৮ জানু, ২০১২

বুয়েটের সমস্যার সহজ পাঠঃ ডোন্ট মেস উইথ আস


পেপার-পত্রিকা মারফত, ভূল-চূক কি শুঞ্ছেন জানি না, তাই কাহিনী খোলাসা করি। বুয়েটের অবস্থা এখন এতই কঠিন যে, প্রথম্বারের মতো ডিএস.ডাব্লিউ পদত্যাগে বাধ্য হৈছেন। তবে সাবেক কুয়েট-পলাতক ভিসি ও মসনদে আসীন প্র-ভিসি এখনো বহাল আছেন। উনাদের নিরাপত্তায় ৬ ট্রাক দাঙ্গা পুলিশ প্রেরন করা হৈছে বুয়েটে।

এর আগে, ছাত্ররা যেই তিনজন অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করতেছিল, তারা সবাই ক্যাম্নে ক্যাম্নে জানি ছাত্রলীগ করতো। তবে কাকতালীয় এই ঘটনা অস্বীকার করছে বুয়েট ছাত্রলীগের সাম্বাডি(সাধারন সম্পাদক)। এরমধ্যে মাছ্রাঙ্গা টিভি ক্যাম্নে ক্যাম্নে জানি জাইনা ফেলছে, এইটা ছিল ছাত্রলীগের দুইগ্রুপের মাইরপিট। তিন ছাত্র যদি ১জন নিরস্ত্রকে পিটায়, তাইলে কি সেইটা ২ গ্রুপ বলা যায়? আহত সাধারন ছাত্র কম্পুবিজ্ঞানের স্নাতক হইতে মাত্র ১টা পরীক্ষা দূরে। কিন্তু আফসোস তার হাত ভাইঙ্গা ফেলছে ছাত্রলীগের পোলাপানের হকিস্টিক। তার অপরাধ, সে জনৈক ছাত্রলীগ কর্মীদের র‍্যাগ কন্সার্টের ইনার সার্কেলে স্বসম্মানে প্রবেশ করতে দেয় নাই। বিশাল গুস্তাফি। ইনার সার্কেলের বাইরেও আরামে কন্সার্ট দেখা যায়। আমি জীবনে ৪/৫টা কন্সার্ট বাইরে দাড়ায়া দেখছি। ১টা দেখছি ভিতরে, যখন আমার ব্যাচের র‍্যাগ কন্সার্ট ছিল। এইটাই নিয়ম। তবে এই নিয়ম ছাত্রলীগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না, এইটা বেওকুফ ঈশান বুঝে নাই। বুঝে নাই বৈলাই, তারে হকিস্টিক, ব্যাট, রড দিয়া হাত-পায়ে পিটায়া শিক্ষা দেয়া হইছে। ২দিন পরে যে ছেলে বুয়েটের শিক্ষা শেষ হবে, তার এইটুকু শিক্ষা বাকি ছিল।

ডেইলী স্টারে ভিসি প্রফেসর নজরুল বলছে "politics had nothing to do with the incident."এইটাও একটা শিক্ষনীয় বিষয়। স্যার নিজে রাজনীতি কৈরা ভিসি হৈছেন, তাই উনি রাজনৈতিক প্রশ্ন পছন্দ করেন না। ২১ আগষ্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার সময় বুয়েটে পরীক্ষা চলতেছিল। ২২ আগষ্টে ০২ ব্যাচের পরীক্ষাও ছিল। আর পরীক্ষার আগের রাতে, ছাত্রলীগের  ৯জনের একটা মিছিল হয়। সেই মিছিলে পানি, জুতা মারছিল সাধারন ছাত্ররা; পরের দিন ৯জনরে শো-কজ নোটিশ দিছিল বুয়েট। ছাত্রলীগের সেই ক্ষুদ্রদলকে মিছিল ও পরদিন বুয়েটের গেটে তালা দিতে বলছিলেন নজরুল স্যার। আওয়ামী লীগ ২১ আগষ্ট সারা ঢাকায় কোন মিছিল করছে জানা নাই, কিন্তু নজ্রুল স্যারের নির্দেশে বুয়েটে মিছিল হইছে। এতটা নিচ বুয়েটের আর কোন শিক্ষক হৈতে পারে নাই। তাই আওয়ামী আমলে এতটা উপরে আর কেউ উঠতেও পারে নাই। উনি আবার নিজে ভিসি হৈয়া ক্ষান্ত হন নাই, প্র-ভিসি নামক একটা পোষ্ট ক্রিয়েট কইরা আওয়ামী লীগের আরেক জিগ্রী দোস্তরে বসাইছেন। সুন্দর।

প্রথম আলো জানাইলো, বুয়েটের সেই হকিস্টিক বাহিনীর ৩জনকে ৬ মাসের জন্য বরখাস্ত করা হইছে। খবরের ভিতরে গিয়া দেহি, সাময়িক বহিস্কার। আবার একি সাথে ৪জনের তদন্ত কমিটি করা হইছে। যদি ৩জন অভিযুক্ত সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত না হয়, তাইলে তাদের সাময়িক বহিস্কারাদেশ দেয়া হোইল কোন বিচারে? আর যদি সাময়িক বহিস্কার দেয়াই হয়, তাইলে বেহুদা তদন্ত কমিটির সার্কাসটা করার দরকার কি? দরকার, কারন তারা ভাবছিল, পুলাপান ভ্যাব্দা। সাময়িক বরখাস্ত শুইনা বাড়ি যাবে, লেপমুড়ি দিয়া ঘুমাবে। কেউ বাড়ি যায় নাই। সারারাত সবাই পৈরা ছিল "আজীবন বহিস্কারের দাবিতে"।

তিনজন ছাত্রলীগ কর্মীর নাম ধাম পরিচয় সবাই জানে। আহত ছাত্রের টেস্টমনি সারা দূনিয়ার মানুষ শুনতে পাইছে ফেইসবুক/ইউটুব ভিডিওর মাধ্যমে(http://www.youtube.com/watch?v=JRXNCv6vjw8)। কিন্তু তদন্ত কমিটি শুনতে পান নাই। তাদের বিস্তর গবেষনা চলতেছে।


বুয়েটে পরীক্ষায় নকল/দেখাদেখি কইরা ২ সেমিস্টার নির্বাসন কাটাইছে, শিক্ষককে তালেবান বলার কারনেও ২সেমিস্টার বহিস্কার খাইছে- এমন নজির আছে। কিন্তু একজন ছাত্রকে পিটায়া তক্তা বানানোর অপরাধে ৬ মাস সাময়িক(!) বহিস্কার? আর এই চুনোপুটিস্য চুনোপুটি ছাত্রলীগের তিনটা ছোকরাকে বাচাইতে ঘন্টার পর ঘন্টা মিটিং? চোখ বন্ধ কৈরা আজীবন বহিস্কার দিয়া দেন। এত ক্যারফা করতে গিয়া আপনাদের রাজনৈতিক ল্যাজ ও ল্যাজের গুচ্ছবাল সবাইকে দেখায়া দিচ্ছেন ক্যান? এখন ক্ষেমতায় আওয়ামী লীগ।ফাসীর আসামীরে ফিরাইয়া আন্তেছে, আর মামুলী বহিস্কারাদেশ তো **ও না! আজীবন বহিস্কারাদেশ নিয়া এরা আদালতে যাবে, ৪/৫ মাস পরে এই মেরুদন্ডহীন আদালত তাদের সাজা কমায়া ২ সেমিস্টার কোইরা দিবে। নাকি এই দুই সেমিস্টারের বিরহও আপনাদের সইতেছে না?

গভীর রাতেও কেউ নড়ে নাই
ঈশানের ভাঙ্গা হাড়

কার্টুনঃ মামুর
বুয়েট নিয়া আরো কিছু লেখাঃ ক্যান্টিনে শোরগোল!- বাই বুয়েটিয়ান ফর বুয়েটিয়ান অফ বুয়েটিয়ানhttp://www.somewhereinblog.net/blog/troublekid/29106730

কোন মন্তব্য নেই: