট লৈতে থাকিল।

"দুনিয়া কাপানো ত্রিশ মিনিট"- ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বিষয়ে ২০১০ সালের পূর্বে কেহ এই বিষয়ে আলোকপাত করে নাই। শেষমেষ গ্রাম্যমুঠাফোন আর শহুরে প্রথম আলোই ইহা ইতিহাসের খনি হৈতে টানিয়া তুলিয়া লোকের সুনাম কাড়ীল। ইহা আধুনিক ইতিহাস না হৈয়া যায় না।

“ভাষা আন্দোলনে শেখ মুজিবের অবদান”...হুহু...ইহাও নুতন,২০১০ সালের আগে কেহ এরুপ দাবি করে নাই। ১৯৫২ সালে তরুন যুবা শেখ মুজিব সুদূর কলিকাতায় বসিয়া সুতা টালিয়া বাংলা ভাষাকে রক্ষা করেছেন।গুনীলোকের কর্মপ্রক্রিয়াই অন্যরকম। ইহারা স্থান-কাল-পাত্রকে জয় করিয়া কোথা হৈতে কবে উদয়, কাহাকে কুপোকাত করে বুঝা যায় না।
যথেষ্ট। বাঙ্গাল গুলিস্তান আসিয়া বাসে উঠিল।বাস যাত্রায় সে শুধুই ভাবিল। তাহার তন্ময় ভাবনা সুদূর প্রসারী।

পরদিন গ্রামের মুরুব্বি জমায়েতে বাঙ্গাল তার খাতা খুলিয়া জ্ঞান বিতরন সারিল। একি শুনাইলো বাঙ্গাল। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা-সকলের মুখ সদ্য প্রস্ফুটিত শাপলার ন্যায় প্রসারিত হৈল। খাতা নামাইয়া রাখিয়া বাঙ্গাল বলিয়া চলিল “ভাষা আন্দোলনের সেই ত্রিশ মিনিটের আন্দোলনে যোগদিতে আমার বাবাও ঢাকা গিয়াছিল। মিছিল করিয়াছিল। শেষে পুলিশের ধাওয়া খাইয়া গ্রামে ফিরিয়া আসিয়াছিলেন। কিন্তু টিয়ারগ্যাসের প্রভাবে তাহার চোখে সমস্যা দেখা দেয়। এই সুযোগে তমিজ চাচা জমির দলিলে বাবার সাক্ষর করাইয়া জমির দখল লৈয়াছে।”
তমিজ মিয়া দাড়াইয়া ছাতি উচাইয়া কহিল “তবেরে! ছ্যাপ দিয়া গুনিয়া তোর বাবারে জমির দাম দিয়াছি। ভুলিয়া গিয়াছিস!”
বাঙ্গাল নির্লিপ্ত “ভাষার জন্য লড়াই করিতে গিয়া আমার বাবা জমিন হারাইয়াছেন। তোমরা আমার জমিন ফিয়াইয়া দাও। তমিজ চাচা...স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি...ছলেবলে সে জমিন দখল নিয়াছে”। সকলে গুঞ্জন তুলিল। একিরম কথা, চাচা হৈয়া ভাতিজার হক মারিয়া দিল তমিজ! বেশ গোল বাধিল।

গ্রামের মসজিদের ইমাম কলহ থামাইতে বলিল "শোনো বাবা, বাঙ্গাল। তোমার বাবা আমার বাল্য বন্ধু ছিলেন। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী আমরা একত্রে পলাইয়া সিনেমা দেখিতে শহরে গিয়াছিলাম। আল্লাহ মাফ উনার আত্মার শান্তি দিন"
----------------------------------------
অন্যান্য রম্য লেখা
আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালায় বাঙ্গাল, 'আ' তে আওয়ামী, 'ব' তে বাকশাল-প্রথম খন্ড
ক্যান্টিনে শোরগোল!- বাই বুয়েটিয়ান ফর বুয়েটিয়ান অফ বুয়েটিয়ান
বুয়েটের ঝড় ডুয়েটেও আসিতেছে! হুশিয়ার!
নয় রশি পীরের(RP9) তাবীজ!

২২ মার্চ, ২০১০

আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালা, 'আ' তে আওয়ামী, 'ব' তে বাকশাল

ইতিহাসে বাঙ্গাল বরাবরই কাচা ছিল। কিছুতেই সন মনে রাখিতে পারিত না সে। তারপরেও কি করিয়া যেন সে পরীক্ষায় টানিয়া টুনিয়া পাশ করিয়া ফেলাইত। বিদ্যালয়ের ইতিহাস শিক্ষকের নজরে ব্যাপার খানা ধরা পড়িল। তিনি উপদেশ দিলেন...আধুনিক ইতিহাস কিছু শিখিতে চাস তালে... বোলগে যা। শিরোধার্য গুরুপদেশ।আধুনিক অনলাইন শিক্ষা। বাঙ্গাল আমগোবোলগে আর সামু বোলগে একাউন্ট খুলিল। খুজিয়া বেড়াইলো আধুনিক ইতিহাস শিক্ষার বোলগ। নানা লিঙ্ক ঘুরিয়া সে আধুনিক ইতিহাস খুজিল। শেষে পাইল ফুফার বোলগ। সেখানে সে আধুনিক ইতিহাসের জ্ঞান লাভ করিয়া গুরুর নিকট ফিরিল।

- তো বল, কি শিখিয়া ফিরলি!
- জ্বী। ফুফার বোল্গে দেখিলাম "হাজার বছরের শেষ বাঙ্গালী শেখ মুজিবর প লাশীর প্রান্তরে সিরাজকে ল ড়িবার নির্দেশ দিয়াছিলেন। কিন্তু অনভিজ্ঞ সিরাজ উনার নির্দেশ সঠিকরুপে পালন করিতে না পারিয়া, পলাশীর বাজারে বাংলার স্বাধীন তার সূর্য টানিয়া নামাইয়াছে। পরবর্তীতে সেই স্বাধীনতার সূর্য আবার টানিয়া উঠাইয়াছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী।"
বর্ননা শেষ হৈবা মাত্র বাঙ্গালের গালে চড় পড়ীল।
গুরু মশায় চটিয়া কহিলেন "এ তোর আধুনিক ইতিহাস শিক্ষা হৈল? অনলাইনে বসিয়া জ্বালা ডট কমের চটি পড়িলেও এর চেয়ে ঠের ভাল শিক্ষা পাইতি।"
মশায়ের মুখে একি কথা। রাম রাম। বাঙ্গাল মিউ মিউ করিয়া শুধাইল " তালে কোন বোলগ পড়িব?"

- হুম। জ্বালা ডট কমের দন্ডমুন্ডির কর্তা লিখিতেছেন আমাগোবোলগে। উহা পড়িয়া জ্ঞান বৃর্দ্ধি করিয়া আয়।

পরদিন প্রভাতে বাঙ্গাল স্নান সারিয়া আমগোবোলগে গেল। বোলগের প্রবেশ দ্বারে বড় করিয়া "ড়াজাকার ও কুকুর ঢুকিতে মানা" লেখা। বাঙ্গাল বুঝিল গুরু তাহাকে সঠিক শিক্ষকের সন্ধান দিয়াছেন। চটি জোড়া খুলিয়া সে প্রবেশ করিল।ইহা স্বাধীনতার স্বপক্ষের ইতিহাস শিক্ষক না হৈয়া যায় না। আধুনিক ইতিহাসের চর্চাতো ইহারাই করিতেছে। গুরু বলিয়াছিলেন "আধুনিক ইতিহাসই প্রকৃত ইতিহাস। যে ইতিহাস তোর বাবা-দাদা পাঠ করিয়াছে, কিন্তু ভূলিয়া ভ্রম ঠাউরাইয়াছে...এবং বতর্মানে সে ইতিহাস 'স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি' ঘবেষনা করিয়া টানিয়া তুলিয়া আনিয়াছে উহাই আধুনিক ইতিহাস।"

সুন্দর পাঠশালা। গুছানো। আধুনিক পিসি। স্ক্যানার। ভিডিও ক্যামেরা। আর একখানা পুরানো টাইপ রাইটার এক কোনায় পড়িয়া আছে। আধুনিক পিসির পাশে পুরানো টাইপ রাইটারের কি জরুরত তাহা বাঙ্গালের ক্ষুদ্র খুপ্রিতে ঢুকিল না।

মনিটরে সদ্য লিখা একখানা বোলগ দেখিল। "দ্বিতীয় বিপ্লব বা বাকশাল : শুনুন বঙ্গবন্ধূর মুখেই"। বাঙ্গাল দ্রুত টুকিয়া লইল খাতায় লিঙ্কঃ http://omipial.amarblog.com/posts/101959

কমেন্টে গিয়া বাঙ্গাল প্রশ্ন রাখিল "বাকশাল গঠন করিয়া উহাকে দ্বিতীয় বিপ্লব বলিয়া উহার শীর্ষপদে নিজেই আসীন হৈয়া 'হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী কি গণতান্ত্রিক কাজ করিয়াছে?'
-উত্তর আসিল। "উহা গণতান্ত্রিক নহে মূর্খ ... সমাজতান্ত্রিক সীদ্ধান্ত। তুই কেরে ...উনাকে তাচ্ছিল্য করিস!"

বেয়াড়া বাঙ্গাল শুধাইলো "গুস্তাফি মাফ করিবেন জনাব। শিক্ষার উদ্দেশ্যে আরো একখানা প্রশ্ন রাখিতে চাই। সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়িবার সাধ থাকিলে তা প্রথমেই কেন করা হৈল না। কেন হঠাত ৩ বছর রাজকার্য চালাইবার পর সব রাজনৈতিক দলকে নির্বংশ করিয়া বাকশাল করিতে হৈল। বিরোধীরা কি বড় বেশী গোল বাধাইতেছিল? আর যদি ইহা উনার শেষ খোয়াব হৈবে...তাহা হৈলে আওয়ামী সরকার তাহা বাস্তবায়ন না করিয়া ক্যানো বহুদল লৈয়া ভেজাল পাকাইতেছে? আজ উহাকে পিটায়...কাল তাহার মাথা ভাঙ্গে "

আর বরদাস্ত হৈল না।আধুনিক ইতিহাসের পাঠশালা হৈতে বাঙ্গালের নাম কাটা গেল। তাহার অপরাধ... সে বড় বেয়াড়া প্রশ্ন করিয়া পন্ডিত মশায়ের ধুতিতে টান ফেলাইয়া দিয়াছিল।

১৩ মার্চ, ২০১০

আমার বউ কই?

সকাল থিকা মনটা কষা হয়া আছে...বিবিধ কারনে। আমার চারদিকে বিবাহিত লোকজন গিজগিজ করতেছে। অফিসে- সামনের টেবিল, পাশের টেবিল--- সব নব বিবাহিতদের দখলে। এরা প্রায়ই ফিসফাস কইরা ফোনে কথা বলে...আমার দিকে আড়চোখে তাকায়। এদিকে আমার আনন্দউদযাপনকারী দলটাতেও বিবাহিতরা এখন সংখ্যাগুরু...সবখানেই সমঝে চলতে হয়। জানুয়ারীতে শাওন মড়কটা লাগাইছে...মার্চে সাফফু, এই হপ্তায় পিয়াসের বিয়া, মে মাসে নাঈমের... হাসিব ভাই, প্রতনু, আবীর, রুশো সব পাইপ লাইনে ঢুইকা আছে......মাইনে সামনে পিছে...জলে স্থলে অন্তরীক্ষে সর্বত্র বিয়া। ফেসবুক খুল্লেই কারো না কারো বিয়ার ছবি। উফফফ। "বিবাহিতরা আমার হাড় জ্বালাতন করিতেছে"। এইজন্যি ইদানিং ফেসবুকে তেষ্টাইতে না পাইরা Somewherein ব্লগে আসছি।

এমতাবস্থায়, কেন জানি আজকাল যেকোন মেয়েরেই ভাল লাগতেছে । ভাবতেছি বাসায় হুমকি দিয়া বেনামে একটা উড়োচিঠি দিব কিনা...রেজিষ্টার শাহাজাহানের আদলে

"আপনার ছেলে ইউনিভার্সিটির কতিপয় মুষ্টিমেয় মেয়েদের সাথে লটরপটরে জড়িয়ে পড়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পরিপন্থী। মেয়েদের উস্কানিমুলক থুক্কু আস্কারামুলক মন্তব্য করে সে নিজের একাডেমিক জ়ীবনের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। তাকে সমঝে চলতে বলুন, নতুবা বিয়া দেন"------ ইউনিভার্সিটি রেজিষ্টার শাহাজাহান

হবু জামাই পিয়াস জব্বর একটা কবিতা লিখছে

ঢাকায় শিলা বৃষ্টি হইলে আমার ভেতরে তোলপাড় হয়
--পি.কা. (পিয়াস কাওসার)


ঢাকায় বৃষ্টি হইলো, আমি শুকনা / আমার শিলা কই?/
আমার কিশোর শহরে ভেজা রাস্তা , পীচ পথে মাটির ঘ্রান,/আমার মাটি কই? /
আমি থাকুম না এই খানে ,আমারে ছুটি দাও/ আমার জীবন কই?

আমার এত প্রতিভা নাই...তাই প্যারডি করার ছাড়া উপায় নাই...শেষ পর্যন্ত পিয়াসের কবিতাটাই হাতাইলাম

ঢাকায় পিকার বিয়া হইলে আমার ভিতরে গ্যাস্টিকের জ্বালা হয়

ঢাকায় পিকার বিয়া হইবো, আমার কি?/ আমার বউ কই?/
আমার পরিচিত ঢাকায়... বন্ধুর বিয়া, বিরিয়ানী, রেজালার ঘ্রান/ আমার প্লেট কই/
আমি থাকুম না এইখানে ,আমারে বিয়া দাও/ আমার বিবি কই?


অনেক কষ্টে আমি মোটে এক লাইন বাহির করতে পারছি...
"আজকাল মোবাইলটা লাগে না তেমন কাজে, মিসকল এসএমএস দাও না আর মাঝে মাঝে,
যখন এলার্ম দেই তখনি শুধু বাজে..."

---------------------------------------
অন্যান্য লেখা

ব্যানানা বাংলাদেশ-২ (প্রথম আলোর ইহুদীডিম্ব!)
ব্যানানা বাংলাদেশ-১ (ইকোনমিক হিটম্যান)
প্রথম আলো তাহার জাত চিনাইয়াছে
কন্সপিরেসি থিওরী-পারট ৩ (সিউডো-জ়ঙ্গি রাষ্ট্রের ছায়া)
তুমি অধম হইলে আমি ততোধিক অধম হইব!

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:১৮

জাহাজ নির্মান শিল্প,স্বাপ্নিক ডঃবারির ৭০ হাজার কোটি টাকা


আজকাল উলটা সিধা লেখা দেখলেই ঝারি পিটানি বদঅভ্যাসে পায়া বসছে আমার। পাব্লিকও ক্ল্যাপ দেয়।
আজকে ডিবাংক করবো জাহাজ শিল্প নিয়া লেখা সরকারি সহায়তা পেলে বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভবএই লেখাটা। এই টাইপ লেখা গুলান পেপার পত্রিকায়ও দেখে থাকবেন পাঠক। আমি আনন্দ শিপইয়ার্ডের একজন সাবেক ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে এই তেলবাজি ডিবাংক করা নাগরিক দায়িত্ব মনে করি। বাই দা বাই,আনন্দ শিপইয়ার্ডের সাথে আমার একটা পুরান হিসাব বাকি রইয়া গেছে...

লেখক হয়তো কোন খান থিকা কপি পেষ্ট করছেন লেখাটা। পুরা লেখাতেই আনন্দশিপ ইয়ার্ডের বিজ্ঞাপন, সাথে একটা সাক্ষাতকারো আছে।

লেখক বলেছেন "১ জন চেয়ারম্যান (ডঃ বারি স্যার, সাবেক বুয়েট শিক্ষক), ১ জন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৪ জন পরিচালক রয়েছেন।"----হাসাইলেন মিয়া। চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী, (স্ত্রী পাস করেছেন ইডেন থেকে) , ৪ পরিচালকের ৩ জনই তাদের স্নেহ ধন্য মেয়ে যারা বিদেশে থাকেন, অপর পরিচালকটি বড় মেয়ের জামাই, উনিও দূরপরবাসী। চমেতকার ব্যবস্থাপনা।কি কন?

আরো বলেছেন "এসব শিপইয়ার্ডের মধ্যে আনন্দ শিপইয়ার্ডের নির্মাণ কৌশল আলাদা। এই শিপইয়ার্ডের কাজ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে করা হয়। এখানকার কর্মকর্তারা জানালেন, আমাদের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এত বড় ও আধুনিক যন্ত্রপাতিতে সুসজ্জিত শিপইয়ার্ড আর দ্বিতীয়টি নেই।"- লেখক নিজে কি দেখে লিখেছেন নাকি শুনে লিখেছেন? জাহাজশিল্পে কি কি যন্ত্রপাতি থাকা উচিত বলে উনার ধারনা? ২/৪টার নাম কইতে পারলে আরাম পাইতাম।

"প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানালেন, বিশ্ববাজারে আমাদের তৈরি জাহাজ রফতানিতে সুনাম অর্জনের একমাত্র কারণ প্রতিষ্ঠানের মালিক, কর্মচারী ও শ্রমিকদের পরস্পরের অতি শ্রদ্ধাবোধ ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করা।"---আহা...সুনাম দেখি টপটপায়া ঝইড়া পড়তেছে। উক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তারে জিগান গত ৫ বছরে কয়বার বেতন বাড়ানো ও নিয়মিত করার দাবিতে ইঞ্জিনিয়াররা আন্দোলন করছে।মোট কয় জন ইঞ্জিনিয়ার চাকরী ছাড়তে বাধ্য হইছে।সঠিক কইতে পারলে লেবান চুস!

আপ্নাগো আমি কিছু ইনফো দেই- ক্লিয়ার কইরা শুইনেন

১। আনন্দ শিপিয়ার্ড ফুলে ফেপে বড় হয় বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ডের ১২৯টি ছোট পল্টুন বানায়া- অই প্রজেক্টে মোট লাভ হয় ১০০কোটি। যাগা মত ঘুষ দিতে যান্তে হয় দাদা! এই লাভের টাকা গুলান তো আপনার আমার পকেটের টাকা। জিডিপির ৫.৮% সামরিক ব্যয় কেমতে হয় বুঝলেন?

২। এই পর্যন্ত একটা জাহাজও আনন্দ শিপইয়ার্ড সময় মতো ডেলিভারী দিতে পারে নাই। কারন দক্ষতার অভাব।কাজের কাজ দেশের অন্যান্য শিপ বিল্ডারের রেপুটেশন নষ্ট করছে।

৩। নদী দখল করে বানাইছেন স্লীপ ওয়ে। নদী ভরাট করে জায়গা দখল করছে।( স্লীপ ওয়ে হইতাছে একটা বড় রেল লাইন যেটার উপর দিয়ে জাহাজ নদী থেকে ঊঠানো ও নামানো হয়)

৪। পরিবেশ ক্ষতি করে 'র'স্টিলে স্যান্ড ব্লাস্ট করেন উনারা নদীর পাড়ে, যা আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ ও ভয়াবহ ক্ষতিকারক।

৫। যে ৭০ হাজার কোটি টাকা মোহ দেখায়া সরকারের কাছ থিকা ইন্সেন্টিভ চাইতেছেন ডঃবারি সাহেব, তাই কি আস্লেই পাওয়া সম্ভব? শিপের অর্ডার এর সাথে বিল্ডিং স্পেসিফিকেশন নামের বিশাল একটা কিতাব থাকে, যেখানে লেখা থাকে কোন জিনিস্টা কোন কম্পানি থেকে কিনে জাহাজে দিতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যে দেশের জাহাজ মালিক সেই দেশের কম্পানির নাম সেখানে থাকে। প্রতিটা জিনিসের জন্য সাপ্লায়ার কম্পানির নাম উল্লেখ থাকে। তার মানে আপনি যার টাকায় জাহাজ বানাবেন তার দেশের জিনিস কিনতে বাধ্য...সুত্রাং অর্ডারের মিলিয়ন ডলারের মূলার ৮০-৯০% চলে যাবে বিদেশে...বাকিটা থাকবে ডঃ বারি সাহেবের পকেটে। এখন বলেন এই জন্য কি এটাকে পোশাক শিল্পের মতো ইন্সেন্টভ দেয়া উচিত?

আরেকটা জিনিস কমেন্ট থিকা যোগ করি। ডঃবারির অযোক্তিকভাবে ৭০হাজার কোটি টাকার মূলা দেখায়া সরকারি ইনসেন্টিভের দাবি করছেন। উনি বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের কাছে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি চেয়েছেন।

তাহলে উনি আবারো পুরান খেলা খেলতে পারেন। আগেও তিনি মোজাম্ববিক সরকারে টাকায় জাহাজ বানিয়ে উনাদের ডেলিভারি দেরি করান। ক্রেতাপক্ষ (মোজাম্বিক সরকার) ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি ভেঙ্গে নিয়া যাবার ভয়ও দেখালে তিনি নির্বিকার। কারন তত দিনে স্টিলের দাম বাড়ার জন্য জাহাজের মার্কেট ভ্যালু ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির চেয়ে বেশি হয়ে গিয়েছিল।মানে বাজারে নিজে বিক্রি করলে সেটা ব্যাংক গ্যারান্টির চেয়ে বেশি পাবেন।শেষ পর্যন্ট নানান দেন দরবারের পর মোজ্ববিকের সেই জাহাজ শিডিউল টাইমের বছর খানেক পর ডেলিভারি হয়।এই ঘটনার পুনরাবৃতি হইলে প্যাচে পড়বে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক (গ্রান্টার)।


এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ন কৃ্ষি, যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ করতে সরকারকে কেউ বলে না। ক্ষেতের লোকের কথা পত্রিকাওয়ালারাও শুনে না। আর সরকারতো থাকে চাঙ্গের উপরে।
-----------------------------------
অন্যান্য লেখা
হস্তীভক্ষন ও বিদ্যুৎখাতের স্টিকী পোষ্টঃ ডিবাংক
ব্যানানা বাংলাদেশ-৩ (গডফাদারের স্টিমুলাস মূলা)
ব্যানানা বাংলাদেশ-২ (প্রথম আলোর ইহুদীডিম্ব!)
ব্যানানা বাংলাদেশ-১ (ইকোনমিক হিটম্যান)
কন্সপিরেসি থিওরী-পারট ৩ (সিউডো-জ়ঙ্গি রাষ্ট্রের ছায়া)

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০০৯ সকাল ১০:৩৩

মর শালারা সব... আমারেও মার!


মঙ্গলবাণী

শুধু যদি পেটে থাকতো ভাত
খালি ঘুমাইতাম; রাত হইলেই কাত।
আমি তখন সিনেমা দেখতাম...সমুদ্র খাইতাম
চালাইতাম ফোর হুইল ট্রাক।

তখন শুধু এক্সিডেন্ট করতাম...
লাগত না ব্যাথা...
একুরিয়ামে মাছের মত চোখ খুইলা রাখতাম
কইতাম না কথা।

খাইতাম না বেতের বাড়ি
ঘাড়ে কিংবা পাছায়...
যাইতাম না ইস্কুল বাড়ি...কেডা আমারে পাঠায়?

শুধু যদি বুঝাইতে পারতাম...চিল্লায়া চিল্লায়া কইতে পারতাম
আজাইরা ফালাফালি করা ছাড়...
মর শালারা সব...আমারেও মার...

---পি.কা.


আজকের সকালটা মোটেও সুবিধার না। ১২ তলা কংক্রিট বস্তির ব্যালকনি থিকা দূর দিগন্ত জুইড়া ধোয়াশা দেখা যাইতেছে... ইন্দোনেশিয়ায় নাকি আগুন লাগায়া জংগল সাফ করতেছে...কাটাকাটির টাইম নাই...ডাইরেক্ট আগুন! আমার এক ইন্দোনেশিয়ান দোস্তরে কইছিলাম “কি মিয়া সারা দুনিয়াতো ধুয়া দিয়া ভইরা দিতাছ তুমরা”। আমারে কয় “আরে এগুলানতো বিড়ির ধুয়া, মালয়শিয়ান গো এক মাস বিড়ি খাওয়া বন রাখতে কও ...সব ফকফকা হয়া যাইব”।
আকাশটার মত মুবাইলটাও কালা হয়া আছে।“আজকাল মুবাইলটা লাগে না তেমন কাজে, যখন এলার্ম দেই তখনি শুধু বাজে।“

আইজকা মেলা দিন বাদে ফুন্টা বাজলো। প্রাইভেট নাম্বার। দ্যাশ থিকা মনে লয়। “বাবা কি ঘুম থিকা উঠছ?/ নাস্তা করছো?/ পড়াশুনা কি ঠিক মত করতেছ?/ আর কয় দিন লাগব?” ইটিসি প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত হইয়া ফুন ধরলাম।

--- ক্যামন আছ? (অনেকদিনের পরিচিত কন্ঠ, এই ধরনের কন্ঠকে রিমঝিম কন্ঠ বলা যাইতে পারে)
আলহামদুলিল্লাহ। তেমন ভাল নাই।
--- এর মানে কি? আলহামদুলিল্লাহ বললা ক্যান?
তুমি ফোন করছো ৮ মাস বাদে...তাই আলহামদুলিল্লাহ বলছি। আর মন ভাল নাই তাই ...ভাল নাই বললাম। তোমার কি খবর?
--- ভাল। তোমার ত্যাড়ামি দেখি কমে নাই।আগের মতোই...
এই যে একটা খুচা দিলা সকাল বেলা। মেলা দিন বাদে ফোন করছ... ভাল কিছু বল ...টাকা গুলান নষ্ট কইরো না। খুচা টুচা ইদানিং আমার গায়ে লাগে না।
--- তাই তো দেখতেছি...পাব্লিকের গাইল খাইতেছ... তাও ত্যাড়ামি কমে নাই
তোমার আংকেল ক্যামন আছে?ভাল?
--- এই জন্যই তোমারে ফোন করি না। আমার হাজবেন্ড নিয়া আজে বাজে কথা বলবা না।ফোন রেখে দিব।
অক্কে...আর বলবো না। আমারে খুচা দিলা তাই বদলা নিলাম... এখন কাটাকাটি।
--- তোমার বিদেশ ক্যামন লাগতেছে?
ভাল না। টুটের দ্যাশ।এর চাইতে দ্যাশেই ভাল ছিলাম। ডিজুস ছিল। একটা টুটের চাকরী ছিল। খালি তুমি ছিলা না।
---তুমিইতো বললা... বিয়ে করতে
অইটাতো তোমার লাইফে একটা সিগ্নিফিকেট কন্ট্রিবিউশন রাখার জন্য বলছিলাম...তুমিতো একনলেজ করলা না।তোমার লাইফের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্তটা নিয়া দিলাম... আর তুমি দাওয়াতও দিলা না। আংকেলরে বিয়া কইরা ফেলাইলা চুপচাপ।
--- দ্যাখো মানুষরে সম্মান দিয়া কথা বলা শিখ। পারোতো খালি খুচাখুচি করতে। ভাবছিলাম পাব্লিকের গালাগালি খেয়ে তোমার মন খারাপ...তাই ফোন করছিলাম। এখন দেখি তোমার মন আমার আমার চেয়ে ভাল আছে।ভাল থাক।রাখলাম।
অয়েট অয়েট...আমি গালি খাইলে কি তোমার খারাপ লাগে?

---হুম (আমার জন্য খুবি সিগ্নিফিকেন্ট উত্তর... যদিও খুবি শর্ট উত্তর )

তাইলে তো আরো গালি খাইতে হবে...হেহে
কোন রিপ্লাই নাই...কিছুক্ষন চুপচাপ। বুঝলাম হাওয়া ভাল না। যেকোন মূহূর্তে ফোন রাইখা দিবে।এবং কান্নাকাটি শুরু করবে। প্রসঙ্গ পাল্টাইতে বললাম
আচ্ছা... আমার ফ্লাইটের দিন তুমি ক্যামনে ঠিক টাইম মত ফোন করলা? তোমার জামাই টের পায় নাই? বাথরুমে গিয়া কল দিছিলা নাকি? সিকিউরিটি চেক কইরাই তোমার ফোন পায়া কি যে ভাল লাগতেছিল।
---ঠিক আছে ...তুমি ভাল থাইকো...বাই।

ধুসশালা। ফোন রাইখা দিছে।এখন কি করি? কল ব্যাক কইরা মেয়েটার কান্না থামানোর চেষ্টা করা যাইত। নাহ, যাবে না। প্রাইভেট নাম্বার।
সো কিছুই করার নাই আইজুদ্দিন। অপেক্ষায় থাক... আবার কবে কোন মাস ফোন আসে দ্যাখো। দেবদাসগিরি উদযাপন করতে আজকে সারাদিন বাসায় ঘুমানো যায়।কিন্তু ফোন অফ রাখতে হবে।কারন সুপারভাইজার ফোন করতে পারে।
কিন্তু ও যদি আবার ফোন করে? থাক...ডিপার্টমেন্টেই যাই। পাঠক আমার বন্ধু পিকার লেখা জব্বর একটা কবিতা পড়তে থাকুক...আমি যাই বেলতলায়।



----------------------------------------------
অন্যান্য লেখা, খুচা দিয়া পড়েন
বাংলাদেশ: কিরম আস?
আমার বউ কই?

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:১৫

জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দিয়াছেন?ডেনড্রাইটের কঙ্কালে সবুজ শ্যাওলা

হা ভায়া... জাফর স্যারের কথাই বলিতেছি।আমাদের একমাত্র সেলিব্রিটি শিক্ষক, বেলের গবেষক(যদিও গবেষনা উনি ছাড়িয়াছেন আজ ৮ বৎছর হইল), প্রথম 'কালো'র কলাম লেখক... সাধাসিধা মানুষ... যিনি কিনা টিভি দেখেন না বলিয়া কিশোর কিশোরীর চর্মচোঊক্ষে মহান হইয়াছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ঝান্ডা উচা করিয়াছেন রোজ মাসে একবার। উনাকে লিয়া লেখা ব্লগ, সর্বচ্চো সংখ্যক প্লাস ও মাইনাস উৎপাদন করিয়াছে। ব্লগীয় গোলাগুলিতে অনেকেই হয়েছেন লব্য ড়াজাকার। ভূমিকা না পড়িয়াই মাইনাস বাটন খানা খুজিতেছেন নাকি?খান্ত হোন।

আসেন শুরু করিঃ জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দিয়াছেন?
ক্যান ভায়া... এত লোক থাকতে জাফর স্যার ক্যানো? সহজ। একমাত্র সেলিব্রিটি শিক্ষককে একটু ভাল করিয়া জানার চেষ্টা আরকি...এছাড়া কিছুই না। তবে আমি কিন্তু ঈমান, দেশপ্রেম মাপার নিক্তি নিয়া বসি নাই।জামাতি ভাইদের নিক্তি আছে...ঈমানের বাটখারাও আছে হয়ত... উনাদের কাছে যান জাফর স্যারের দেশপ্রেম ও আস্তিকতা মাপিতে। উনার কোন লেখায় ইসলামকে চিমটি দিয়াছেন... তা খুজার সময়ও আমার নাই।রোজ হাশরেই সকলের ফলাফল প্রকাশিত হইবে... সুত্রাং এবিষয়ে এন্তার গবেষনার প্রয়োজন নাই।

তাহা হইলে বাছা খেপিলে ক্যানো?
জাফর ভক্তকুল ও তার এন্টিকুল। ফেসবুকে দুইখানা গ্রুপ খুলিয়াছে এরা। একটি ভক্তকুল অপরটি এন্টিকুল। এন্টিকূলের গ্রুপের নাম দিয়াছে United Thousands Member to Save Our Future Generation আহা, ভবিষ্যত প্রজন্মকে কি যাতনা হইতে যে বাচাইতেছেন উনারা, তাহা ভবিষ্যত প্রজন্মই বলিতে পারিবে।

আর আছে ভক্তকূল...উনাদের দাবি সবাইকে ঝাপাইয়া পড়িয়া এন্টিকূলের গ্রুপের নামে ফেসবুকের আদালতে জিডি করিয়া আসিতে হইবেক। মানে 'রিপোর্ট দিস গ্রুপ' বাটনে চিপিয়া দিতে হইবেক। বাহ বাহ। প্রশ্ন হইলো "জাফর সাহেবের নামে কেহ কুৎসা রটাইলে আমাকে ক্যানো রিপোর্ট করিতে হইবে? জাফর স্যারকে আসিয়া রিপোর্ট বাটনে চাপ দিয়া জাইতে বলো। ল্যাঠা চুকিয়া যায়"

আমি দুইদলের কাছ হইতেই নেমন্তন পাইয়াছি। বল মাঝ মাঠে, প্রশ্ন হইল নামিব কুন দিক দিয়া!
ভোটভুটির গেল হপ্তার রেজাল্ট দিয়া রাখিঃ
জাফর স্যারের ভক্তকুল গ্রুপে মেম্বার ১৩৯৪ জন
জাফর স্যারের এন্টিকুল গ্রুপে মেম্বার ১১৫৯ জন
বাহ বাহ... জাতির মোট ২৫৫৩ জন পাওয়া গিয়াছে... যারা দেশ ও জাতি উদ্ধার করিয়া ফেলাইতে লেংটি পড়িয়া ইন্টারনেটিয় মল্ল যুদ্ধে লামিয়াছে... আহা... দেশ তরতরাইয়া আগাইয়া চলিতেছে।

আমি এইরুপ আরেকটি মল্লযুদ্ধ দেখিলাম হাইকোর্টে... "স্বাধীনতার ঘোষনা কে দিয়াছেন?" শুনিয়াছি হাইকোর্টে নাকি হাজার হাজার মামলা আটকাইয়া রহিয়াছে... তো উহাদের টপকাইয়া পেঙ্গুইন পেশাজীবিরা ক্যানো ৩০বছর পূর্বে নিষ্পতি হইয়া যাওয়া একখানা কেস লইয়া পড়িয়া আছেন বুঝিলাম না। মুক্তিযুদ্ধ, রাজাকার, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাকার বিষয়াদির কচলাকচলি আমার কাছে এখন ভাড়ামি লাগে। পারলে দেশের জন্য কিছু করেন... চুল্কাইলে আদালতে যান...২/৪ খানা রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা দিয়া জিতিয়া আসেন...ব্রাভো দিব। কিন্তু চেতনার চামড়াটা আর চুষিতে বলিয়েন না। উহা ৩৮ বছর চুষিয়া দেশের এই হাল করিয়াছি।

ফিরিয়া আসি প্রশ্নেঃ জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দিয়াছেন?
গাল গল্প উপন্যাস শিশু সাহিত্য কলাম--- আর কিছু লেংটি পড়া ভক্তকূল দিয়াছেন জাতিকে, যাহারা জাফর স্যারকে কিছু বলিলে 'ড়াজাকার' গালি পাড়িতে পাড়িতে ছুটিয়া আসিবেক... মাইনাসের বন্যায় ভাসাইয়া দিবেক... তাহা না হইলে দেশপ্রেম থাকিল কোথায়?হুম। জাফর স্যার তাহা হইলে মুক্তিযুদ্ধ না করিয়াও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা...দেশপ্রেমের ধারক ও বাহক?! বাহ! বহুত খুব! কোন মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসার অভাবে মরিলে এমন গেল গেল রব উঠিতে দেখিয়াছেন কি? আর কুৎসা, বঞ্চনা..সেতো আকছার।

আলেকজান্ডার ভুল প্রশ্ন করিয়া পটল তুলিয়াছেন। প্রশ্নটা করা জাইত জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দেন নাই?
যাহা দেন নাই তাহা হইল... তিনি যে কাজটা সবচেয়ে ভাল পারিতেন...সেইটা করেন নাই।তিন তিন খানা ইউএস-পেটেন্ট তৈয়ার করিয়া আসিয়া... তিনি দেশে কি গবেষনা করিলেন... দেখিয়া আসি।


৩৫ খানা পাব্লিকেশ্নের মধ্যে ...২৮ খানা জার্নাল পেপার, ৭ খানা কনফারেন্স...স্কোপাসে এমন টাই দেখাইতেছে। খুটাইয়া দেখি। পেপারগুলান মোট সাইটেশন পাইয়াছে ৩১৪ খানা...আজ পর্যন্ত। বাহ! কিন্তু এর মধ্যে সেগুলানে জাফর স্যার প্রথম লেখক সেগুলান(মাত্র ৪ খানায় ফাস্ট অথার উনি নিজে) সাইটেশন পাইয়াছে মোটে ৩ খানা। মন্দ ভাগ্য আর কাহাকে বলে! স্কোপাসের লিঙ্কঃ অথার ডিটেইলস

ঘবেষনা দুনিয়ায় আমাদের একমাত্র পতাকাখানা উড়াইতেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল্যের একটি জার্নাল।BANGLADESH JOURNAL OF BOTANY (ISSN: 0253-5416)। বাংলাদেশের একমাত্র ISI Indexed জার্নাল। আর বিদেশ ফেরত বেশুমার শিক্ষককে পাইবেন ঢাবি, বুয়েট, জাবি ও অন্যান্য সব ইউনিতেই। প্রত্যেকেই বিদেশের উচ্চতর স্যালারীর মোহ ছাড়িয়া দেশে আসিয়া...লোডশেডিঙ্গে মশা মারিতেছেন... কই উনাদের ত্যাগটা কেউ খুজিইয়া পাইতেছে কি? উনাদের দেশপ্রেমটাও দেখিতে পাইতেছেকি? কই... উনাদের নিয়াতো হল্লা হইতে দেখি না। ভোটের বাজারে জাতির চেতনা লইয়া দু কলম লিখিইয়া কিশোর-কিশোরীর চোখের জল-নাকের জল এক করাইতে পারেন না, এইটাই কি তাহাদের দোষ?

অহ হো...আরেক্টা বিষয়... পাব্লিকেশন গুলানের টাইটেল পড়িয়া কোনটাই কম্পুবিজ্ঞানের বিষয় বলিয়া বোধ হইতেছে না... পদার্থ(অপ্টিক্স), ইইই, নিউক্লিয়ার সায়েন্স ইত্যাকার বিষয়াদি বেশি দেখিতে পাইলাম...যাহা হঊক আমি নিজে কম্পুবিজ্ঞানের ছাত্র নই...তাই ঘাটিয়া তেমন কিছু বুঝিয়া উঠিতে পারিলাম না।তবে কেহ যদি একটু তকলিফ করিয়া এই অধমকে বুঝাইতেন...কি করিয়া কম্পুবিজ্ঞানে কোন পাব্লিকেশন না করিয়া উনি একচান্সে কম্পুবিজ্ঞানের প্রফেসর হইয়াছেন... তাহা হইলে আরাম হইত।

ঝাতি তবে কি পাইল? ক্যান এক জন প্রবল আবেগী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত কলামিস্ট। হুম... এইতো লাইনে আসিয়াছেন। চলুন তবে...কিছু কলাম পড়িয়া আসি।

মুক্তিযুদ্ধ প্রযন্মের শেষ সুযোগ (!) ১৪মে প্রেথম আলু

লেখার শুরুতেই তিনি পাখিদের চাল খাওয়ান...চালের মূল্যবৃদ্ধিতে উনি পাখিদের চাল দিতে না পারিয়া যারপর নাই মনকষ্ট পাইয়াছেন...শেষাংশে...সাংসদ তৌহিদ জংএর সংবর্ধনায় স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের রোদে দাড় করাইয়া রাখার বিষয়টি...নিয়া আসিয়াছেন... উনার অন্যান্য লেখাতেও শিশু সাজিবার একটা ব্যর্থ চেষ্টা প্রকট। ব্যর্থ বলিলাম কারন লেখার পেটে রাজনৈতিক গ্যাসের ভুটুস-ভাটাস প্রবল। শিশুরা রাজনীতী করে না। উদাহরন দিয়া লই কিছু লাইন-

"সরকার ইচ্ছে করলে অসাধ্য সাধন করে ফেলতে পারে" (আওয়ামী সরকার)
"বিডিয়ার ঘটনা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে, যখন তদন্ত রিপোর্ট বের হবে তখন হয়তো অনেক কিছু নিয়ে আমাদের বিভ্রান্তি দূর হয়ে যাবে (বটেক!)।তবে যে বিউষয়টি নিয়ে কারো কোন বিভ্রান্তি নাই নেই সেটি হচ্ছে সেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের সময়টুকুতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অসাধারন রাষ্ট্রনায়কসুলভ ভুমিকা।সেনাকুঞ্জে সামরিক অফিসারদের সঙ্গে তাঁর বাগবিতন্ডার সেই সিডিটি কারা কীভাবে বের করেছে সেটা একটা রহস্য। যারা সেটা শুনেছে তাদের মনে অনেক নতুন প্রশ্নের জন্ম হয়েছে কিন্তু একি সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন করে আস্থা ফিরে পেয়েছে।"

-------তাই নাকি? তাহা হইলে এতগুলান লুক মরিয়া গেল... এতগুলান গ্রেনেড খোয়া গেল...সবই সাফোইল্ল্য(!)... সরকারী তদন্ত রিপোর্ট খানাও সাফল্য বটে।ইউটিউব সহ এক হালি ওয়েব সাইট বন্ধ করিয়া দেয়াও নেত্রীত্বের প্রতি প্রগাড় আস্থার বহি:প্রকাশ ছাড়া কিছুই নয়! সাধারন ক্ষমা ঘোষনার পর ডজন খানেক জোয়ানকে রিমান্ডে আত্নহত্যা করানো এবং তা দেখিয়া রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্ক্রিয়তা, প্রশ্নতোলা সেনা কর্মকর্তাদের ফোর্সড রিজাইন দেয়ানো...প্রগাড় আস্থার বহি:প্রকাশ নয় তো আর কি? স্যার ইহা কি বলিলেন... ইহাই কি ইতিহাস বিকৃতি নয়?

"ছাত্রলীগ করার নামে কিছু অবিবেচক ছেলেদের সেই সুযোগ নষ্ট করতে দেয়া যাবে না।"

----------অবিবেচক(!) ছেলে...বাহ চমতকার একটি নিরীহ বিশেষন খুজিয়া লইয়াছেন উনি... মহান বিজ্ঞানীই বটে।ছাত্রলীগকে"দুষ্টুছেলের দল" বলিলেও অবাক হইতাম না।

"আওয়ামী লীগের নেতারা জানেন কি না জানি না, গত নির্বাচনের বিজয়টি এই দেশের সব প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তবুদ্ধির মানুষেষেরা তাদের নিজেদের বিজয় হিসেবে ধরে নিয়েছে৷"
---------আর দশটা আওয়ামীপন্থী কলামনিষ্টের মতো আমাদের শ্রদ্ধেয় জাফর স্যারো আওয়ামীলীগের বিজয়কে নানা সুন্দর বিষেশনে জড়াইয়া মহোত্তম করিতে চাইতেছেন। আমার প্রশ্ন... যেহেতু ব্রুট মেজরিটি আওয়ামী সরকার পাইয়াছে তার মানে দেশের অধিকাংশ লোক... প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তবুদ্ধির মানুষ। তাহা হইলে আগের ইলেকশনে যারা বিএনপি জামাত জোটকে ভোট দিয়াছিল উনারা কি সবাই সাম্প্রদায়িক, গোড়া লোকজন ছিলেন। এরমানে সকল সাম্প্রদায়িক, গোড়া লোকজন এখন প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তবুদ্ধির মানুষ হইয়া গিয়াছেন? জ্বিনা জনাব, লোকের হাপাইয়া উঠিয়া ভোট দিয়াছে... যেমন আওয়ামী শাসনে হাপাইয়া উঠিয়া বিএনপিকে ভোট দিয়াছিল। ইহার মাঝে প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, মুক্তবুদ্ধির যোচ্চুরি অনাবশ্যক... নিখাদ ভোটের হিসাব। হিসাব না বুঝিলে ৫ বছর অপেক্ষা করুন...বুঝিয়া যাইবেন।

মোটে এক খানা কলামের কথা বলিলেন দাদা... অন্যগুলান? হুম। ভাবাইলে বড়। অসাধারন কিছু কলামও আছে।আশা করি উনার ভক্তকূল সেগুলান সংগ্রহ করিয়া...শেয়ার করিবেক। তবে পেপারে আমার পড়া সেরা কলামটি হুমায়ুন আহমেদের লিখা। সিলেট নিয়া লিখিয়াছিলেন। অসাধারন অসাধারন অসাধারন। আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়া আমার পড়া সেরা লেখাটিও হুমায়ুন আহমেদেরই লেখা “অনীল বাগচির একদিন”।এই সুচিক্কন উপন্যাসটি নিয়া একখানা শর্ট ফিলিম বানাইবার স্বপ্ন আমার বহুদিনের।লেখককে তার ব্যক্তিত্ব দিয়া নয় বরং বক্তব্য দিয়া বিচার করি—সেই কামনা রইল।
-----------------------------------------
অন্যান্য লেখা, খুচা দিয়া পড়েন
ব্যানানা বাংলাদেশ-৪ (কি চমেতকার দেখা গেল!)
ব্যানানা বাংলাদেশ-৩ (গডফাদারের স্টিমুলাস মূলা)
ব্যানানা বাংলাদেশ-২ (প্রথম আলোর ইহুদীডিম্ব!)
ব্যানানা বাংলাদেশ-১ (ইকোনমিক হিটম্যান)
কন্সপিরেসি থিওরী-পারট ৩ (সিউডো-জ়ঙ্গি রাষ্ট্রের ছায়া)
----------------------------------------------
বাংলাদেশ: কিরম আস?
আমার বউ কই?

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:০৩

তেল-গ্যাস বুঝো না, স্বাধীনতা বুঝো?

হ। আমরা আর কিছু বুঝি না বুঝি, স্বাধীনতা বুঝি। অইটা নিয়া কুন কথা হইব না, এক বাক্যে স্যালুট দিতে হইবো জনক, ঘোষক, আহবায়কদের। সংসদে সব ভাষনের আগে ৫ মিনিট মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক ও আহবায়কদের সালাম জানাইয়া বিবিধ-বিশেষন বর্ষন... তাআআরপরে দ্যাশের অন্যান্য বাতচিত। আর যুদ্ধাপরাধীতো ভোটের আগের খেলা, "ড়াজাকার" ডাক ছাড়তে ছাড়তে মুখের ছ্যাপ ছিটায়া বেড়াই মিছিলে স্লোগানে। ক্ষমতায় গিয়া বলি "মাসুম সরকার" "ফরেন প্রেসার" "এত কাজ!"... সময় হয় না... ধরি ধরি কইরাও ধরা হয় না। কেউ কেউ আবার যুদ্ধাপরাধীদের ঘাড়ে চইড়া ক্ষমতায় আসি—“নির্বাচনী কৌশল” বললেই দায় শেষ।

কিন্তু শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা যেই দেশটা স্বাধীন কইরা রাইখা গেল... সেই দেশের স্বার্থ আপনি কতখানি দেখেন? কতটুকু বুঝেন বা বুঝতে চান?

বুঝতে চান না। কারন আপনার বিবেচনার দেয়ালে মোটা দাগ টানা আছে। তেল-গ্যাস ইস্যু? কোন কিছু না জাইনাই আপনি বইলা দিবেন "ওইটা বাম দলগুলার ইস্যু, ওরা সারা বছর ওইটা নিয়া ফালাফালি করতেই থাকব, সো কান দিয়া লাভ নাই"...টিপাইমুখ বাধ? ওইটা জামাতিগো ইস্যু..."ড়াজাকারের দল নতুন ভড়ং ধরছে"। এশিয়ান হাইওয়ে? "সাবমেরিন ক্যাবলের লাইন না নিয়া কি ভূল্টাই না করছিল বিএনপি, এইবার আর সেই ভূল করা যাবে না।এইটা সুবর্ণ সুযোগ"। আপনি এক্টুও চিন্তা করলেন না, সবগুলাই আসলে আপনার ইস্যু। কারন সব গুলাই বাংলাদেশের অস্তিত্বের ইস্যু।এই ইস্যুতেই নির্ধারিত হইতে যাইতেছেঃ আজ থেকে ১০ বছর পর দেশের কি অবস্থা হবে।

আজকে শুধু তেল-গ্যাস নিয়া একটু আলোচনা করবঃ

প্রোডাকশন শেয়ারিং কনট্রাক্ট(পিএসসি)-২০০৮ । এই চুক্তি হইল তেল গ্যাসের ভাগ বাটোয়ারার চুক্তি। মানে বাংলাদেশ কি পাবে, তেল গ্যাস উত্তোলনকারী কম্পানী কি পাবে সেইটা। ডিটেইলসে না গিয়া চুক্তির সামারী হইল, বাংলাদেশ বড়জোর (!) ২০ভাগ তেল গ্যাস পাবে। বাকিটা? বিদেশী কম্পানীরা।বাংলাদেশ কোন ভাবেই ২০% এর বেশী পাবে না,চুক্তিতেই তা পরিস্কার লেখা আছে(অনুচ্ছেদ ১৫.৫.৪, পেজ ৪০)। নিচের ছবিতে দেখেন(বড় ও স্পষ্ট দেখার জন্য পোষ্টের নিচের ছোট্ট ফডু্টাতে খুচান)।

তাইলে বাকি ৮০% থেকে আমাদের মুটামুটি আন্তর্জাতিক দরেই কিনা লাগবে। যাহোক, নিজের গ্যাস নিজে কিনা খাব। সেইটার পসিবিলিটিও নাই জনাব। কারন গ্যাস আনবেন ক্যাম্নে? পাইপে? পাইপ লাইন নির্মানের কাজটাও বিদেশি কম্পানির অধিকারে দেয়া হইছে।আবার পাইপ বসানর খরচটা আমাদের প্রাপ্য ২০% গ্যাস থিকা গ্যাসের দামে নিয়া রাখবে। কি বুঝলেন?(অনুচ্ছেদ ১৬)

আরো আছে, জ্বালানির বা পেট্রোলিয়ামের সংজ্ঞা মতে কঠিন-তরল-গ্যাস তিন কিসিমের বুঝাইলেও... বাটোয়ারার ক্ষেত্রে(অনুচ্ছেদ ১৫) শুধু গ্যাসের ভাগ বাটোয়ারার কথা বলা আছে।ফাঁকটা ধরতে পারছেন? তার মানে গ্যাসবাদে অন্যান্য পেট্রোলিয়াম (অশোধিত খনিজ তেল, অ্যাসফ্যাল্ট, ওজোকারাইট, বিটুমিন) পুরাটাই হাপিস করবে ইজারা প্রাপ্ত বিদেশী কম্পানী?!

বাংলাদেশের গ্যাস ব্যবহারের ক্ষমতা বিবেচনায় রাইখা গ্যাস উত্তোলনের সীমা নির্দিষ্ট করা হয় নাই। এরমানে আমাদের প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশী মাত্রায় গ্যাস তুল্বে... জানা কথা... কারন ফরেন কম্পানী আসছে ব্যবসা করতে তেনারা “জাতির জনকের স্বপ্ন” বা “স্বাধীন তার ঘোষকের স্বপ্ন” পুরা করতে আসে নাই, ব্রেক ইভেন পয়েন্ট মিট করতে আসছে। ফলাফল, দ্রুত অতিরিক্ত গ্যাস তোলার জন্য পুরা গ্যাস উত্তোলনের আগেই প্রেসার কমে যাবে, মাটির কিছু গ্যাস মাটিতেই থাইকা যাবে।আর আমি আপনি লোডশেডিঙ্গে ঘামতে থাকব, বিদ্যুতকেন্দ্র ঘেরাও দিব।

আর পেট্রোবাংলা, বাপেক্স কবে কোনকালে সক্ষম হইবো। স্থলভাগের গ্যাস তুলায় তারা মুটামুটি সক্ষম। যদিও সবচুক্তি বিদেশী কম্পানীরাই করে। আর তাদের হয়ে ঠিকায় নানান কাজ কইরা দেয় বাপেক্স।লাভের ধান, টিয়ায় খায়। কবে আমাদের পেট্রোবাংলা মালয়শিয়ার পেট্রোনাস কিংবা নরওয়ের StatoilHydro এর মত হইতে পারব? আমাদের কোন প্লান আছে কি, নাকি আমাদের জাতির পিতা বা স্বাধীনতার ঘোষকের কোন প্লান ছিল? নাই। উনাদের আওলাদদেরও কোন প্লান নাই। এদের প্লান ৫ বছরের। ক্ষমতায় থাকলে প্লানঃ “যা পার লুইটা খাও।“ আর বিরোধীদলে থাকলে প্লানঃ “প্রথম ৩/৪ বছর প্রেস ব্রিফিং দিয়া যাও। শেষ বছরে আইসা হরতাল দিয়া মাঠ গরম কর।“ এরপর ইলেকশন! ইলেকশন! ইলেকশন! ফলাফল বরাবরের মতোই জনগন পরাজিত। বাংলাদেশ পরাজিত।

কথায় না, কাজে দেখতে চাই..স্বাধীনতার চেতনার স্বরূপ। যদি দেশের স্বার্থ জ্বলাঞ্জলী দিয়ে তেল-গ্যাস, হাইওয়ে, বন্দর সব ইজারা দেয়ার পরেও যদি তা "স্বাধীনতার স্বপক্ষশক্তির"(!?!) দম্ভ হয়। তাইলে আমার সেই স্বাধীনতার চেতনার দরকার নাই।



ছবিতে খিয়াল কইরা ভারত-মিয়ানমারের দাবিটা দেখেন... এক্কেবারে চ্যাগায়া খাড়ায়া দুইপাশ থিকা আমাদের সমুদ্রসীমা চিপ্পা দিতাছে। আর আমরা কি করতেছি? এখন পর্যন্ত দাবিটাই জানাই নাই। নীল লাইন বরাবর আমাদের সমুদ্রসীমা হবার কথা। হায় ...দাবিই নাই, কোথায় সমুদ্রসীমা, কোথায় তেল-গ্যাস।

সরকার ফেলার আন্দোলনতো অনেক করলেন... তেনারা গদি পাইছে, আমি-আপনি পাইছি আসাদের লাল শার্ট। এইবার সরকারের চরিত্র নির্ধারনের জন্য একটা ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলন কইরা দেখেন। রাস্তায় নামতে বলতেছি না। শুধু নিজে জানেন আর অন্যকে জানান... যে যার জায়গা থেকে বলেনঃ ছিঃ

তথ্যসূত্রঃ
ডাউনলোড লিঙ্ক মডেল পিএসসি ২০০৮
পিএসসি-২০০৮: সহজ পাঠ:মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী
গ্যাস ব্লক ইজারা: এবার সাগর লুটের লাগলো ধুম: দিনমজুর
গ্যাস উৎপাদন কে করবে? দিনমজুর
সাগর বক্ষে গ্যাস ব্লক ইজারার উদ্দেশ্য গ্যাস সংকট মোকাবেল না রফতানি? ভিন্ন চিন্তা

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): PSC 2008তেলগ্যাস ;
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৩২

ফেইসবুকের বুকে বন্ধু ও বন্ধুতা


প্রফাইল পিকচার নিয়া একটা কাহিনী আছে। একদিন আমার মন মেজাজ খুব বিলা। এক ফ্রেন্ডরে ফোন দিলাম। কইলাম যে মন মিজাজ ভাল না। ওয়েদারটাও রেইনি। কয় "তোরে তো আমি হাসতে দেখতেছি।" আমি কইলাম "কৈ?"। কয় "ফেসবুকে তোরে ত সারা দিন হাসতে দেখতাছি। আবার একটা বুইড়া আঙ্গুল খাড়া কইরা চ্যাট দেখাইতাছ। এখন আবার ফোন কইরা মজা লস? জানস বেটা কত ঝামেলার মইদ্দে আছি। অফিস থিকা বাসায় আসতে আইজকা আড়াই ঘন্টা লাগছে..."

ফেইসবুক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠতেছে, এরম দাবিকে আমি একটা সম্পূরক ভাবনায় ফেলাইতে চাই। এইটা সত্য যে, পিসিতে বসলেই আমরা ফেইসবুকে লগইন করি। কিন্তু কেন? বন্ধুরাকে কোথায় কি করল সেইটা জানতে। ফেইসবুক হইল এমন একটা পত্রিকা যেখানে আমার বন্ধুরা লেখে, তাদের ছবি ছাপায়, খরব থাকে। এই বন্ধুরাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ন। ফেইসবুক না। ফেইসবুক উসিলা মাত্র।

বন্ধুত্বের রিকোয়েস্ট আজকাল অনেক পাই। (ভাব মারি নাই। রিকোয়েস্ট ছেলেদের কাছ থিকাই বেশী আসে।শেষ কবে কোন মেয়ের কাছ থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাইছিলাম খেয়াল নাই ;))। তরতর করে বন্ধুসংখ্যাও ৫০০ ছুই ছুই হইয়া গেল ক্যামনে জানি। মাত্র ৮/৯ মাসেই ৫০০! রোজ আরো কত জনায় বাড়াইতেছে বন্ধুত্বের হাত। কে এই নতুন বন্ধু তা চেক করতে, এই রিকোয়েস্ট গুলার জবাবে আমি বিভিন্ন কায়দায় মেসেজ দেই। কিছু স্যাম্পল দিলাম

"ভাইযানরে ঠিক চিনতে পারলাম না। আমার হরলিক্স ফুরায়া গেছে গতমাসে। তাই মেমরী লুজ করতেছি মনে হয়। নিজ পরিচয় দিলে আরাম হইত, ব্রেইনে প্রেসার আসত না"

"আপ্নারে চিন্তার্তাছি না। খাড়ান চশমাটা নিয়া আসি"

"ভ্রাতা তুমাকে কুথায় যেন দেখিয়াছি বলিয়া মনে হইতেছে, কিন্তু সঠিক ইয়াদ আসিতেছে না। নিজ পরিচয় দিয়া ফেলাও"

"প্রফাইলে যে ছবিখানা লটকাইয়াছেন, উহা কোন মনুষ্য প্রাণীর নহে। আপনি কি ভিন গ্রহ হইতে? তাহা হইলে দুঃক্ষিত, আমার আগ্রহ কেবল দুনিয়ার দুপায়া মানুষে" (ভদ্রলোকের প্রফাইলে এলিয়ানে ছবি লাগানো ছিল)

"উটের পিঠের ঐ সাওয়ারী যদি আপনি হন, নিশ্চিত আপনি আমার পরিচিত নন। উট থেকে নেমে ঝটপট নিজ পরিচয় দিয়া বাধিত করুন। খাজ্জুর মোবারক "(ভদ্রলোকের প্রফাইলে উটের পিঠে বসা ছবি লাগানো ছিল)

তবে আজকাল এইসব ভার্চুয়াল বন্ধু বন্ধু খেলা ভাল্লাগে না। সত্যিকারের রক্ত মাংসের বন্ধু চাই। যার সাথে লেকে বইসা বাদাম খাওয়া যায়। যার কাছে বসের নামে নালিশ করা যায়। সেইরম বন্ধু।


অন্যান্য লেখাঃ
তেল-গ্যাস বুঝো না, স্বাধীনতা বুঝো?
জনাব, আপনার মানসিক ভারসাম্য কোন দিকে হালিয়া আছে?
তাপস, বোমা ও প্রথম আলো- ঘুরে ফিরে দেখা

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:২৯

পনরই আগস্টের খুনের বিচারঃ জলপাই ট্যাঙ্কের পিঠে গণতন্ত্র


পনরই আগষ্ট নিয়ে এত বেশী লেখালেখি আর চাপাবাজি প্রতি বছর হয় যে, এই লাইনে কিছু লিখতে ইচ্ছা করে না।

কোন এক জ্ঞানী রাজনৈতিক ইতিহাস বর্ননার গুরুত্ব বুঝিয়ে বলেছিলেন-
"If you can control present, you can control the past. If you can control past, you can control future."

আমার কাছে ১৯ নভেম্বরের রায়ের চেয়ে এর মিডিয়া ইভেন্ট হিসাবে ধামাকাটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। রায়ে অপ্রত্যাশিত কিছুই ছিল না(রক্ষে!)। খুনির ফাসির আদেশ বহাল রাখা হয়েছে। কিন্তু তাকে ঘিরে যে মিডিয়ার অতিআগ্রহ এবং তা মানুষের মানুষের মাঝে সংক্রমিত করার ব্যর্থ চেষ্টা দেখা গেল, তা হাস্যকর। মিডিয়াতে এই "মাহেন্দ্রক্ষনকে" স্মরনীয় জন্য কাউন্ড ডাউন সহকারে যে বিপুল বিশ্লেষনের ছড়াছড়ি দেখলাম সপ্তাহ জুড়ে, তাতে একটা সহজ প্রশ্ন চাপা পড়ে গেল, সেটা হল ভবিষ্যত ভাবনা। সবাই অতীত নিয়েই ভেবেছে...নানান রঙ্গের ব্যাখ্যা দিয়েছে, দিচ্ছে...কিন্তু ভবিষ্যত নিয়ে কেউ ভাবছে না। ভবিষ্যত ভাবনার আলাপে পরে আসছি। আগে কে কি বললো তা খেয়ালে রাখি।

১। পনরই আগস্টের ঘটনা একটি সামরিক অভ্যুত্থান ছিলো।- জনৈক বিএনপিপন্থী সাংবাদিক
--আমার কথা, সামরিক অভ্যুথানে মানুষ মারা জায়েজ আছে কি, জনাব?
২। এইটা ছিল আওয়ামী দুঃশাসন, খুন, লুটতরাজের ফল।
-- খুনের বদলা পরিবারসহ খুন? তাহইলেতো জনাব জিয়ার সপরিবারে খুনটা পেন্ডিং রইছে। নাকি? এরশাদের আবার অনেক পরিবার, উনারটাও পেন্ডিং?
৩। বাকশালীয় শাসন ও রক্ষীবাহিনীকে ইন্ডিমিনিটি দেয়ায় সামরিক বাহিনীর আক্রোশের ফসল-- হুম। এটার যুক্তিযুক্ততা আছে।

১৯৭৪ এর সংবিধান থেকে "জাতীয় রক্ষী বাহিনী এক্ট (সংশোধীত)" Article 3: No suit, prosecution, or other legal proceedings shall be against any member of the Bahini for anything which is in good faith done or intended to be done in pursuance of this order or rule made thereunder.
সহজ তরজমায়ঃ রক্ষীবাহিনীর কারো কোন বিচার হবে না যদি কিনা সেইটা "গুড ফেইথ"নিয়ে করা হয়। প্রশ্ন হলোঃ এই গুড ফেইথ জিনিসটা কিসে? মুজীববাদে?
এরকম ইন্ডিমিনিটি প্রাপ্ত একটি নতুন সশস্ত্র বাহিনীর বেশুমার প্রভাব-প্রতিপত্তি-প্রতাপ, নিঃসন্দেহে তৎকালীন সেনাবাহিনীকে অস্তিত্বের সংকটে ফেলেছিল।

৪। রায়ের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: মওদুদ

৫। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জাতি কালিমাময় এক কলঙ্ক থেকে মুক্তি পেল।

-- বিভিন্ন সরকারের আমলে এই মামলার গতি প্রকৃতি বুঝিয়ে দেয় এই দেশের বিচার বিভাগ কুকুরে টানা স্লেজের মত। এরা চাবুকের কথা শুনে। খালেদা এরশাদের আমলে মামলা কাজ পুরোপুরি বন্ধ, আর আওয়ামীলীগ আমলে শোডাউন সহকারে রায়।হাহ!স্বাধীন বিচার বিভাগ বটে!

৬। রায়টি হোক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দিক নির্দেশনা--গবেষক ও কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ
-- হায় হায় স্যার। ৩৪ বছর পরে রায় দেয়াটাকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দিক নির্দেশনা ধরলে, কোন মামলাই ৩০-৪০ বছরের আগে শেষ হবে না।
৭। খুনিচক্রকে রক্ষা করেছে জিয়া এরশাদ খালেদা সরকার-- মতিউর রহমান
-- জ্বী। করেছে। যেমন আপনারা রক্ষা করেছিলেন জেনারেল মঈনকে।
৮। বাঙালি জাতির কাছে আজকের দিনটি ঐতিহাসিক দিন।তাই ওই রায় সবার মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। আমরা ওই ঐতিহাসিক রায়কে স্বাগত জানাই।--এরশাদ
-- তাহলে খুনিদের দেশে ফিরিয়ে ফ্রিডম পার্টি বানাতে দিয়েছিলেন ক্যানো আপনি?ক্ষমতার মাখন পেয়ে ভোল পালটে ফেললেন?আর কত?

"ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না বলেই, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে"
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে শেখ মুজিবের বংশধরদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা আইন হল। হাস্যকর। যতগুলো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের খুন হয়েছেন...ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, বেনজির, ইসরায়েলের Yitzhak Rabin, আমেরিকার জন এফ কেনেডি... এদের কারো কি নিরাপত্তা ঘাটতি ছিল? না। বরং রাষ্ট্রের সর্বচ্চো নিরাপত্তার মহড়াতেই এদের জীবণ দিতে হয়েছে।

মূল জায়গায় আমাদের কি কোন অগ্রগতি হলো? ১৫ আগষ্টের মত এক রাতে গনতন্ত্র হত্যা করে ক্ষমতা দখলের মানসিকতা আমরা ১/১১ এর পরে আবারো দেখলাম। এবারে একটু ভিন্ন মোড়কে। প্রথমে বলা হল, সামরিকবাহিনী সমর্থিত সরকার (যদিও চাকুরীর নিয়ম বলে সকল সরকারকে সমর্থন দিতে সামরিকবাহিনী বাধ্য... তাহলে এরম হাস্যকর নামকরনের মানে কি দাড়াইল?),এরপর বছর গড়াতেই নাম পালটে সবাই এটাকে জেনারেল মঈনের সরকার বলা শুরু করল। আবার জিয়া-এরশাদের মত গনতন্ত্রের হত্যাকারী খুনি সেনা কর্মকর্তাদের তোয়াজ করতে দেখলাম মুজিবকন্যাকেও। খেয়াল রাখতে হবে, এদের চরিত্র ভিন্ন, কিন্তু উদ্দেশ্য এক। ক্ষমতা। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা-রেহানা-জয়ের একই সাথে পাওয়ার এক্সিসে আসা ও সেইটার হরদম অপব্যবহার করা এইটাই প্রমান করে,ইতিহাস থেকে এরা কিছুই শেখে নি। দূর থেকে কলকাঠি নাড়ার চেয়ে আসন গেড়ে বসাতেই উনাদের আগ্রহ বেশী। বিএনপির কাউন্সিলে তারেক জিয়ার প্রমোশনও এইটাই প্রমান করে, কোথাও কোন অগ্রগতি হয় নাই। ব্যক্তিকেন্দ্রিক (মতাদর্শ বা ইস্যুভিত্তিক নয়) রাজনীতি বা ক্ষমতার তীব্র কেন্দ্রমুখীতা যদ্দিন থাকবে... তদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট থেকে জলপাই ট্যাংক বের হবার ভয় থাকবেই।

তাই আমার অনুরোধঃ ১। সেনাবাহিনীকে নিজের মত চলতে দিন। সামরিকবাহিনীতে রাজনৈতিক প্রমোশন দিয়ে দলবাজির সুফল আজ পর্যন্ত কেউ পায়নি। কাউকে বিশেষ সুবিধা দেয়া মানে...কাউকে বঞ্চিত করা। বঞ্চিতরা বিপথগামী হতে সময় লাগে না।

২। আসামের স্বাধীনতাকামী উলফা চেয়ারম্যানকে পাকড়াও করে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার আগে জানা উচিত... এরা ৩০ বছরের বেশী সময় ধরে যুদ্ধে করছে। হাজারো উলফা সদ্যস্য ও তাদের পরিবার খুন হয়েছে এপর্যন্ত। ৪/৫ হাজার সশস্ত্র যোদ্ধার দলটির নতুন শত্রুর খাতায় নাম তোলার কোন দরকার ছিল না। এদের দেশে ধুকতে না দিয়ে হাত পরিস্কার রাখলেই ভাল হত।

আর কোন ১৫ই আগস্ট নয়, এখন আমাদের দরকার অনেকগুলো ১৬ই ডিসেম্বর। ছবিঃ নাবিল
------------------------------------------------------------
অন্যান্য লেখাঃ
তেল-গ্যাস বুঝো না, স্বাধীনতা বুঝো?
জনাব, আপনার মানসিক ভারসাম্য কোন দিকে হালিয়া আছে?
ব্যানানা বাংলাদেশ-৪ (কি চমেতকার দেখা গেল!)
কন্সপিরেসি থিওরী-পারট ৩ (সিউডো-জঙ্গি রাষ্ট্রের ছায়া)

লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): পনরই আগস্টরাজনীতিবাংলাদেশ ;
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৩৬

কপিরাইট, সাইটেশন ও জাফর ইকবাল সমাচার


দীর্ঘদিন থিকাই আমি বইলা আসছি "গরীবের জন্য কপিরাইট না...ঐটা বড়লোকের খেলা" এবং "আমার লেখা যে কেউ যেকোন অংশ যে কোনখানে প্রচার ও প্রকাশ করতে পারবে আমার সম্মতি ছাড়াই"। আজকে ক্যান যানি নিজেকে গরীব মনে হইতেছে না... বড়লোক মনে হইতেছে। হঠাত আমার এমন ঠাঁট বাড়ার কারন... একটি বিশেষগোষ্ঠী ও মতালম্বীর লোকজন আমার লেখাকে তাদের রাজনৈতিক প্রচারণার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতেছে বইলা মালুম হয়। একাধিক বন্ধু মারফত জানতে পারলাম ফেইসবুকে কে বা কারা আমার লিখা নোট "জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দিয়াছেন?ডেনড্রাইটের কঙ্কালে সবুজ শ্যাওলা" (পোস্টটি ৮৮ জনের ভাল লেগেছে, ৫৩ জনের ভাল লাগেনি ) হুবহু তুইলা দিয়া একটা গ্রুপ খুলছে ফেইসবুকে। নাম দিছে "Jafar Iqbal wants Islamic culture to be out of BD"

এইটারে ফেইসবুক সিকিউরিটির পরিভাষায় Intellectual property infringement বলা হয়ে থাকে। আমি ঐ গ্রুপের নামে ফেইসবুকের আদালতে DMCA (United States Digital Millennium Copyright Act) অনুযায়ী Notice of Copyright Infringement পাঠায়ে দিছি। আজ থেকে আমার লেখার কোন অংশ বা পুরাটাই কোথাও কপিপেষ্ট করলে অবশ্যই আমাকে সাইটেশন দিতে হবে... ব্লগ লিঙ্ক বা নাম দিতে হবে। জানায়া দিলাম কিন্তু।

মিজাজ চড়ার কারন শুধু সাইটেশন না দেয়া না। আরো কারন আছে।

এক। জাফর এন্টিকূলের তৈরী "Jafar Iqbal wants Islamic culture to be out of BD" গ্রুপটার ডিস্কাশন বোর্ডে জনাব Motiur Rahman Nizami নামধারী একলোক বলেছেন "JAFOR IQBAL amader birudde sob somoy kaj kore, Amader Rajakar bole gali dey. Jafor Iqbal-er fasi cai"..................গ্রররররর গ্ররররর

দুই। আমার লিখার শেষে পুরাতন লিখার লিঙ্ক থাকে। এই গ্রুপের তৈয়ারকারক এতই মাথা মোটা যে ...পোষ্টের শেষে আমার পুরাতন নোটের লিস্টটাও কপিপেষ্ট করেছেন। যার শেষে ছিল "আমার বউ কই?" পোষ্টটা।কিসের মইদ্দে কি?

তিন। এই বা*ছা* গ্রুপকে রিপোর্ট করার জন্য আবারে ভক্তকূল প্রচারনায় ঝাপায়া পড়ছে। এই গ্রুপে গ্রুপে নেংটি যুদ্ধ আমার ব্যাপক এলার্জি লাগে।

চার। গ্রুপের নামের সাথে আমার লেখার কোন সংশ্লিষ্টতা নাই। জাফর ইকবাল ইস্লামিক কালচারের পক্ষে না বিপক্ষে এইসব নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নাই তা আমার লেখায় সুস্পষ্টভাবেই ছিল---- "তবে আমি কিন্তু ঈমান, দেশপ্রেম মাপার নিক্তি নিয়া বসি নাই।জামাতি ভাইদের নিক্তি আছে...ঈমানের বাটখারাও আছে হয়ত... উনাদের কাছে যান জাফর স্যারের দেশপ্রেম ও আস্তিকতা মাপিতে।উনার কোন লেখায় ইসলামকে চিমটি দিয়াছেন... তা খুজার সময়ও আমার নাই। রোজ হাশরেই সকলের ফলাফল প্রকাশিত হইবে... সুত্রাং এবিষয়ে এন্তার গবেষনার প্রয়োজন নাই।"

ব্যাপারটা আরো পরিস্কার করতে বলি ---গ্রুপের এডমিন
* Mohammad Waliuddin Tanvir, Jannatul Ferdaus Nijhum
,Arik Hossain, * Hussain Shahria , Nazmus Sakib Nirjhor (University of Dhaka) (creator) এরা কেউ আমার ভাই ব্রাদার না। এই গ্রুপের সাথে আমার কোন যোগাযোগ নাই।

এর সাথে যোগ হইছে, জাফর স্যারের নাচাপিচার ভিডিও। উনি 'নো এন্টি' নামক হিন্দী গানের তালে উনার কিছু ছাত্রীকে নিয়ে নাচার ভিডিও কারা জানি ইউটিউবে ছাইড়া দিছে। এদের একজন shamim992 (youtube ID)....Country: Malaysia. কিছু জাফরমূর্ছা (জাফর স্যার বলিতে যে মুর্ছা যায় তাহাকে জাফরমূর্ছা বলে) ভাই আমাকেই shamim992 বলে সন্দেহ করতেছে। আমি জাফরমূর্ছা ও জাফরকুচ্ছা, সবাইকেই জানাইতে চাই, কে কোথায় কাকে নিয়া নাচল... গলায় ধরে নাচল নাকি কোমর ধরে নাচল... এইসব কাসুন্দি ঘাটায় আমার কোন আগ্রহ নাই। আমি ঘবেষক মানুষ, লেখার জবাব লেখা দিয়ে দেই। গসিপ রাইটিঙ্গে আমার আগ্রহ নাই। তারচেয়ে বড় কথা SUST এর ছাত্রীহলে আমার "নো এন্ট্রি"। আমার কোন ভইন, কিংবা ভাইয়ের ভইন SUST তে পড়ে না। তাছাড়া অপরের একটি ঘরোয়া টাইপ ভিডিও বিনা-অনুমতিতে ফেইসবুকে শেয়ার করার পক্ষপাতী আমি না। সঞ্জীব বলছিল "বাঙ্গালির প্রাইভাসি শুধু বাথরুমে"। কঠিন খাটি কথা। আমেরিকা ফেরত শিক্ষক নাচনাচি করলেও দেখি লোকে গেলরে গেলরে রব তোলে। হাহ!এদিকে নিজের পোলা যে ইয়াবাবা খায়...সেই হুশ নাই।
------------------------------------------------------------
অন্যান্য লেখাঃ
পনরই আগস্টের খুনের বিচারঃ জলপাই ট্যাঙ্কের পিঠে গণতন্ত্র

তেল-গ্যাস বুঝো না, স্বাধীনতা বুঝো?

জনাব, আপনার মানসিক ভারসাম্য কোন দিকে হালিয়া আছে?

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:০৫

মনের বাঘ যখন ঘরে- আমাদের "ভারতীয় কৃতজ্ঞতাবোধ সিন্ড্রম" ও চতুষ্পদীয় রচনাসমগ্র

ভারত- বাংলদেশ দ্বিপাক্ষীক বৈঠক, তার ফলাফল আর যৌধ বিবৃতির আলোচনায় সুসপষ্ট বিপরীত দুই পক্ষ দেখা গেল। পেপার-পত্রিকা, টক শো, ব্লগ সবখানে। সমস্যাটা হইল ভারত ইস্যুতে দুই পক্ষ আগেই হয়া ছিল। একদল কোন ভাবেই ভারতের সাথে কোন কিসিমের চুক্তি করতে রাজি না। বরং দেশ উলু ধ্বনিতে ভইরা যাবে,বিক্রি হইয়া যাবে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বরবাদ হইয়া যাবে, এইরকম একটা ধারনা প্রচারে সচেষ্ট। আরে মিয়া, তোমার তিন দিকে ভারত। দরজা বন্ধ কইরা কয় দিন থাকবা? ম্যাপটা দেখো। ডানে বামে ব্যবসা বাণিজ্যের বাজারটা দেখ। আর হিন্দু ধর্মপ্রচারে ভারত সরকারের কোন আগ্রহ নাই। যার সাথে দেন দরবারে বসতেছেন...তার আগ্রহ কোথায় সেইটা জানা জরুরী। উনাদের আগ্রহ বিদ্যুত, পেট্রোলিয়াম(মানে তেল-গ্যাস), ট্রানজিট, ব্যবসায়িক প্রভাব বিস্তার, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পারমানেন্ট মেম্বারশিপ পাওয়া...এইসবে।

আরেক দল আছে,৭১ এর কৃতজ্ঞতাবোধ সিন্ড্রমে আক্রান্ত। ৭১ এর কৃতজ্ঞতা আইজো তাদের ভাষণের আগা পিছায় ঝইড়া পড়ে। তাই ভারতীয় কূটনীতিকরা আমাদের দালাল, চোর, জঙ্গি যা খুশি তাই বলার এখতিয়ার রাখেন। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রি চুপ থাকেন। ৭১ এর কৃতজ্ঞতা দেখানি ভদ্রতা অনেক হইছে। আমেরিকা যেমন সোভিয়েত মারতে আফগানদের বিলিয়ন ডলারের যুদ্ধাস্ত্র দিছে, সেরম সোভিয়েতরাও ভিয়েতনামিজদের সাহায্য দিয়া আমেরিকাকে শায়েস্তা করছে। কৈ...আফগানিস্তান বা ভিয়েতনামকে এত কৃতজ্ঞতায় গদগদ করতে দেখি না। বাস্তবতা বুঝেন। ভারত কোন দিনই আমাদের সাহায্য করতো না, যদি আমাদের "কমন" শত্রু পাকিস্তান না হইত। সহজ স্ট্যাটেজিক্যাল হিসাব। ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে এইসব টাইনা ভারতরে আপার হ্যান্ড দেয়ার কোন মানে নাই।

যাহোক ভারত- বাংলদেশ দ্বিপাক্ষীক যৌধ বিবৃতির আলোচনায় ১০ এর একটা স্কেলের উপরে মার্কিং করতেছি সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। যাতে ভারত- বাংলদেশ কার স্বার্থ কিরম রক্ষিত হইল তা পরিস্কার বুঝা যায়। আজকাল হুমায়ূন আহমেদ থিকা শুরু কইরা প্রথম আলোর মতিউর রহমান সবাই চতুষ্পদীয় রচনা লিখতেছেন এইবিষয়ে...তাই আমি একটু অংকের সাহায্য নিলাম।

১। ট্রানজিটঃ অনুচ্ছেদ ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ৩৩, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯। ট্রানজিট জিনিসটা বুঝার আগে ম্যাপটা দেখেন। বাংলাদেশের একদিকে ভারতের সাতটা স্টেট আছে, যাদের বলে Seven Sister States। মূল ভারতের সাথে এদের যোগাযোগ শিলিগুড়ি করিডোর দিয়ে। এই চিকন শিলিগুড়ি করিডোর নেপাল আর বাংলাদেশের ফাকে। তাই এই ভৌগলিক সুবিধাকে কাজে লাগায়ে আমরা ভারতের কাছে স্থল ও জলবন্দর ব্যবহার করতে দিয়ে ভাল মুনাফা নিতে পারি। বিনিময়ে নেপাল, ভূটানে আমাদের পণ্য পরিবহনে সুবিধা চাইতে পারি। আবার ন্যায্য পানির হিস্যাও, শূন্য শুল্ক-সুবিধাও আদায় করা যেতে পারত। কিন্তু কি পাইলাম? নেপাল ভূটানে পণ্য নেয়ার সুসপষ্ট কোন পয়েন্ট দেখলাম না। কিন্তু ভারত ঠিকি মংলা, চট্রগ্রাম বন্দর, to and from India through road and rail পণ্য পরিবহনে ইজাজত লেখায়ে পড়ায়ে নিল। ২৩ নং পয়েন্টটা পড়লে ভারতের আনকম্প্রমাজিং মনোভাব সুস্পষ্ট হয়।
"23. It was agreed that Bangladesh will allow use of Mongla and Chittagong sea ports for movement of goods to and from India through road and rail. Bangladesh also conveyed their intention to give Nepal and Bhutan access to Mongla and Chittagong ports." প্রথম লাইনে "was agreed" বলে মংলা ও চট্রগ্রাম বন্দর ব্যবহারে বাংলাদেশের সম্মতি নেয়া হল। দ্বিতীয় লাইনে নেপাল ভূটানের বেলায় শুধু জানানো হইল "intention to give". নেপাল ভূটানে বিষয়ে একি কিসিমের ধোয়াশা রাখা হইছে ২৬ ও ৩৮ নং এ। আমরা এখনো দুইপাতা ইংরাজী পইড়া স্বাক্ষর দিবার মত লায়েক হইয়া উঠতে পারি নাই। স্বীকার করেন?

তাছাড়া একি সাথে জল ও স্থল ট্রানজিট দেবার মতো মেচিউরিটি কি এই প্রতিনিধি দলের ছিল? কোন এসেসমেন্ট করা হয়েছে কি? আমাদের অর্থনীতিতে এর প্রভাব কিরম পড়বে? আমাদের ইনফারস্ট্রাকচার (রাস্তা, কাষ্টমস, নৌবন্দর) কতটা ক্যাপাবল এই বিশাল ট্রাফিক সামলাইতে? কিছুই করা হয় নাই!
বাংলাদেশ- ২, ভারত- ৮

২। ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণঃ যদিও এইটাকে প্রধানমন্ত্রী "সবচেয়ে বড় সাফল্য" হিসাবে প্রচার করতেছেন, তারপরেও আমি এইখানে বাংলাদেশ- ০, ভারত- ১০ পয়েন্ট দিব। আমরা কোন ঋণ সুবিধা নেয়ার জন্য আমরা ভারতে যাই নাই। বরং ভারত এইটা আমাদের গিলায়ে দিছে। কারন এইটার সুদের হার ১.৭%। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এই ঋণ দিলে সার্ভিস চার্জ দিতে হইত ০.৭৫%। তার উপরে এইটা ক্রেডিটরস লোন। মানে বাংলাদেশ রেলের ইঞ্জিন-বগি, সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপের উন্নয়ন, বাস ক্রয় এবং ড্রেজিং প্রকল্পের জন্যই শুধু এই ঋণের টাকা ব্যবহার করা যাবে। হয়ত শুধু ভারতীয় বাস, বগি, মেশিনারীই কেনার শর্ত দেয়া হবে। আগ বাড়ায়ে এরম একটা ফান্দে পা দেয়ার কোন মানে খুইজা পাচ্ছি না।
বাংলাদেশ-০, ভারত- ১০

৩। তেল গ্যাস সমুদ্র সীমানাঃ সীমানা নির্ধারন নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয় নাই। জাতিসংঘে এইটার মীমাংসা হবে। এইটা ভাল হইছে।
বাংলাদেশ- ৫, ভারত- ৫

৪। টিপাইমুখ বাঁধ ও নিষ্ফলা পানি চুক্তি সমূহঃ টিপাইমুখ বাধ বন্ধের কোন দাবিই জানায় নাই আমাদের প্রধানমন্ত্রী। টিপাইমুখ বাধের পক্ষে সাফাই গাইতে গাইতে তিনি দেশে আসছেন...আর আগের করা তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টনের সমস্যাগুলান নিয়া হাসিনা সরকারের কোন মাথাব্যথা নাই বইলা মনে হইল।
বাংলাদেশ- ০, ভারত- ১০

৫। আতংকবাদঃ সন্ত্রাসী ধরতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে আমার কোন আপত্তি নাই। কিন্তু ভারতীয় সরকার ও মিডিয়া যে কথায় কথায় বাংলাদেশকে "আতংকবাদীদের আতুড়ঘর" প্রমাণে উইঠা পইড়া লাগছে...সেইখানে আমার আপত্তি। আমরা আমাদের সবচেয়ে বড় জঙ্গিগুলানরে ধরছি, ফাসিও দিছি। ইন্ডিয়া কয়টা পারছে? বরং উনাদের জঙ্গিরাই আমাদের মাটিতে ঢুকছে... ধরাও পড়ছে।"আতংকবাদীদের আতুঁড়ঘর" দায়টা উনাদেরই দেশি, আমাদের না।
বাংলাদেশ- ৫, ভারত- ৫

৬। জাতিসংঘ ও অন্যান্যঃ সুকৌশলে জাতিসংঘে ভেটো পাওয়ার হবার জন্য ভারত আমাদের দলে টানছে ৪৮ নং অনুচ্ছেদে। আমরাও বেকুবের মত কোন শর্ত না দিয়া "জ্বী হুজুর, সঙ্গেই আছি" জানায়া দিলাম। পানিবন্টন, সমুদ্র সীমানা ছিটমহল, বর্ডারে শতশত খুন...এত ঝামেলা যার সাথে তারে বিশ্বমোড়ল বানাইতে হাসিনা সরকারের এত আগ্রহের হেতু বুঝলাম না।
বাংলাদেশ- ০, ভারত- ১০

৭। ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতঃ ভারত নিজেই চরম বিদ্যুত সংকটে আছে। ইন্টারন্যাশাল এনার্জি এজেন্সীর হিসাব মতে, ২০৩০ সালে বিশ্বের মোট এনার্জি ডিমান্ডের ৫০% এর বেশি অংশ ভারত ও চীনের থাকবে। সুতরাং ২৫০মেগাওয়াট, যা কিনা আমাদের বিদ্যুত ঘাটতির খুবি ছোট্ট একটা অংশ, ভারত আদৌ কেনার মতো দামে ছাড়বে কিনা সন্দেহ আছে। মানে দাড়াইলো, পুরাটাই ব্লাফ।
বাংলাদেশ- ০, ভারত- ০

৮। শূন্য শুল্ক-সুবিধাঃ এইটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। অনেক দিন থিকাই এই মূলা আমাদের নাকের সামনে ঝুলতেছে, কিন্তু ক্যান জানি খাইতে পারতেছি না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) আওতায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জন্য বাজার খুলে দিতে হচ্ছে। গত নভেম্বরে জেনেভায় জানুয়ারি ২০১০ থেকে বাজার খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ব্রাজিল। ভারতকেও একই ধরনের ঘোষণা দিতে হবে। কিন্তু দিল কৈ?
বাংলাদেশ- ০, ভারত- ১০

৯। বৃত্তিঃ ভারত সরকার আমাদের সরকারী চাকুরেদের কিছু বৃত্তি দিতে চেয়েছেন। নিঃসন্দেহে তা কিছুটা হইলেও বাংলাদেশের অর্জন।
বাংলাদেশ- ১০, ভারত- ০

১০। ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কারঃ বাংলাদেশের পক্ষে টিপসই দেয়ার জন্য এটা মুটামুটই ভাল একটা পুরস্কার। কি বলেন? যৌধ ঘোষণায় এইটা থাকলে আরো মজাক পাইতাম।


অনেকেই ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে যাবে, ট্রাকের ড্রাইভারদের জন্য রাস্তার দুপাশে আমরা চটপটি বিক্রি কইরা অনেক পাইসা কামাব...এইরম সুখচিন্তায় জনগণরে অস্থির কইরা ফেলাইতেছেন। আবার মতিউর রহমান, হুমায়ূন আহমেদরা মনের বাঘ শিকার করতে কলম হাতে নামছেন। এদিকে "মনের বাঘ যে ঘরে" ঢুইকা গেছে সেদিকে খেয়াল নাই।


বাংলাদেশের পক্ষে আলোচনায় অংশগ্রহনকারী দলটি দেশ ছাড়ার আগে কি কি ইস্যুতে বাংলাদেশ দেনদরবার করবে...তা কি প্রকাশ করেছিল?---না
ব্যবসায়ী, ডিফেন্স স্পেশালিস্ট, পাওয়ার সেক্টরের কনসাল্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার কি প্রধানমন্ত্রীকে বিফিং করেছিলেন-?-- না
সরকারের বিগত ১ বছরে ট্রানজিট বিষয়ে কোন মন্ত্রাণালয় কি কোন রকমের নিরিক্ষা চালিয়েছে?--- না
এর মানে বাংলাদেশের স্বার্থ সম্পর্কে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ওয়াকিবহাল ছিলেন না। চুক্তির প্রতিটি লাইন ভারতের লিখা এবং পূর্ব নির্ধারিত। হয়তো ব্যাপারটা ইলেকশনের পূর্বেই মীমাংসা হয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের প্রবল জনপ্রিয়তার পূর্ণ স্বদব্যবহার করল ভারতের কূটনিতীকরা। দূর্দান্ত মাস্টার প্লান।

মোট ফলাফলঃ বাংলাদেশ- ২২, ভারত - ৫৮

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ
The Daily Star: 2010-01-13. Full text of jt communiqué
শওকত হোসেন মাসুমঃ ভারত থেকে ঋণ নয়, বাণিজ্য সুবিধা পাওয়া বেশি প্রয়োজন
মতিউর রহমান | তারিখ: ২২-০১-২০১০। মনের বাঘ তাড়াতে হবে
ব্লগারঃ একান্ত কথা"কৃতজ্ঞতাবোধ সিনড্রম" ও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা
ব্লগারঃ পি মুন্সি হাসিনার ভারত সফর: যৌথ ঘোষণার সুক্ষ কারচুপি

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:৩১

বুয়েটের ঝড় ডুয়েটেও আসিতেছে! হুশিয়ার!

পূর্বপাঠের পুনরালোচনাঃ "ক্যান্টিনে শোরগোল!- বাই বুয়েটিয়ান ফর বুয়েটিয়ান অফ বুয়েটিয়ান" শীর্ষক প্রবন্ধে আপনারা জানিয়াছেন, কি করিয়া ছাত্রন্যাতাদের সবুজ ঘাস ও ইউরিয়া খাইবার দাবির মুখে বুয়েটের নজরুল হল ক্যান্টিন বন্ধ করিয়া দেয়া হোইয়াছে। এই ঘটনাকে পুজি করিয়া কিছু সংখ্যক হলুদ পাঞ্জাবি পরিহিত সাংবাদিক, ফলাও করিয়া প্রচার করিয়া দেয় যে "অমিত সম্ভাবনার প্রতিনিধিদের চাঁদাবাজির দরুন হল ক্যান্টিন বন্ধ হইয়াছে"। লোক মুখে শুনিয়াছি, আমার ডিবাংক প্রবন্ধ পড়িয়া অনেকেই জিব কাটিয়া উক্ত পত্রিকা পড়া পরিহার করিয়াছেন।

এরম অবস্থায় আবারো একটি হলুদ খবর পড়িয়া মেজাজ চটিয়া গেল। এবারে লেখিয়াছে "আলোচ্য জনপ্রিয় অমিত সম্ভাবনার প্রতিনিধি নাকি ডুয়েটের শিক্ষক পদ লাভ করিয়াছেন। এবং এই নিয়োগের পর হৈতে 'ডুয়েট শিক্ষক বিনিয়োগ বোর্ডের' পশ্চাতদেশ হৈতে দলীয় রাজনিতীর ধোয়া বাহির হইতে দেখা গেচে" । আরো শুনা গেচে, ডুয়েট ক্যান্টীন মালিকরা নাকি পূর্ব হৈতেই সবুজ ঘাস ও ইউরিয়া সার জোগাড়ে ব্যস্ত। ডুয়েটে প্রতিটি সবুজ মাঠে এখন ঘাস মাড়াই করা শুরু হোইয়াছে। চারিদিকে নবান্নের থুরি নব-ঘাসের উত্তসব। সকলেই তৈয়ার অমিত সম্ভাবনার প্রতিনিধিকে বরণ করিতে।

প্রথম না হৈয়াও, পরীক্ষালব্ধ ফল খারাপ হৈয়াও, কি করিয়া আমাদের অমিত সম্ভাবনার প্রতিনিধি সবাইকে ডিঙ্গাইয়া শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভ করিলেন?
ডুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান, ওই 'বি'নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ড. মো. শওকত ওসমান সাংবাদিকদের এরুপ ত্যাড়া প্রশ্নের জবাবে বলেন "মৌখিক পরীক্ষাটায় সে এত ভাল করেচে, যে উনাকে না নিয়ে পারা গেল না"। হুম! জীবনে এত মৌখিক পরীক্ষা দিয়াছি, কেহ "প" বলিলে আমি প্রশ্ন বুঝিয়া উত্তর দিয়া ফেলাই। ফলাফল "প্রশ্ন না বুঝিয়া উত্তর দেয়ার জন্য অকৃতকার্জ"। যা হোউক। এরুম জাহাবাজ মৌখিক পরীক্ষা দেনে ওয়ালার নিকট হৈতে কিছু টিপস নিবার জন্য প্রান উতলা হৈল। জিমেইল পায়রার পায়ে বাধিয়া প্রশ্ন পাঠাইলাম "কী করিয়া তুমি এমন মৌখিক পরীক্ষা দাও, গুনীন!"। জবাব আসিল "এ আর এমন কি! প্রশ্ন সোজা ছেল!"। বিনয় বিনয়, মহানরা এমনি হয়। বিলক্ষন বুঝিয়াছি। শুধাইলাম "প্রশ্নগুলো উত্তরসহ পাঠাইলে কৃতার্থ হৈ"। এইবার দীর্ঘ উত্তর আসিল, গলায় এটাচমেন্ট বাধা পায়রা। খুলিয়া পড়িলাম-
"জনাব, পদধুলি নিবেন। অনেক পরিশ্রম করিয়া মাথার পেশীগুলি পিশিয়া সেদিনের প্রশ্ন ও উত্তর মেমরী কুঠুরী হৈতে বাহির করিয়াছি। সারাজীবণ কৃতজ্ঞ থাকিবেন আশা করি"।

প্রশ্ন ১। বাবা তোমার নাম কি?
উত্তর। অমিত সম্ভাবনা
প্রশ্ন ২। বাহ বাহ। সুন্দর নাম। তোমার অপেক্ষাতেই আমরা ছিলাম। ভিসি সাহেব স কাল হৈতে ফোন করিয়া তোমার নাম স্মরণ করাইতেছেন প্রতি ঘন্টায়। হেহে(বিগলিত হাসি)। সকালের নাস্তা খেয়ে এসেচ, না গিয়ে খাবে?
উত্তর। আজ্ঞে না, নাস্তা হয়নি। নজরুলের ক্যান্টীন বন্ধ রৈয়াছে। জানেন নিশ্চয়?
প্রশ্ন ৩। হ্যা হ্যা, জানবনা ক্যানো। তো তুমি যাও তবে... তোমার পরীক্ষা শেষ।
উত্তর। এ কি করিয়া হয়। রাত জাগিয়া এত এত পড়িয়া আসিলাম। আপনারাতো কিছুই জিজ্ঞাসা করিলেন না।
প্রশ্ন ৪। তবে তো প্রশ্ন করিতেই হয়। একটা অংক ধরি, তুমি চাদা চাহিলে ৫০হাজার, পাইলে ১০ হাজার। এখন বলতো, ২০ হাজার টাকা চাদা লাভ করিতে হৈলে তোমাকে কত চাহিতে হৈত?

উত্তরঃ হেহে। দাদা পাগল আছেন নাকি? ভাবিয়াছেন দ্বিগুন চাহিলেই দ্বিগুন পাওয়া যাইবে? হেহে। ২০ হাজার পাইতে হৈলে ১ লক্ষ টাকা দাবি করিয়া কোন লাভ নাই। ব্যাটা কঞ্জুস ক্যান্টীন মালিক কিছুতেই ১০ হাজারের বেশী দিবে না। আমি চাহিয়াছি বলিয়া ১০ হাজার দিয়াছে। স্বয়ং শেখ কামাল কবর হৈতে উঠিয়া আসিলেও এর চাইতে বেশী চাদা আদায় করিতে পারিত না।হুহ! ২০ হাজার টাকা চাদা পাইতে হৈলে ৫০ হাজারই চাইতে হবে, তবে দুইজনের কাছে। নজরুলের ক্যান্টিন ও আউল্লার ক্যান্টিন।

আমার এই উত্তরে চমৎকৃত হৈয়া, তাৎক্ষনিক প্রশ্নকর্তা মূর্ছা যান।।"

ক্যান্টিনে শোরগোল!- বাই বুয়েটিয়ান ফর বুয়েটিয়ান অফ বুয়েটিয়ান

ছাত্রাবাসে বেশ গোলযোগ হইতেছে। খোদ পিয়ন চাপ্রাশিরাও ত্যক্ত। সকলের মুখে একই অভিযোগ "ক্যান্টিনে নাস্তা করিয়া সুখ হইতেছে না। ক্যান্টিনে ভর পেট নাস্তা করিলেও বৈকাল পার হইতেই লুঙ্গির প্যাচ হালকা হইয়া যায়।" দিনের পর দিন অপুষ্টি চলিতে থাকায় ছাত্রদের পশ্চাদদেশের চর্বিস্তুপ গলিতে লাগিল। কোমরবন্ধনীর কাটা নামিতে নামিতে এমন অবস্থায় নাবিল যে, অস্ত্রপচার করিয়া নতুন ফুটো না করিলেই নয়। বাতেল ছাত্রদের ব্যাপক স্বাস্থ্যহানি ঘটায় অনেকের ছাত্রী-প্রেমিকা অন্যত্র ভাগিয়া গেল। এমতাবস্থায় আতেল ছাত্রকূলও ক্ষেপিয়া উঠিল। তাহারা কাষ্ঠনির্মিত শক্ত চেয়ারে বসিয়া পাঠে মনোযোগ দিতে পারিতেছিল না। পশ্চাদদেশের ব্যথায় উহাদের বিদ্যা ধ্যানে ব্যাঘাত ঘটিল। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করিতে নজরুল হলের কমন রুমে ছাত্রকূল এক্ত্রিত হইল।

একজন টিংটিঙ্গে ছাত্র দাড়াইয়া কহিল "ভাই সকল এরুপ আর চলিতে দেয়া যায় না। অপুষ্টির কবলে পড়িয়া... গেল মাসে আমাদের ফুটবলদল গোহারা হারিয়া ১ম রাউন্ডেই বিদায় নিয়াচে। হলের মান ইজ্জত খানদান ধুলায় মিশিয়া গিয়াছে।"
আরেক বিজ্ঞ ছাত্র ল্যাপটপ খুলিয়া এক্সেল শিট দেখাইয়া বলিতে লাগিল "গেল টার্মে আমাদের হলের মাথাপিছু সিজিপিএ নামিয়া গিয়া এখন ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন... "
একজন সাধারন ছাত্র প্রতিনিধি দাড়াইয়া হাকিল "ইহা স্মরণকালের সবচাইতে বড় বিপর্যয়, একাডেমিক ও এক্সটা কারিকুলার জগতে আমরা ক্রমেই পিছাইয়া যাইতেছি। আমাদের ঐতিহ্য সমুন্নত রাখিতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকেই ভাবিতে হইবেক"।
গোল বাধিয়া গেল কি করা যায় তা লইয়া। নানা মুনির নানা মত। শেষে সাব্যস্ত হইল "হল ক্যান্টীনের উপর কড়া নজর রাখা হইবেক, এর হিসাব কিতাবে স্বচ্ছতা আনিতে কম্পুটারাইজ করা হইবেক। খুজিতে হইবে ক্যানো খাদ্যমান নামিয়া যাইতেছে.. "। আলোচনা ভালই চলিতেছিল...কিন্তু ন্যাতারা আসিয়া বিবাদ বাধাইল। ন্যাতাদের পেশী বহুল শরীর...ছাত্রকূল দিন দিন শুকাইলেও...ন্যাতারা ক্যানো যানি তাগড়া হইয়া উঠিতেছেন। ক্ষমতাসুখের কারনেই কিনা। ন্যাতারা হুমকি দিয়া বলিলেন "ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ...জানা আচে নিচ্চয়...যে যার গর্তে না ঢুকিলে খবর করিয়া দিব কিন্তু"। যে যার মত রুমে চলিয়া গেল।


কিন্তু পরদিন হইতে নজরদারি চলিল... চুপি চুপি। সারাদিন কোন কিছু ধরা পড়িল না। কিন্তু রাত্রি ৪ ঘটিকায় ক্যান্টিনের পাশে টিংটিঙ্গে সেই সাধারন ছাত্রপ্রতিনিধি, চেচাইয়া লোক জড়ো করিল । টিংটিঙ্গের হাক শুনিয়া অনেকে নামিয়া আসিল ...কি হইয়াছেরে? টিংটিঙ্গে একখানা ত্রিচক্র-যানের পাশে দাড়াইয়া আছে। ঘটনা যাহা জানা গেল..."টিংটিঙ্গে হল ক্যান্টিনের সামনে ভ্যানচালক আর ক্যান্টিন মালিককে কথা কহিতে দেখিয়াছে। আগাইয়া আসিতেই...টিংটীঙ্গেকে দেখিতে পাইয়া ভ্যানচালক আর ক্যান্টীনের মামা উভয়েই দৌড়াইয়া কোথায় জানি লুকাইয়াছে"। ভ্যানে বিশাল ...সাদা বস্তা। সমবেত ছাত্ররা বস্তা কাটিয়া দিল। হড়হড় করিয়া বস্তা হইতে সবুজ ঘাস পড়িল। আর পাওয়া গেল ছোট একবস্তা ইউরিয়া সার। ক্ষুধার্ত মানুষ দ্রুত ক্ষেপিয়া যায়। তাই ছাত্ররাও ক্ষেপিয়া ক্যান্টিনে হানা দিল..."কোথায় গেলিরে ...হতভাগা ক্যান্টীন মামা"। শোর শুনিয়া ভয়ে ক্যান্টিন মামা লুঙ্গি তুলিয়া পালাইয়া গেল। দরজা ভাঙ্গিয়া ভিতরে ঢুকিল। ক্যান্টিন বয়দের শুইবার ব্যবস্থা ভিতরেই...উহারা জাগিয়াছে আগেই। অগ্নি মূর্তি ছাত্রদের দেখিয়া সব বলিয়া দিল..."ন্যাতারা পুষ্টি বাড়াইতে সবুজ ঘাস আর ইউরিয়ার মিশ্রণ অর্ডার দিয়াছে ক্ষমতায় আসিয়াই...প্রথমে ভালই চলিতেছিল...কিন্তু সারাদেশে সবুজ ঘাসের আকাল পড়ীল...পাশের অক্সফোর্ডে আর কবিরাজখানাতেও ব্যাপক মাত্রায় সবুঝ ঘাসের অর্ডার আসাতে...সবুঝ ঘাস আর ইউরিয়ার দাম বাড়িয়া গেল... খরচা কমাইতেই সাধারন ছাত্রদের খাবারে টান পড়িল...সেই জন্যই হালিমে মাংস নাই, বার্গারে কিমা নাই, সসে টমেটো নাই, জিলাপিতে শিরাও নাই"। সকলেই বুঝিতে পারিল...তাহাদের দূরাবস্থার মূল কারন কি! প্রভোষ্টের বাড়িতে সেই ভোর রাত্তিরেই ফোন বাজিল...। প্রভোষ্ট ধড় স্যার ধড়মড় করিয়া ঘুম হইতে উঠিলেন। ফোনে ২/১ মিনিট বৃত্তান্ত শুনিলেন...অস্থির প্রকৃতির মানুষ উনি... কিন্তু সবুজ ঘাস আর ইউরিয়া দিয়া নেশা করিবার বর্নণা শুনিয়াই...হাকিলেন "পিএলের মধ্যে কাহিনী ফাদিয়াছ?...ভাবিয়াছ গোল বাধাইলেই পরীক্ষা পিছাইবে?...নটাঙ্গির দল...আজ হইতে তোদের ক্যান্টিন বন্ধ। পড়িতে বস সকলে "। বলিয়া খটাশ করিয়া ফোন কাটিয়া দিলেন।

পরদিন খবরে প্রকাশঃ প্রথম আলো - ছাত্রলীগের চাঁদা দাবির মুখে বুয়েটের হল ক্যানটিন বন্ধ

ক্যান্টিনে শোরগোল! দ্বিতীয় পর্ব

যে কারনে রকিবুল অবসরে...বাঙ্গাল এক্স-ক্লুসিভ

"হারবিচ্চারে তোবা কৈরা, বল খেলাডা চাড়"- এরাম একটা গান শুঞ্ছিলাম। কিন্তু আমরার রকিবুল যে হাচা হাচাই তোবা কৈরা বল খেলা চাইড়া দিব...ইরাম বুঝি নাই। অবসর লওনটা আমাগো কালচারেই নাই। কবরে এক পা, এক হাত ঢুইকা রইছে, ঝাতি অবসর ছাইতাছে, তাও অবসর নেয় না এরম কত আছে। আমাদের নান্নু, আকরামরে অবসর দিতে কিরম ঝক্কি গেছে...তা নিশ্চয় সক্কলের ইয়াদ আছে । যাজ্ঞা, মূল কাহিনী হৈল, ২২ বছরের চেংড়া পোলা অবসর-অবসর খেলা শিখল কৈত্থে? চাচা-মামারা তো এরম ছিল না। কাহিনীডা কি?আজকের দিনে এইটাই বাংলাদেশে মিলিয়ন পৈসার প্রশ্ন।

ঢাকার বাতাস থিকা যেইসব স্পেকুলেশন জানা গেছে হের মইদ্দে সরকারী দলের ভাষ্য "আশরাফুলরে বাদ দেয়ায় মির্জা আব্বাস গোসসা হৈয়া (এলাকার পুলা বাদ গেলে দরদী নেতা বেজাড় হৈতেই পারেন)...রকিবুলের বাসায় তবারক পাঠাইছেন"। আব্বাস সাহেবের তবারকে এমন কিছু ছিল "হি(রকিবুল) কান্ট ডিনাই ইট"।

বিরোধী দলের ভাষ্য "লুডা থুক্কু লুটাস কামালের সাথে তেড়িবেড়ি করায় সে...রকিবুলরে আরামে বসতে কৈছে"।ছুডু বেলায় পিটি ক্লাসে "আরামে দাঁড়াও" শুনছি। কিন্তু "আরামে বসা" কি জিনিস সেইটা আইজগা বুঝলাম।

এদিকে আমাদের এরশাদ নানা বলেছেন "আজকাল কার ছেলে পেলেরা ২২ বছরেই ফুরিয়ে যাচ্ছে, স্ট্যামিনা নেই। আমার মতএকটা লং ইনিংস খেলার সামর্থ্য এদের নেই। আপা যদি ক্রিড়া মন্ত্রানালয়ের দ্বায়িত্ব আমাকে দিতেন তাহলে আজ এসব হোত না। আমি ওদের যৌবণ ধরে রাখার, বল বৃ্দ্ধি করার টিপস দিতাম"।

যাজ্ঞা পলিটিকাল প্যাচাল শুনার জন্য আপ্নারা নিশ্চয়ই বাঙ্গালের লেখা পড়েন না। আপ্নারা চান বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ বিশ্লেষন। হেহে। আমি জানি। তাইতো নানা দিকে আতাপাতা লাগায়া জানতে পারছি আসল কারন।

পোলার বয়স ২২। দিলটা নরম। দ্যাশে বিদাশে খেলাধুলা কৈরা তার নরম দিল বেচইন হৈছে। সে ভাল ছেলে। উলটাপালটা কিছু করে নাই। পরিবাররে জানাইছে তার দিলের কথা। কিন্তু পরিবার তারে ২২ বছরে বিয়া দেবে না। বাপে কৈছে "তুই টেস্টে একটা সেঞ্চুরি কর্তার্লে বুঝহুম তুই বিয়া করার মত স্ট্যাবল হৈছোস। যা মন দিয়া খেল। " রকিবুল দেখল এরা তো তারে প্যাচে ফেলাইছে। সেঞ্চু---রীইইইই...সেইটা কি মুখের কথা? সেও বাপকা বেটা...বাপরে উলটা প্যাচে ফেলাইতে...সে অবসরের ঘোষনা দিয়া ফেলছে। রকিবুলের এক অজ্ঞাত পরিচয় মামা এইসব জানাইছে। এমতাবস্থায় রকিবুলরে বিহা দেয়া ছাড়া আমার মাথায় আর কুন বুদ্ধি আস্তেছে না। কি কন, মুরুব্বি?